ব্রাসেলস: সৌদি আরব তার দেশে অবস্থানরত লাখ লাখ নারী, বিদেশি শ্রমিক এবং শিয়া জনগোষ্ঠীর অধিকার খর্ব করছে অথবা রক্ষা করতে ব্যার্থ হচ্ছে। নিউইয়র্কে মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ সংস্থা (এইচআরডব্লিউ) সোমবার এ তথ্য জানায়।
এইচআরডব্লিউ ব্রাসেলসে প্রকাশিত হওয়া ২০১০ এর বার্ষিক এই প্রতিবেদনে জানায়, ‘সৌদি সরকার সুকৌশলে ৯০ লাখ সৌদি নারী ও শিশু, ৮০ লাখ বিদেশি শ্রমিক এবং আরও ১০ লাখ শিয়া নাগরিকের অধিকার রক্ষা করছে না অথবা করতে ব্যার্থ হচ্ছে। এছাড়াও এখানে প্রতিবছর হাজার হাজার লোককে অন্যায়ভাবে কারাবন্দী করা হয়। ’
এই প্রতিবেদনে যেসব নাগরিক স্বাধীনতা হারাচ্ছেন তাদের আলাদা তালিকা করা হয়। এই তালিকায় বিশেষভাবে রয়েছে নারীরা যাদের কাজ হচ্ছে বিয়ে করা, পড়া অথবা ভ্রমণ করা। তাদের এসব কাজও পুরুষ অভিভাবকের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। ’
সৌদি আরব ২০০৯ সালে জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদকে পুরুষ অভিভাবকত্ব প্রথা বিলোপ করার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তা বাস্তবায়ন না করারও সমালোচনা করা হয় এই প্রতিবেদনে।
এই সংস্থাটি আরও জানায়, ‘নারীদের স্বাধীনতা দেওয়ার বিষয়টি এখনও প্রতীকী আকারেই রয়ে গেছে। ’
এইচআরডব্লিও এর এই প্রতিবেদনে কিছু ঘটনার কথা উল্লেখ করা হয় যেখানে নারীদের স্বাধীনতা খর্বের বিষয়টি স্পষ্টভাবে ধরা পড়ে। একজন নারী চিকিৎসকের বাবা তার উপার্জন বাজেয়াপ্ত করলে এবং তার বিয়েতে সম্মতি না দিলে সে আদালতের শরণাপন্ন হয় । কিন্তু আদালত তার বাবার অভিভাবকত্ব বজায় রাখার রায় দেন। বর্তমানে এই নারী আরেকজনের আশ্রয়ে আছেন।
সউসান সালিম নামের অন্য একজন নারীকে পুরুষ অভিভাবকবিহীন থাকার অভিযোগে আদালত ৩০০টি বেত্রাঘাত এবং ১৮ মাসের কারাদ-ের নির্দেশ দেয়।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ‘সৌদি আরবে ৮ লাখ ৩০ হাজার বিদেশি শ্রমিক কাজ করে। বেশিরভাগ গৃহকর্মীকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। তাদেরকে শারীরিক এবং মানসিকভাবে নির্যাতন করা হয়। প্রতিবছর এশীয় দূতাবাসগুলোর কাছে দেওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে দেখা যায় গৃহকর্মীরা দৈনিক ১৫ থেকে ২০ ঘণ্টা কাজ করতে বাধ্য হন। এছাড়া সপ্তাহের প্রতিদিন কাজ করলেও তাদের পারিশ্রমিক দিতেও গড়িমসি করা হয়। ’ এছাড়া এখানে অবস্থান করা শিয়াদের প্রতিও বৈষম্যমূলক আচরণ করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০১১