ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

বিপদে পড়ে ধর্মবদল!

বাংলানিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৩৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১১, ২০১৫
বিপদে পড়ে ধর্মবদল! ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: মোহাম্মদ আলি জুনুবি। প্রাণ হাতে নিয়ে সমুদ্রে ভাসতে ভাসতে জার্মানিতে গিয়ে পৌঁছানো এক ইরানি শরণার্থী।

গির্জার যাজকের সামনে নত মস্তকে বসে আছেন জুনুবি। আর যাজক মশাই জুনুবির মাথায় ছেটাচ্ছেন পবিত্রজল বা হোলি ওয়াটার।

পবিত্রজল ছেটাতে ছেটাতে প্যাস্টর গটফ্রিড মার্টেন্স জুনুবিকে জিগ্যেস করছেন: ‘‘ তুমি কি শয়তানের আছর থেকে নিজেকে বের করে আনবে আর পাপকর্ম থেকে নিজেকে দূরে রাখবে? তুমি কি ধর্ম ত্যাগ করে খ্রিস্টধর্মের ছায়াতলে আসবে? ’’।
---‘নিশ্চয়, নিশ্চয়’ বলে আকুল হয়ে নিজেকে যাজকের হাতে সঁপে দিয়েছেন এই মুসলিম শরণার্থী।

যাজক তখন আশির্বাদের জন্য দুহাত প্রসারিত করে ‘‘পবিত্র পিতা, পবিত্র পুত্র ও পবিত্র প্রেতাত্মার নামে’’ মন্ত্র উচ্চারণ করতে করতে ব্যাপৃত হলেন জুনুবিকে ব্যাপটাইজ করার কাজে।

ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষ হবার মধ্য দিয়ে মুসলিম ইরানি যুবক ‘মোহাম্মদ জুনুবি’ থেকে হয়ে গেলেন খ্রিস্টান---হয়ে গেলেন মার্টিন জুনুবি।

উপরে বর্ণিত এই দৃশ্যটা জার্মানির বার্লিন শহরের একটি গির্জার। সেখানে অভিবাসী বা শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নেওয়া শত শত মুসলিম নারী-পুরুষ খ্রিস্টান হওয়ার প্রতিযোগিতায় নেমেছেন। তাদের সামনে এখন একটাই লক্ষ্য--- যে করেই হোক জার্মানিতে থাকার সুযোগ নিতে হবে। যতো মূল্য দিয়েই হোক।

ইউরোপীয় দেশগুলোর নেতাদের ক্রমবর্ধমান মুসলিমবিরোধী মনোভাবের কারণেই অসহায় শরণার্থীরা এখন দলে দলে এই পথ বেছে নিচ্ছেন; খ্রিস্টান হয়েও যদি আশ্রয়টুকু জোটে! খ্রিস্টান সমাজের মূলস্রোতের কাছে কিছুটা হলেও যদি গ্রহণযোগ্যতা পাওয়া যায়!

জুনুবি পেশায় একজন কাঠমিস্ত্রী। ইরানের শিরাজ শহর থেকে পাঁচ মাস আগে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে তিনি জার্মানিতে এসে আশ্রয় নেন। জুনুবির মতো আরো অনেক ইরানি ও আফগান নাগরিক দলে দলে জার্মানিতে এসে ভিড় জমিয়েছেন। এরই মধ্যে শতশত ইরানি ও আফগান শরণার্থী বার্লিনের ইভানজেলিক্যাল ট্রিনিটি চার্চে গিয়ে ধর্ম বদল করে খ্রিস্টান হয়েছেন।
 
এই ক’দিন আগেও এরা ছিলেন ইসলাম ধর্মপ্রাণ। কিন্তু বিপদে পড়ে তারা ধর্ম বদল করছেন। অনেকে বলছেন খ্রিস্ট ধর্মে আস্থা থেকে নয় বরং বাঁচার তাগিদে আর আশ্রয় পাবার লোভেই আপাতত এই সিদ্ধান্ত তাদের। যদিও মুখে তারা বলছেন, খ্রিস্ট ধর্মে বিশ্বাস এনেই তারা খ্রিস্টান হয়েছেন।

কিন্তু অন্যরা বলছেন, জার্মানিতে আশ্রয় পেতে সুবিধা হবে বলেই এই পথ ধরেছেন তারা। তাছাড়া তারা বলতে পারবেন , আমরা ধর্ম ত্যাগ করেছি এখন যদি আমাদের জোর করে দেশে ফেরত পাঠানো হয় তবে সেখানে আমাদের কঠিন শাস্তি ও নিপীড়নের শিকার হতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০০৩৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১১, ২০১৫
জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।