বুধবার (২৮ মার্চ) মিয়ানমারের পার্লামেন্টের সদস্যরা তাকে এ পদে নির্বাচিত করেন। সপ্তাহখানেক আগে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট উ থিন কিয়াও ‘স্বাস্থ্যগত কারণ’ দেখিয়ে পদত্যাগের ঘোষণা দেন।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রার্থী হিসেবে দৌঁড়ে ছিলেন মিনত এবং আরও দুই ভাইস প্রেসিডেন্ট। নির্বাচনে ৬৬৪ ভোটের (সংসদের দুই কক্ষের সদস্য) মধ্যে ৪০৩টি পেয়ে জিতে যান মিনত। আগের প্রেসিডেন্ট কিয়াও ২০১৬ সালের নির্বাচনে পেয়েছিলেন ৩৬০ ভোট।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের খবর, মিনতকে সু চি’র আস্থাভাজন মিত্রদের বলয়ের একজন বলে মনে করা হয়। ৬৬ বছর বয়সী এই রাজনীতিক মিয়ানমারের সংখ্যাগরিষ্ঠ বমর জনগোষ্ঠীর। ইয়াঙ্গুন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করা মিনত সর্বোচ্চ আদালতের আইনজীবী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৮৮ সালে মিয়ানমারে স্বৈরশাসক জেনারেল নে উইনের বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম নেতৃত্বে ছিলেন মিনত। সেজন্য তাকে ওই সময় কারারুদ্ধও হতে হয়।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপের মুখে মিয়ানমার সেনাবাহিনী কিছুটা নমনীয় হয়ে ২০১৫ সালে যে নির্বাচনের আয়োজন করে, তাতে সু চি’র নেতৃত্বে ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি বা এনএলডি’র হয়ে অংশ নেন মিনতও।
ওই নির্বাচনে জিতে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ছত্রছায়ায় সু চি সরকার চালানো শুরু করলে তাতে বেশ প্রভাব দেখা যায় মিনতের। তিনি সবশেষ সংসদের স্পিকারের দায়িত্ব পালন করছিলেন।
‘বিশ্রাম নিতে’ গত ২১ মার্চ ৭১ বছর বয়সী কিয়াও প্রেসিডেন্ট পদ থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দিলে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পান মিনত। সু চি’র একেবারে আস্থাভাজন হিসেবে চিহ্নিত বলে তাকেই প্রেসিডেন্ট পদে ভাবা হচ্ছিলো, সে পর্যন্ত হলোও তাই। কেউ কেউ বলছেন, মিনত নির্বাচিত হলেও কার্যত তার মাধ্যমে প্রেসিডেন্টেরও কাজকর্ম সারবেন সু চি।
কিয়াও ছিলেন অর্ধ-শতাব্দীকালেরও বেশি সময়ে মিয়ানমারের প্রথম বেসামরিক এবং গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট। তবে রাখাইন রাজ্যে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর সেনাবাহিনী ও উগ্রপন্থি বৌদ্ধদের ধারাবাহিক জাতিগত নির্মূল অভিযান, হত্যাযজ্ঞ, ধর্ষণ ও ব্যাপক নিপীড়নের বিষয়ে তিনি কোনো ধরনের বিবৃতি দেননি। এ জাতীয় ঘটনা স্বীকার বা অস্বীকারও করেননি। সু চি রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞকে আড়াল করার জন্য নানা মিথ্যা বিবৃতি ও ছলচাতুরির আশ্রয় নিলেও সব ব্যাপারেই নীরব থেকেছেন তিনি।
তার স্থলাভিষিক্ত হওয়া মিনত রাখাইনে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় সংকট নিরসনে কোনো ভূমিকা রাখতে পারেন কি-না, সে অপেক্ষায়ই রয়েছেন সবাই।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২৮ ঘণ্টা, মার্চ ২৮, ২০১৮
এইচএ/
** মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট উ থিন কিয়াও’র পদত্যাগ