ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

১৪ বছরের বালকের ওপর আইএস নির্যাতনের ভিডিও প্রকাশ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৯ ঘণ্টা, জুন ১, ২০১৫
১৪ বছরের বালকের ওপর আইএস নির্যাতনের ভিডিও প্রকাশ

ঢাকা: ইরাক ও সিরিয়াভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) হাতে ১৪ বছরের এক সিরীয় বালকের নির্যাতিত হওয়ার ভিডিও প্রকাশিত হয়েছে। আইএসত্যাগী এক ব্যক্তি সংগঠনটির সদস্য থাকাকালে ভিডিওটি ধারণ করে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম।



নারীদের পাশাপাশি শিশুদেরও সদস্য হিসাবে নিয়ে থাকে আইএস। তাদেরকে যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহারের জন্য প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়। তবে কথা অনুযায়ী কাজ না করলে কিংবা দলত্যাগ করতে চাইলে নিষ্ঠুরভাবে সাজা দেওয়া হয় অবাধ্যদের। এমনকি হত্যাও করা হয়। আইএস ও পৃথিবীব্যাপী অন্যান্য সশস্ত্র জঙ্গি সংগঠনগুলো শিশুহত্যা করছে বলে বেশ আগে থেকেই অভিযোগ করে আসছে জাতিসংঘ।

প্রকাশিত ভিডিওটিতে দেখা যায়, আহমেদ নামের ওই সিরীয় বালককে দুই হাত বেঁধে সিলিংয়ের সঙ্গে ঝুলিয়ে নিষ্ঠুরভাবে বেত্রাঘাত করা হচ্ছে। তার চোখ বাঁধা। মুখোশধারী কালো পোশাক পরা দুই জঙ্গি তার সামনে দাঁড়িয়ে। একজনের কাছে একটি চাকু ও পিস্তল, অন্যজনের হাতে একে-৪৭ ধরা।

পরে এক সময় সাক্ষাৎকারে আহমেদ বলে, আমার বাবামায়ের কথা মনে পড়ছিল সেসময়। আমার মনে হচ্ছিল, আমি মারা যাচ্ছি। তারা আমাকে মারতে শুরু করল। আমাকে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট করেছে। সহ্য করতে না পেরে আমি সব বলে দিয়েছি তাদের।

জানা গেছে, আইএস নিয়ন্ত্রিত সিরিয়ার রাক্কা এলাকায় আহমেদ রুটি বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতো। একদিন তার পরিচিত দুই লোক এসে তাকে কাছেই আইএস সদস্যদের এক সভাস্থলে আড়িপাতা যন্ত্র স্থাপণ করতে বলে। তারা আসলে আড়িপাতা যন্ত্র নয়, বোমা স্থাপণ করায় ওই দুই ব্যক্তি। কিন্তু আহমেদ তা বুঝতে পারেনি।

এ কাজ করতে গিয়ে আইএসের হাতে ধরা পড়ে আহমেদ। তার বয়স তাদের কাছে মুখ্য ছিল না। টানা দু’দিন তাকে নির্যাতন করা হয়।

আহমেদ তার সাক্ষাৎকারে বলে, যথন তারা আমাকে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট করছিল, আমি চিৎকার করে আমার মাকে ডাকছিলাম। কিন্তু যতো চিৎকার করছিলাম, ততো ভোল্টেজ বাড়ানো হচ্ছিল।

আহমেদ জানায়, আইএসের আদালতে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। কিন্তু দণ্ড কার্যকরের আগেই সে পালাতে সমর্থ্য হয়।

আহমেদ বলে, তাদের কারাগারে থাকাকালে আমি ঘুমাতে পারতাম না। পালানোর পর আমাকে যখন তুরস্ক আনা হল, প্রথম কিছুদিন আমি ঘুমাতে পারিনি। চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল, তবু ঘুমালেই দুঃস্বপ্ন দেখতাম।

আহমেদকে নির্যাতনের ভিডিওটি যে ব্যক্তি নিজের মোবাইল ফোনে ধারণ করে, সংবাদমাধ্যমকে সে জানায়, ভিডিওটি আইএসের সম্মতিতে ধারণ করা হয়। পরবর্তীতে অন্যান্য ভিডিওর মতো এটিও প্রচারের পরিকল্পনা ছিল সংগঠনটির। কিন্তু তার আগেই সে দলত্যাগ করে।

বাংলাদেশ সময়: ২১০০ ঘণ্টা, জুন ০১, ২০১৫
আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।