গত ২৪ সেপ্টেম্বরের নির্বাচনে মেরকেলের সিডিইউ ও সমমনা ক্রিশ্চিয়ান সোশ্যাল ইউনিয়ন (সিএসইউ) জোট অন্যদের তুলনায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলেও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর তারা সবচেয়ে কম ভোট পায়। এরমধ্যে আবার তাদের বিগত সরকারের অংশীদার এসডিপি নির্বাচনের পর বিরোধী দলের আসনে বসার ঘোষণা দেওয়ায় মেরকেলের জোটের সরকার গঠন নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়।
প্রায় সাড়ে পাঁচ মাসের এই অন্শ্চিয়তার সময়ে সিডিইউ’র কিছুটা সমমনা ফ্রি ডেমোক্রেটিক পার্টি (এফডিপি) ও পরিবেশবাদী গ্রিন পার্টিকে নিয়েও সরকার গঠনের আলোচনা সংবাদমাধ্যমে উঠে আসে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসপিডিই এগিয়ে আসায় তাদের নিয়ে সরকার গঠন করতে চলেছেন ইউরোপের সবচেয়ে ‘দৃঢ় অর্থনীতি’র দেশ জার্মানির ‘শীতল মস্তিষ্কের নেত্রী’ মেরকেল।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা ও শরণার্থী সংকট মোকাবেলাসহ বিভিন্ন ইস্যুতে সিডিইউ’র সঙ্গে এসপিডির শীর্ষ নেতৃত্বের ভিন্নমত ছিল না। কিন্তু এসপিডির কট্টরপন্থি যুব শাখা এক্ষেত্রে ভিন্নমত দেখানোয় এসপিডি বিরোধী দলের আসনে বসার কথা জানায়।
তবে ইসলাম-মুসলিম, শরণার্থী ও অভিবাসীবিরোধী দল অল্টারনেটিভ ফর ডয়েচেল্যান্ড বা জার্মানির জন্য বিকল্প (এএফডি) নির্বাচনে মোট ৫৯৮ সংসদীয় (বুন্দেসতাগ) আসনের মধ্যে ৯৪ আসনে জিতে যাওয়ায় ভয় ধরে যায় সিডিইউর পাশাপাশি এসপিডিরও। উদারনীতির এ দুই দলের নেতৃত্ব বুন্দেসতাগে এএফডির ব্যাপক বিরোধিতার মুখে পড়ার আশঙ্কায় ভাবনায় পড়ে যায়। সেই চিন্তাভাবনা থেকেই সিদ্ধান্ত বদলের দিকে ঝুঁকে পড়ে এসপিডি।
শেষতক জোট সরকারে যোগ দেওয়ার ব্যাপারে ভোট আহ্বান করে এসপিডির নেতৃত্ব। সংবাদমাধ্যম বলছে, রোববার (৪ মার্চ) বার্লিনে দলের সদরদফতরে অনুষ্ঠিত ভোটাভুটিতে এসপিডির ৬৬ শতাংশ প্রতিনিধিই মেরকেলের সরকারে যোগদানের সিদ্ধান্ত দিয়েছেন শীর্ষ নেতৃত্বকে।
এ বিষয়ে এসপিডির অন্তর্বর্তী নেতা ওলাফ শোলজ বলেন, এখন আমাদের কাছে সুস্পষ্ট সিদ্ধান্ত চলে এলো। এসপিডি এই সরকারে যোগ দিচ্ছে।
ফলাফল জানার পর মেরকেল তার দল সিডিইউ’র টুইটার অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক বার্তায় বলেন, ‘দেশের স্বার্থে আমরা একসঙ্গে কাজ করে যেতে চাই। ’
সিডিইউ’র মুখপাত্র ভোকার বৌফিয়ার এই ফলাফলের বিষয়ে বলেন, এটা আমাদের দেশের জনগণ ও জার্মানির ইতিবাচক ভবিষ্যতের জন্য ভালো একটি দিন হয়ে স্মরণ হবে।
বিশ্লেষকদের মতে, কট্টর ডানপন্থি নব্য নাৎসি সমর্থকদের দল এএফডি নির্বাচনে বিস্ময়কর ফলাফল লাভের পর হুংকার দেয়, ‘বিদেশিদের আগ্রাসনের’ বিরুদ্ধে লড়াই করবে তারা। এই বিদেশি আগ্রাসন বলতে তারা অভিবাসী-শরণার্থীকেই বোঝায়। জার্মান রাজনীতিকে বিভক্তিকরণের এই হুমকিই নিকটে এনে দেয় সিডিইউ ও এসডিপিকে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৪ ঘণ্টা, মার্চ ০৪, ২০১৮
এইচএ/
** অভিবাসীবিরোধী হুংকার জার্মানির কট্টর-ডান এএফডির
** চতুর্থবারের মতো চ্যান্সেলর মেরকেল