ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

৮০ শতাংশ আসনে জয়ের দাবি মিয়ানমারের সেনাসমর্থিত দলের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ৯, ২০১০
৮০ শতাংশ আসনে জয়ের দাবি মিয়ানমারের সেনাসমর্থিত দলের

ইয়াঙ্গুন: নির্বাচনে ৮০ শতাংশ আসনে জয় পেয়েছে বলে দাবি করেছে মিয়ানমারের সেনাসমর্থিত দল ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট (ইউএসডিপি)। ২০ বছরের মধ্যে প্রথম অনুষ্ঠিত এ নির্বাচনে দলটি মঙ্গলবার জয়ের এ দাবি করেছে।



দলটির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উচ্চপদস্থ এক কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা ৮০ শতাংশ আসনে জয় পেয়েছি। আমরা আনন্দিত। ’

দলটির জয়ের বিষয়টি এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করা হয়নি। কিন্তু ব্যাপক প্রচারণা, ব্যয় এবং বিরোধী দলগুলোর প্রতিকূল অবস্থা দলটিকে জয়ের বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী করেছে।

নির্বাচন স্বাধীন ও স্বচ্ছ না হওয়ায় এবং গণতন্ত্র বিরোধী দলগুলোর বিরুদ্ধে ভোটকেন্দ্রে ভীতি প্রদর্শন ও প্রতারণার অভিযোগে পশ্চিমা দেশগুলো এ নির্বাচনের নিন্দা জানিয়েছে। একইসঙ্গে তার প্রত্যাখ্যান করেছে।

এদিকে, নির্বাচন চলাকালে সোমবার সরকারি সেনাবাহিনী ও আদিবাসী বিদ্রোহীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এর ফলে দেশটির প্রায় ২০ হাজার মানুষ পাশ্ববর্তী দেশ থাইল্যান্ডে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।

সংঘর্ষের সময় কারেন রাজ্যের মায়াওয়াদি শহরে গুলিবর্ষণে কমপক্ষে তিন বেসামরিক নাগরিক নিহত হন।   মিয়ানমারের এক কর্মকর্তা এ তথ্য জানান। তবে সেনাবাহিনীর মধ্যে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।  

সাবেক প্রধানমন্ত্রী থেইন সেইন ও অন্যান্য সাবেক উচ্চপদস্থ সেনা কর্মকর্তাদের নিয়ে ইউএসডিপি দল গঠিত। মূলত সেনা পরিচয় আড়াল করতেই তারা রোববারের নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন।

এদিকে, নির্বাচনের দিনও অনেক অনিয়মের খবর পাওয়া যায়। ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ফোর্সের চেয়ারম্যান থান নায়েন বলেন, ‘অতিরিক্ত অনিয়মের কারণে আমাদের জন্য জয়ী হওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। ’

বার্তাসংস্থা এএফপিকে সোমবার তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের কাছে এর প্রমাণ আছে। কিছু প্রার্থী অভিযোগও করেছেন, কারণ ভোটের ক্ষেত্রে জালিয়াতি করা হয়েছে। ’

‘যতটা আশা করা হয়েছিলো, ফলাফল তার থেকেও খারাপ হবে। এটা শুধু আগেভাগে ভোট দেওয়ার কারণেই না। বরং অনেক ভোটকেন্দ্রে আমাদের কোনো প্রতিনিধিও ছিলো না। ’

সংসদের ২৫ শতাংশ আসন সেনাসদস্যদের জন্য সংগৃহীত। তাই ফলাফল যাই হোক না কেন সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য সেনাসমর্থিত প্রধান দল দুটির মাত্র ২৬ শতাংশ আসনে জয় পাওয়াই যথেষ্ট।  

এদিকে, মিয়ানমারের নির্বাচনের আন্তর্জাতিক নিন্দা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। ভারত সফররত ওবামা দেশটির সংসদে বক্তৃতা দানকালে এ বিষয়ে বলেন, ‘ভোট চুরি করা খুবই অপ্রত্যাশিত একটি কাজ। মিয়ানমার আবারও এ কাজ করেছে যার সাক্ষী সারা বিশ্ব। ’

নির্বাচনকে অসম্পূর্ণ, অস্বচ্ছ এবং অংশগ্রহণমূলক নয় বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন। তার মুখপাত্র এ তথ্য জানান।

তবে নির্বাচনে জনগণ স্বাধীনভাবে ভোট দিয়েছে বলে দাবি করেছে রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম। একইসঙ্গে ৫৭টি আসনে ‘বিজয়ী’ ঘোষণা করা হয়েছে। যার ৫৫টির মধ্যে মাত্র একজন প্রার্থী ছিলেন এবং এর দুই-তৃতীয়াংশই ইউএসডিপির।

নির্বাচনে প্রায় দুই কোটি ৯০ লাখ জনগণ ভোট দিবে বলে আশা করা হলেও নির্বাচনের দিন তাদের অনেকের মধ্যেই এর প্রক্রিয়া নিয়ে হতাশা ও জল্পনা-কল্পনা তৈরি হয়।

নির্বাচনের পর শনিবার গণতন্ত্রপন্থী নেতা অং সান সুচিকে মুক্তি দেওয়া নিয়ে সবার মধ্যে আগ্রহ দেখা দিয়েছে। শনিবার তার বর্তমান বন্দীদশার সময়সীমা শেষ হওয়ার দিন ধার্য করে জান্তা।  

বাংলাদেশ স্থানীয় সময়: ১৩৩২ ঘণ্টা, নভেম্বর ৯, ২০১০


বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।