ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

ইন্টারনেটের স্বাধীনতা নিয়ে উদ্বেগ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১১১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০১৪
ইন্টারনেটের স্বাধীনতা নিয়ে উদ্বেগ বার্নাস লি

ঢাকা: ইন্টারনেটের স্বাধীনতা ঝুঁকিতে রয়েছে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব’র (ডব্লিউডব্লিউডব্লিউ) ব্রিটিশ উদ্ভাবক টিম বার্নাস লি। ওয়েব নিয়ন্ত্রণে সরকার ও সংস্থাগুলোর অনেক বেশি তৎপরতা ইন্টারনেটকে এ ঝুঁকিতে ফেলে দিয়েছে বলে মনে করছেন তিনি।



লন্ডনে ইন্টারনেটের ভবিষ্যৎ বিষয়ক ‘ওয়েব উই ওয়ান্ট’ শীর্ষক উৎসবে বার্নাস লি বলেন, কোনো কোম্পানি যদি যে কোনো সাইটে প্রবেশ করতে পারে, আপনার ইন্টারনেটে বিচরণ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, তবে তারা আপনার পুরো জীবনের ওপরই নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে।

ইন্টারনেটের স্বাধীনতা ও ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা নিশ্চিতের লক্ষ্যে একটি বিল পাসেরও দাবি জানান ২৫ বছর আগে ওয়েব উদ্ভাবন করা কম্পিউটার বিজ্ঞানী বার্নাস লি।

তিনি আরও বলেন, কোনো সরকার যদি আপনাকে কোনো সাইটে প্রবেশে বাধা দিতে পারে-যেমন কোনো বিরোধী রাজনৈতিক দলের ওয়েবসাইটে আপনাকে প্রবেশ করতে দেওয়া হলো না- তবে তারা আপনাকে এর মাধ্যমে বাস্তবতা থেকে অন্ধকারে রাখবে এবং এ সুযোগ নিয়ে আপনারই সমর্থন নিয়ে ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ীভাবে আ‍ঁকড়ে রাখবে।

হঠাৎ করে সরকার ও বড় বড় কোম্পানিগুলো‌ই ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রণে অনেক বেশি আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেছে বলেও অভিযোগ করেন ওয়েবের জনক।

৫৯ বছর বয়সী বার্নাস লি বর্তমানে ইন্টারনেটের উন্নয়নে গাইডলাইন ডেভেলপ করা ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব কনসোর্টিয়াম নামে একটি প্রতিষ্ঠানের পরিচালক।

বার্নাস লি ত্রয়োদশ শতকের আলোচিত মৌলিক মানবাধিকার ও স্বাধীনতার নিশ্চয়তা প্রদানে স্বাক্ষরিত ‘ম্যাগনা কার্টার’ ইন্টারনেট ভার্সনও দাবি করেন।

গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা কর্মকর্তা এডওয়ার্ড স্নোডেন তার দেশের জনগণের অনলাইন কার্যক্রমের ওপর রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ ও এনএসএ নজরদারি ও গোয়েন্দাবৃত্তি চালিয়ে যাচ্ছে বলে তথ্য ফাঁস করেন। স্নোডেন কেবল যুক্তরাষ্ট্রের কথা বললেও ক্রমে আরও কয়েকটি দেশ তার দেশের জনগণের অনলাইন কার্যক্রমে নজরদারি চালাচ্ছে বলেও প্রতিবেদন প্রকাশ হতে থাকে। এ ধরনের খবরের প্রেক্ষিতে ইন্টারনেটের ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ও স্বাধীনতার বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ বাড়তে থাকে।

এছাড়া, সম্প্রতি ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষ থেকে ‘রাইট টু বি ফরগটেন’ শীর্ষক এক আইন প্রণয়ন করে ‘কোনো ব্যক্তি চাইলে তাকে গুগলের মতো সার্চ ইঞ্জিনকে নিজের তথ্য মুছে ফেলতে বলতে পারার’ অধিকার দেওয়ায় তথ্যের সেন্সরশিপের প্রসঙ্গ উঠে আসায়ও উদ্বেগ আরও বেড়ে যায়।

বার্নাস লি বলেন, এ ধরনের গোয়েন্দাবৃত্তির প্রেক্ষিতে ইন্টারনেটের ম্যাগনা কার্টা পাসের কথা বলছি... এমন ওয়েব চাই যেখানে আমি নজরদারিতে থাকবো না, যেখানে কোনো সেন্সরশিপ নেই।

তবে, ইন্টারনেট শিশু পর্নোগ্রাফি ও চুরি-ডাকাতির পদ্ধতি শিক্ষাসহ বিভিন্ন অপরাধ কার্যক্রমের মাধ্যম হয়ে ওঠায় দুঃখ প্রকাশ করেন ওয়েবের উদ্ভাবক এই কম্পিউটার বিজ্ঞানী।

বাংলাদেশ সময়: ১১১১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।