ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

আলো বাড়ছে থামেলে

সাজেদা সুইটি, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪২৬ ঘণ্টা, মে ৮, ২০১৫
আলো বাড়ছে থামেলে ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

থামেল (কাঠমান্ডু) থেকে: ভয়াবহ ভূমিকম্প তাদের রাস্তায় এনেছে, জীবিকার তাগিদ শোক ভুলতে বাধ্য করেছে। ভূমিকম্পের ধাক্কা সামলে জাগতে শুরু করেছে কাঠমান্ডুর পর্যটন স্পট থামেল।



পর্যটকের আশায় সামগ্রীর ধুলা ঝেঁড়ে-মুছে অপেক্ষায় বসে দোকানিরা। হোটেলগুলোতে ফিরছেন স্টাফরা, রাস্তায় ট্যাক্সি বেড়েছে, বেড়েছে আলোও।
 
বৃহস্পতিবার (০৭ মে) শোকের ১৩তম দিন পার করছে নেপাল। শোক কাটিয়ে কাঠমান্ডুর থামেল যেন পুরনো চেহারায় ফিরতে চাইছে প্রাণপণে।
 
পর্যটকদের প্রিয় জায়গা থামেল ২৫ এপ্রিলের ভূমিকম্পে ভূতুড়ে হয়ে পড়েছিল। ভবনগুলোর কোনো না কোনো অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে এলাকাটি ‘অনিরাপদ এলাকা’ হিসেবে গণ্য।
 
ভূমিকম্প থেকে বাঁচতে অপেক্ষাকৃত সমতল তরাই এলাকায় চলে গেছেন থামেলের অনেকে। বেশ সমতল বলেই সেখানে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন থামেলবাসী, অপেক্ষা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার।
 
কেউ কেউ সেখানে থেকেই থামেলে এসে কাজ করে যাচ্ছেন। যাদের কর্মক্ষেত্রের ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ তারা অবশ্য অপেক্ষায় রয়েছেন ভবন ঠিকঠাক হওয়ার জন্য।
 
থামেল, পাকনাজল, ছেত্রপাঠী মিলিয়ে প্রায় দুই হাজার হোটেল ও লজ রয়েছে। এগুলোর সবই বন্ধ ছিল এ ক’দিন। এখন ধীরে ধীরে কয়েকটি খুলছে।
 
ওষুধের দোকান, শো-পিস ও অ্যান্টিক সামগ্রী, পোশাক, ড্রিংকসের দোকানসহ বেশ কিছু দোকানে টুকটাক কেনাকাটাও করতে দেখা গেছে ক্রেতাদের।
 
হোটেল মালিক, দোকান মালিক, ট্যাক্সিচালকরা দ্রুতই তাদের আয়ের পথ পোক্ত করতে চাইছেন।
 
ভূমিকম্পের পর কয়েকটি দিন কাঠমান্ডুতে ট্যাক্সি ভাড়া ছিল গলা কাটা। যে দূরত্বে দেড়শ’ বা দুশ’ রুপিতে যাওয়ার কথা, সেখানেই চালকরা হাকিয়েছেন হাজার রুপি ভাড়া।
 
কারণ হিসেবে বলতেন, গাড়ির ফুয়েল পাওয়া যাচ্ছে না।
 
এখন চিত্র বদলাতে শুরু করেছে। ট্যাক্সি পাওয়া যাচ্ছে, ভাড়াও আগের মতো করে নিতে হচ্ছে চালকদের।
 
থামেল, সিটি সেন্টার, বিশাল বাজার, নিউরোড, কাঠমান্ডু মহল, আরবি কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন শপিং জোনগুলোতে আগের ভিড় পেতে যদিও অনেক অপেক্ষা, তবু বর্তমান চিত্রও আশা জাগানিয়া।
 
রাস্তার পাশের ছোট দোকানেও সমাগম হচ্ছে ছোটখাট। চলাফেরা যেমন বেড়েছে, পথচারীদের হাসি-উচ্ছ্বাসও কানে আসছে।
 
ত্রাহিতি, কুয়াবাহাল, ছেত্রপাঠীর বেশ কয়েকটি দোকান খোলা পাওয়া গেছে। যদিও ক্রেতা নেই, তবু দোকান খোলাই থাকবে বলে জানান তারা।
 
ছেত্রপাঠীর গোল চত্বরটিতে একদল তরুণ-তরুণীকে দেখা যায় ভূমিকম্পে নিহতদের স্মরণে মোমবাতি জ্বালাতে।
 
বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা এখানে থাকছেন না। সবাই নিরাপদ আশ্রয়ের আশায় অন্যদিকে চলে যাচ্ছেন।
 
কোনো কোনো বাড়ি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় সেখানে থাকছেন না তারা। আবার কারও কারও অফিস ঝুঁকিতে।
 
যেহেতু প্রতিদিনই আফটার শক হচ্ছে কয়েকবার, তারা থামেলে থাকার সাহস পাচ্ছেন না বলে জানান।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৪২৫ ঘণ্টা, মে ০৮, ২০১৫
এসকেএস/এসআই

** নেপাল-চিত্রে ঢাকার অশনিসংকেত
** নিরলস চেষ্টা হাসপাতালে
** ঘর বানাই দৌ, গোরি খানে দৌ
** জীবন এখানে এমন!
** বিধ্বস্ত নেপালে বাংলাদেশি সংবাদকর্মীরা
** শোকের ১৩ দিন, তবু জীবনের জয়গান
** নিস্তব্ধ পশুপতি, ভিড় কেবল চিতাঘাটে
** আড়ালেই ঝুরঝুরে নিম্বু-ভূতুড়ে ধর্মস্থালী
** দরবার স্কয়ার এখন তাবুর স্কয়ার
** বিমানবন্দর থেকে বেরুতেই নাকে লাশের গন্ধ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।