ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

ওবামা কী পারবেন!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৬ ঘণ্টা, আগস্ট ৩০, ২০১৪
ওবামা কী পারবেন! ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: ইরাক ও সিরিয়াভিত্তিক দ্য ইসলামিক স্টেট অব ইরাক অ্যান্ড সিরিয়ার (আইএসআইএস/আইএস) জঙ্গি বাহিনীর ওপর বাড়তি সামরিক অভিযান চালানোর প্রস্তাবনা কংগ্রেসে পেশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।

কিন্তু প্রতিপক্ষ দলের কাছ থেকে সমর্থন পাওয়ার ওপর নির্ভর করছে, কংগ্রেসে কত দ্রুত এটি পাস হবে।

কংগ্রেসে রিপাবলিকান দলের সদস্যরা সাধারণত ওবামার নীতির বিষয়ে বিরোধিতা করেন। তবে এক্ষেত্রে কী হবে, তা আরো পরে জানা যাবে।

এদিকে, শুধু রিপাবলিকানরাই নয়, ওবামার নিজের দলের কয়েক ডেমোক্র্যাটও সামরিক অভিযান চালানোর ব্যাপারে দ্বিধাগ্রস্ত। কারণ, ইরাক ও আফগানিস্তানে দশকব্যাপী লড়াই করার পর পুরোপুরি সামরিক বিজয় অর্জন করতে পারেনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্র বাহিনী।

আইএসের বিরুদ্ধে বাড়তি সামরিক অভিযান কিংবা অর্থায়নের বিষয়টি রাজনৈতিকভাবে বর্তমানে একটি স্পর্শকাতর একটি বিষয়। কারণ, আগামী ৪ নভেম্বর কংগ্রেসনাল নির্বাচন। এখানে রিপাবলিকানদের বিরুদ্ধেই লড়তে হবে ডেমোক্র্যাটদের।

এদিকে, রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ওবামার বাড়তি সামরিক অভিযানের প্রস্তাবনা যদি কংগ্রেসে পাস হয়, তাহলে মার্কিনি ও অন্যান্য দেশের সমর্থন পেতে সহজ হবে।

থিঙ্ক ট্যাংক দ্য ব্রুকিংস-এর মাইকেল ও’হানলন বলেন, কংগ্রেসে তার প্রস্তাব পাস হলে ওবামা সুবিধাজনক অবস্থানে থাকবেন। সেটা তার দলের কারণে নয়। তিনি সুবিধা পাবেন রাজনৈতিক দলের একতাবদ্ধ হওয়ার কারণে।

এ বিষয়ে ফরেন রিলেশনস কমিটির রিপাবলিকান দলের প্রভাবশালী সদস্য ইউএস সিনেটর বব কর্কার টেনেসি সংবাদমাধ্যমকে জানান, সেপ্টেম্বরে প্রস্তাবনাটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বলবেন।

অপরদিকে, ডেমোক্র্যাটিক কংগ্রেসনাল এক সহযোগী বলেন, আসলে আমরা জানি না, সামরিক অভিযানের নামে কী করা হবে! আর এর সঙ্গে কংগ্রেস কীভাবে যুক্ত হবে!

তিনি বলেন, তবে নির্বাচনের বছরে রাজনীতি একটা বড় ভূমিকা রাখতে সক্ষম হতে পারে!
 
এদিকে, রয়টার্স-আইপিএসওএস সোমবার এক মতামত জরিপের ফলাফলে জানায়, মাত্র ১২ শতাংশ মার্কিনিসহ বন্ধু দেশের জনগণ ইরাকে হামলা চালানোর পক্ষে।

জুলাই মাসের প্রথম দিকে ইরাকে দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ শহর মসুল ও বড় তেল শোধনাগার দখল করে নেয় ইসলামী একটি জঙ্গি গোষ্ঠী। এরপর এই গোষ্ঠীর সদস্যরা ইরাক সীমান্তের পার্শ্ববর্তী সিরিয়ার একটি অংশ দখল করে নেয়। এরপর এই গোষ্ঠীর নাম রাখা হয়- দ্য ইসলামিক স্টেট অব ইরাক অ্যান্ড সিরিয়ার (আইএসআইএস) বাহিনী।

এরপর এই গোষ্ঠীর প্রধান হিসেবে আবু বকর আল বাগদাদীর নাম প্রকাশ্যে আসে।

এই আইএসআইএস/আইএস জঙ্গি বাহিনীর সদস্যরা তাদের দখলকৃত অঞ্চলে শিয়াদের মসজিদ বুলডোজার ও ডিনামাইট দিয়ে উড়িয়ে দেয়। এ ছাড়া খ্রিস্টান সম্প্রদায়সহ ক্ষুদ্র জাতি গোষ্ঠীর লোকদের অনেককেই জোর করে ধরে এনে ইসলাম ধর্মে দীক্ষা দেয়। এর আগে তারা তাদের হুঁশিয়ারি দিয়ে জানায়, হয় ইসলাম ধর্মে দীক্ষা নিতে হবে নইলে মৃত্যুর মুখোমুখি হতে হবে। সেই সঙ্গে কর দিতে হবে। এ ঘোষণার পর ইয়াজিদি ধর্মালম্বীর লোকসহ সংখ্যালঘুরা দেশ ছেড়ে পালাতে থাকেন।

অন্যদিকে, আইএসের সদস্যরা অন্য মতাবলম্বীদের ধরে এনে রাস্তায় কিংবা মরভূমিতে গুলি করে কিংবা ছুরি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করতে শুরু করে। এর মধ্যে শিশুরাও বাদ যায়নি।

এ সব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ইরাক সরকার আইএস বাহিনীর ওপর আকাশপথে হামলা চালাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে আবেদন জানায়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে সীমিত আকারে আইএস বাহিনীর ওপর আকাশপথে সামরিক জেট থেকে বোমা বর্ষণ করে।

আইএস জঙ্গি বাহিনীর অবস্থান দৃঢ় হওয়ার কারণে তাদের হটিয়ে দিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা কংগ্রেসে বাড়তি অভিযান পরিচালনার প্রস্তাব পেশ করেছেন। এর মধ্যে বাজেট বরাদ্দের বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, মার্কিন অর্থনীতির ওপর বাড়তি চাপ পড়বে। সেটি সামলানো কষ্টসাধ্য ব্যাপার। তবে সব কিছু নির্ভর করছে, ওবামার প্রস্তাবনা পাস হয় কিনা অথবা পাস হলে সেটি কীভাবে হবে, তার ওপর।   
  
বাংলাদেশ সময়: ১৯২২ ঘণ্টা, আগস্ট ৩০, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।