ভারতীয় পত্রপত্রিকাগুলো ফারুক টাকলাকে গ্রেফতার ও ফেরত ফেরত পাঠানোর খবরকে ফলাও করে প্রচার করছে। এনডিটিভি এই গ্রেফতকারকে ‘বিগ ক্যাচ ফর ইন্ডিয়া’ বলে অভিহিত করেছে।
‘ফারুক টাকলা’ বলে পরিচিত হলেও কুখ্যাত এই সন্ত্রাসীর আসল নাম ইয়াসিন মানসুর মোহাম্মদ ফারুক। তার বিরুদ্ধে গুরুতর অপরাধের ষড়যন্ত্র, হত্যা, হত্যার চেষ্টা, বিপজ্জনক অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা, মুম্বাইতে সিরিজ বোমা হামলা চালিয়ে প্রায় তিনশ মানুষকে হত্যা করাসহ নানা গুরুতর অপরাধের অভিযোগ রয়েছে।
এরই মধ্যে তাকে মুম্বাইতে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে দিয়েছে সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (সিবিআই)। তার এই গ্রেফতার ও ভারতে ফেরত পাঠানোর ঘটনাকে ‘‘ভারত সরকারের এক বড় ধরনের কূটনৈতিক বিজয়’’ হিসেবে দেখা হচ্ছে। দাউদ ইব্রাহিম,. মুরাদ টাকলা, ‘ছোট্টা শাকিল’ ও ‘বড়া শাকিলের’ মতো খুনী ও অপরাধ জগতের কুখ্যাত প্রতিনিধিরা স্রেফ টাকার জোরে দুবাই ও পাকিস্তানে সহজেই আশ্রয় পেয়ে যায়।
কিন্তু এবার ভারত সরকারের জোর কূটনৈতিক চেষ্টার কারণে দুবাইয়ে ধরা পড়ে দেশে ফেরত আসতে হলো ফারুক টাকলাকে।
এর আগে ‘‘মৃত্যুদণ্ড দেয়া যাবে না’’ শর্তে ভারতের আরেক কুখ্যাত সন্ত্রাসী আবু সালেমকে ভারতে ফেরত পাঠিয়েছিল পর্তুগাল। সেই ঘটনাকেও বড় কূটনৈতিক বিজয় বলে গণ্য করা হয়ে থাকে।
"এটা এক বিশাল সফলতা। কেননা সে (ফারুক টাকলা) ১৯৯৩ সালে মুম্বাইতে পরিচালিত এক ভয়াবহ বোমা হামলায় তার ও দাউদ ইব্রাহিমের হাত ছিল। দুজনেই এই মামলার আসামি। মুরাদ টাকলাকে গ্রেফতার করে ভারতে ফেরত পাঠানোর এই ঘটনা ‘‘ডি-গ্যাং’’ নামে পরিচিত দাউদ ইব্রাহিমের গ্যাং-এর জন্য বিশাল এক আঘাতই বটে’’ --বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি উজ্জ্বল নিকাম এএনআই বার্তা সংস্থাকে একথা বলেন।
উল্লেখ্য, ১৯৯৩ সালে দাউদ ইব্রাহিম ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী মুম্বাই শহরের অন্তত ১২টি স্থানে সিরিজ বোমা হামলা চালায়। এতে ২৫৭ জন মারা যায়। পঙ্গু ও আহত হয় ৭০০-র বেশি মানুষ।
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের একটি বিশেষ কমিটি গ্লোব্যাল টেরোরিস্টদের তালিকায় দাউদ ইব্রাহিমের নাম অন্তর্ভুক্ত করেছে। কিন্তু দাউদ এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরেই রয়ে গেছে। কারণ পাকিস্তান তাকে অলিখিত আশ্রয় ও গোপন সুরক্ষা দিয়ে আসছে।
উল্লেখ্য, পাকিস্তানের কিংবদন্তির ক্রিকেটার জাভেদ মিয়াঁদাদ বৈবাহিক সূত্রে দাউদ ইব্রাহিমের বেয়াই। মিয়াঁদাদের পুত্র দাউদ ইব্রাহিমের কন্যাকে বিয়ে করেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৫ ঘণ্টা, মার্চ ০৮, ২০১৮
জেএম