ঢাকা: পাঠকের ‘অপমান ও কটূক্তিমূলক’ বক্তব্যের জন্য দায়ী থাকবে না অনলাইন ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম- এমন রুল জারি করেছে দ্য ইউরোপিয়ান কোর্ট অব হিউম্যান রাইটস (ইসিএইচআর)।
হাঙ্গেরির একটি নিউজ পোর্টালে পাঠকের বার্তা প্রকাশের জন্য অভিযুক্ত করায় মঙ্গলবার (০২ ফেব্রুয়ারি) এ সংক্রান্ত একটি রুল জারি করা হয়।
ইনডেক্স ডট এইচইউ নিউজ নামে ওই ওয়েবসাইটে পাঠকরা একটি রিয়েল এস্টেট কোম্পানির বিরুদ্ধে ধারাবাহিকভাবে ঝাঁঝালো মন্তব্য করেছেন বলে অভিযোগ তোলে ওই কোম্পানিটি।
একজন পাঠক মন্তব্য করেন, ‘এ ধরনের লোকদের চলে যাওয়া উচিৎ এবং তাদের উপার্জিত অর্থ তাদের মায়েদের কবর সাজাতে খরচ করা উচিৎ। ’
এ মন্তব্যের পরে কোম্পানিটি নিউজ পোর্টাল ও অ্যাসোসিয়েশন ফর হাঙ্গেরিয়ান ইন্টারনেট ফার্মের বিরুদ্ধে স্থানীয় আদালতে অভিযোগ আনে।
ইনডেক্স ডট এইচইউ বলে, দ্রুততম সময়ে মন্তব্যগুলো সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু পাঠকের মন্তব্যের জন্য ইনডেক্স ডট এইচইউ দায়ী নয়।
যুক্তি তর্কে ইনডেক্স ডট এইচইউ-এর আইনজীবী বলেন, ইন্টারনেটের যুগে এ ধরনের উক্তির জন্য ওয়েবসাইটকে দায়ী করা হলে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং গণতান্ত্রিক উন্মুক্ততায় ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে।
এতে সহমত পোষণ করেছে ইসিএইচআরও। এ সময় বিচারক বলেন, স্বাধীন মতপ্রকাশের অধিকার এবং অপব্যবহার রোধের মধ্যে ভারসাম্য রাখতে পারেনি হাঙ্গেরিয়ান আদালত।
‘যদিও আক্রমণাত্মক ও অশ্লীল বক্তব্য পরিষ্কারভাবে আইন বিরোধী নয়, কেননা এগুলোর মধ্যে কোনো সন্ত্রাসমূলক কথা থাকে না, রায়ে বলেন বিচারক।
গণমাধ্যমের প্রতি হাঙ্গেরির দৃষ্টিভঙ্গী নিয়ে মানবাধিকার সংস্থাগুলোর নিয়মিত সমালোচনা চলে। এছাড়া দেশটির প্রধানমন্ত্রী ভিকটর অরবানের বিরুদ্ধেও গণমাধ্যমকে দমিয়ে রাখার অভিযোগ রয়েছে।
২০১১ সালে অরবান গণমাধ্যম সংক্রান্ত নতুন আইন ও শক্তিশালী কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ সংস্থা গঠন করেন। আর ২০১৪ সালে তিনি নতুন গণমাধ্যমের (অনলাইন ভিত্তিক গণমাধ্যম) ওপর করারোপ করেন।
এ বিষয়ে সমালোচকরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী ভিকটর অরবানের পদক্ষেপ বিরোধী সংবাদ প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাগে আনা ও বিদেশি গণমাধ্যমকে দূরে ঠেলে দেওয়ার একটা পন্থা, আর কিছু নয়।
বাংলাদেশ সময়: ২২২০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৩, ২০১৬
এটি/