ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

অভাবেরও সীমা থাকে!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০১৬
অভাবেরও সীমা থাকে!

ঢাকা: সাদিয়া আহমেদ বাঘিলি। তার বয়স ১৮ বছর।

মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইয়েমেনের আল-তাওরা হাসপাতালের বিছানায় বসে আছেন তিনি। জীর্ণ-শীর্ণ দেহ, পাট খড়ির মতো সরু হাত-পা, মুখ থেকে বেরিয়ে গেছে দাঁত, ভাঙা চোয়ালে চোখ দু’টোর ভাষা দুর্বোধ্য। গোটা শরীর যেন জীবন্ত কঙ্কাল। চলতি সপ্তাহে সাদিয়ার এমন দুর্বিষহ ছবি সামাজিক যোগ‍াযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশ পায়।

যুদ্ধবিধ্বস্ত ইয়েমেনে অভাব, খ‍াদ্য ও পুষ্টি সংকটে সাদিয়ার এই সীমাহীন করুণ পরিণতি হয়েছে। তাকে দেখামাত্র যে কারো অন্তর-আত্মা কেঁপে উঠবে। দেশটির হোদেইদা শহরের হাসপাতালটিতে তিনি চিকিৎসাধীন। অন্যের সাহয্যের ওপর এখন তাকে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখতে হয়।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সিএনএন’র সচিত্র প্রতিবেদনে এমন চিত্র ফুটে উঠেছে। সাদিয়ার মতো অন্য অনেক ইয়েমেনির অবস্থা শোচনীয়। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে এই সংকট আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করছে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি সংস্থা।

খাদ্য ঘাটতি ও পুষ্টি সংকটে তিন বছর বয়সী এক শিশুকেও হাসপাতালে আনা হয়েছে। নানা শারীরিক সমস্যায় আক্রান্ত শিশুটি নির্বাক। সে চিত্রও ফুটে উঠেছে প্রতিবেদনটিতে। এমন ভয়‍াবহ মানবিক বিপর্যয়ে তাই মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে বিশ্ববাসীর মনে।

সংস্থাটি জানায়, গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে তারা ক্ষুধাপীড়িত ও অভাবগ্রস্ত ৩০ লক্ষাধিক মানুষকে প্রতিমাসে খাদ্য সরবরাহ করে আসছে। সংকট কাটেনি বরং বেড়েছে। দেশটিতে অভাবগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬০ লাখে। কিন্তু তাদের খাদ্য সরবরাহের সক্ষমতা শেষ হয়ে আসছে।

এমন পরিস্থিতিতে তাই সংস্থাটির পরিচালক টোরবেন ডিউ এসব ক্ষুধার্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে বিশ্ববাসীকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।

২০১৫ সালের শুরুর দিক থেকে ইয়েমেনের উত্তরাঞ্চলে হুথি বিদ্রোহী গোষ্ঠী, সংখ্যালঘু শিয়া সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে দেশটির সরকারের সমর্থন নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অভিযান পরিচালনা করে। যাতে প্রায় হতাহত ও নিহতের ঘটনা ঘটে। এমন পরিস্থিতিতে দেশটির অর্থনৈতিক অবস্থা নাজুক হয়ে অভাব, খাদ্য সংকট ও নানা সমস্যার মুখোমুখি হয়।

এছাড়া, হুথি বিদ্রোহী, বিভিন্ন জঙ্গি ও সন্ত্রাস গোষ্ঠী দমনের নামে গত মার্চ মাস থেকে সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন বেশকিছু আরব দেশের সমন্বয়ে গঠিত সেনা জোট ইয়েমেনে সক্রিয় রয়েছে। ফলে দেশটিতে প্রায় অভিযান, হামলা ও সহিংসতায় প্রাণহানিসহ বিভিন্ন স্থাপনা বিধ্বস্তের ঘটনা ঘটে। ইয়েমেনে সাদিয়‍াদের এমন বিপর্যয়ের পেছনে এসব ঘটনাকেই সংশ্লিষ্টরা দায়ী করছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১০২৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০১৬/ আপডেট: ১১১৫ ঘণ্টা
টিআই

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।