ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

ফের নির্যাতন করছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী: অ্যামনেস্টি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০২১ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০১৯
ফের নির্যাতন করছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী: অ্যামনেস্টি রাখাইনে অভিযান চালাচ্ছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নতুন করে অভিযানে আদিবাসীদের ওপর দেশটির সেনাবাহিনী যুদ্ধাপরাধের মতো বর্বর নির্যাতন শুরু করেছে বলে জানিয়েছে লন্ডনভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।

বছর ‍দুয়েক আগেই রাজ্যের সংখ্যালঘু মুসলমান রোহিঙ্গাদের ওপর মানবাধিকার লঙ্ঘন ও গণহত্যার অভিযোগ ওঠে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে তারা ফের নির্বিচারে বেসামরিক লোকদের হত্যা ও নির্যাতন শুরু করেছে।

বুধবার (২৯ মে) অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরেই সুপ্রশিক্ষিত গেরিলা বাহিনী আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে লড়ছে। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী এ গ্রুপটি রাখাইনে স্বায়ত্বশাসনের দাবিতে সংঘর্ষে লিপ্ত।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক নিকোলাস বেকুইন বলেন, রাখাইনে শুরু হওয়া নতুন অভিযানে বেসামরিক লোকদের বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃতভাবে অপ্রত্যাশিত ও অগ্রহণযোগ্য সন্ত্রাসের কৌশল বেছে নিয়েছে মিয়ানমান সেনাবাহিনী। সেখানে নির্বিচারে মৃত্যুদণ্ড, গ্রেফতার, গুমসহ ও বিভিন্ন বিকৃত নির্যাতন চালানো হচ্ছে।

বিদ্রোহীরাও সাধারণ মানুষের ‍ওপর অপহরণ, নির্যাতন চালাচ্ছে। যদিও এর মাত্রা সেনাবাহিনীর তুলনায় বেশ কম।  

এসবের উদ্দেশ্য ও ফলাফল সম্পর্কে মিয়ানমার সরকার ও সেনাবাহিনীর সর্বোচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কাছে লিখিতভাবে জানতে চাওয়া হলেও তার কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠনটি।

২০১৭ সালে বিদ্রোহ দমনের নামে রাখাইনে ব্যাপক নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়। এ সময় মিয়ানমার সেনাবাহিনীসহ অন্য নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে খুন, গণধর্ষণ, লুটের মতো গুরুতর অভিযোগ ওঠে। এতে অন্তত ৭ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়।

জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞসহ বিশ্বব্যাপী সমালোচকরা মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে জাতিগত হত্যাকাণ্ড, অনেক ক্ষেত্রে গণহত্যার অভিযোগ তোলেন।

তবে দেশটির সরকারের দাবি, একাধিক পুলিশ পোস্ট ও ঘাঁটিতে রোহিঙ্গা গেরিলাদের হামলার কারণে এ অভিযান চালানো হয়েছে।

২০১৭ সালের শেষ দিক থেকেই রোহিঙ্গা বিদ্রোহীরা একেবারে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছে। তবে, গত বছর থেকে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে লাগাতার সংঘর্ষ চলছে বিদ্রোহী গোষ্ঠি আরাকান আর্মির।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের দাবি, আগে নির্যাতিত হওয়া একদল মানুষ এখন অন্যদের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে বলে প্রমাণ পেয়েছে তারা।

এ বছরের ৪ জানুয়ারি পুলিশ বাহিনীর ওপর আরাকান আর্মির হামলায় ১৩ জন নিহত ও নয় জন আহত হন। এ ঘটনার পরেই সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে মিয়ানমার সরকার।

গত মাসে, সংঘর্ষ চলাকালে দু’পক্ষের হাতেই বেসামরিক লোক আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘ।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার রাভিনা শামদাসানি জানান, তাদের কাছে বেসামরিক নাগরিক হত্যা, ঘরে আগুন, নির্বিচারে গ্রেফতার, অপহরণসহ সাংস্কৃতিক সম্পত্তির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির বিশ্বাসযোগ্য তথ্য আছে।

বাংলাদেশ সময়: ২০২০ ঘণ্টা, মে ২৯, ২০১৯
একে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।