পাকিস্তানের জনপ্রিয় টিভি চ্যানেল জিইও নিউজের (Geo News) একটি সচিত্র প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলো বুধবার দিয়েছে এ খবর।
জিইও নিউজের প্রতিবেদনে দেখানো হয়, ব্যাপক তল্লাশি শেষে পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী বিরস বদনে নিউইয়র্কের জন এফ কেনেডি বিমানবন্দরের সিকিউরিটি চেক এলাকা থেকে ব্যাগ আর কোট-হাতে বের হয়ে আসছেন।
এই ভিডিও ফুটেজটি পরে পাকিস্তানের প্রায় সব টেলিভিশনে দেখানো হয়। পাকিস্তানজুড়ে তোলপাড় করা এই ভিডিও ফুটেজটিকে গোটা পাকিস্তানের জন্য ‘‘অবমাননাকর’’, ‘‘বিব্রতকর’’, ‘‘লজ্জার’’ এরকম নানা অভিধায় অভিহিত করা হচ্ছে। পাকিস্তানের মতো পরমাণু অস্ত্রধারী রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রী তিনি, এই পরিচয় জেনেও মার্কিনীরা তার প্রতি ন্যূনতম সম্মানটুকু না দেখানোয় পাকিস্তানিরা চরম ক্ষুব্ধ।
জিইও নিউজের প্রতিবেদনে জানানো হয়, পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন রাষ্ট্রীয় নয়, ব্যক্তিগত সফরে তার বোনকে দেখতে। তা সত্ত্বেও তিনি তো আর দশজন সাধারণ বিমানযাত্রীর মতো নন যে, তাকেও অন্য সবার মতো তল্লাশির নামে হেনস্থা করতে হবে। তাছাড়া তার পাসপোর্টই তো বলে দিয়েছে যে, তিনি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী! তবু কেন তার সঙ্গে এমনতরো ব্যবহার!
জিইও নিউজ আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী শহীদ খাকান আব্বাসী অন্যসব হোমড়া চোমড়া পাকিস্তানি নেতার মতো ঠাটবাট বজায় রেখে চলেন না। তিনি নিতান্তই জৌলুসহীন, আড়ম্বরহীন অতি সাদাসিধে জীবনযাপন করে থাকেন।
যাহোক, বিমানবন্দরে তার প্রতি এহেন আচরণকে তিনি খুব একটা গায়ে মাখেননি। ক্ষোভও প্রকাশ করেননি। এক পর্যায়ে তিনি মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের সঙ্গে সাক্ষাৎও করেছেন সবকিছু ভুলে। অবশ্য সে বৈঠক মধুর হয়নি। বৈঠককালে মাইক পেন্স তাকে আবারও কড়া বার্তা দিয়েছেন, পাকিস্তানকে তার মাটি থেকে সন্ত্রাসবাদ-জঙ্গিবাদ দমনে আরও অনেক কিছু করতে হবে।
কূটনৈতিক পাসপোর্ট থাকা সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী আব্বাসী এহেন অবমাননাকর প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে যাওয়ায় কিছু মিডিয়ার রিপোর্টে কড়া সমালোচনা করা হয়েছে। তাদের বক্তব্য, তিনি পাকিস্তানের মানসম্মান ডুবিয়েছেন।
উল্লেখ্য, প্রাকিস্তাননি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এহেন অবমাননাকর আচরণ এমন এক সময় করা হলো, যখন যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের উপর নানা কারণে খড়্গহস্ত।
দেশটি পাকিস্তানের সরকারি মহলের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের কথা ভাবছে। এসবের মধ্যে আছে ভিসা নিষেধাজ্ঞা এবং অন্যসব নিষেধাজ্ঞা ও নানাবিধ কড়াকড়ি। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ৭টি পাকিস্তানি কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। গত জানুয়ারিতে পাকিস্তানের প্রাপ্য ১৩০ কোটি ডলারের সামরিক সহায়তাও স্থগিত করেছে ওয়াশিংটন। সব মিলিয়ে যুক্তরাষ্ট্র-পাকিস্তান সম্পর্কটি এখন সরু সুতোর । উপর ঝুলছে।
বাংলাদেশ সময়:১৩৪০ ঘণ্টা, মার্চ ২৮, ২০১৮
জেএম