ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

বাহামার বুকে ডোরিয়ানের ‘অনাকাঙ্ক্ষিত’ ক্ষতচিহ্ন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৪, ২০১৯
বাহামার বুকে ডোরিয়ানের ‘অনাকাঙ্ক্ষিত’ ক্ষতচিহ্ন ধ্বংস হয়ে গেছে দ্বীপের অধিকাংশ ঘর বাড়ি। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: আটলান্টিকের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ শক্তিশালী সামুদ্রিক ঝড় ‘ডোরিয়ান’ বাহামার উত্তর অংশের অ্যাবাকো দ্বীপে রেখে গেছে ‘অনাকাঙ্ক্ষিত’ ভয়ংকর সব ক্ষতচিহ্ন। এ হারিকেনের আঘাতে দুমড়ে-মুচড়ে গেছে দ্বীপের বাড়িঘর। কোনোটা একেবারে মিশে গেছে মাটির সঙ্গে। আবার কোনোটার উড়ে গেছে ছাদ। রাস্তায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে পানির সঙ্গে ভেসে আসা বাড়ির ছাদ, গাড়ি এবং বড় বড় কন্টেনার। আর এ হারিকেনের তাণ্ডবে এখন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৭ জনের।

বুধবার (০৪ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে উঠে আসে বাহামা দ্বীপপুঞ্জে হারিকেনের আঘাতের ক্ষতচিহ্ন।

আরও পড়ুন>> ‘ডোরিয়ান’র তাণ্ডবে বাহামায় ৫ জনের মৃত্যু

খবরে বলা হয়, সোমবার (০২ সেপ্টেম্বর) অ্যাবাকো দ্বীপে হারিকেন ডোরিয়ান আঘাত হানে।

ঘণ্টায় ২৭০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের আঘাতে অন্তত ১৩ হাজার ঘরবাড়ির ছাদ উড়ে গেছে। রোববার (০১ সেপ্টেম্বর) সর্বোচ্চ ক্যাটাগরি ৫ ঝড়ে রূপ নেয় ‘ডোরিয়ান’।

সাজানো-গোছানো এবং আকর্ষণীয় হওয়ার কারণে বাহামায় পর্যটকদের অন্যতম গন্তব্য ছিল অ্যাবাকো দ্বীপ। ডোরিয়ান আঘাত হানার পর দ্বীপটিকে এখন আর চেনার উপায় নেই। মাইলের পর মাইল ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে ধ্বংসাবশেষ।

হারিকেন আঘাত হানার পর ব্রেন্ডন ক্লিমেন্ট নামের একজন দ্বীপটি হেলকপ্টারে চড়ে ঘুরে দেখেছেন।

তার বরাত দিয়ে খবরে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে যে বাড়িগুলো ভবন নির্মাণের সব নিয়ম-কানুন মেনে তৈরি করা হয়েছিল হারিকেনের আঘাতে সেগুলোও ধ্বংস হয়ে গেছে। আপনি কোনোভাবেই বলতে পারবেন না যে, এখানে কোনো বাড়ি আর অক্ষত অবস্থায় রয়েছে। বর্তমানে দ্বীপের পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে, ভবন নির্মাণের অনেকগুলো উপকরণ ভেঙেচুরে যেন খোলা মাঠে একসঙ্গে রাখা হয়েছে।

দ্বীপের সর্বত্রই ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে ধ্বংসাবশেষ।  ছবি: সংগৃহীত

অ্যাবাকো দ্বীপ ঘুরে এসে বাহামার প্রধানমন্ত্রী হুবার্ট মিন্নিস সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, দ্বীপের প্রায় ৬০ শতাংশ ঘরবাড়ি পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। একটি ভয়াবহ হারিকেন দ্বীপে আঘাত হেনেছে যা থেকে আত্মরক্ষার সুযোগ ছিল না বললেই চলে। দ্বীপে বুধবার (০৪ সেপ্টেম্বর) অতিরিক্ত পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর  সদস্যদের পাঠানো হবে যেন সহিংসতা বা লুটপাটের ঘটনা না ঘটে।

২০১০ সালে পরিচালিত একটি জরিপ অনুযায়ী, দ্বীপটিতে ১৮ হাজারের মতো মানুষের বসবাস। তখন ঘরবাড়ির সংখ্যা ছিল ৫ হাজার ২০০।

আরও পড়ুন>> ‘ডোরিয়ান’ তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড বাহামা, মৃত্যুর খবর

আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে, এক সপ্তাহ ধরে হারিকেন ডোরিয়ান বিভিন্ন সময়ে তার গতিপথ পরিবর্তন করেছে। প্রথমে ঝড়ের আঘাতস্থল পুয়োর্তে রিকোর কথা বলা হলেও পরে তা পরিবর্তন হয়ে যায়। ধীরগতির এ হারিকেন প্রতিনিয়ত গতিপথ পরিবর্তনের পাশাপাশি শক্তি বাড়িয়েছে। সবশেষ যা সর্বোচ্চ ক্যাটাগরি ৫-এ পৌঁছেছে। বর্তমানে এটি ১১০ মাইল গতির ক্যাটাগরি-২ ঝড়ে রূপ নিয়ে ফ্লোরিডার দিকে এগোচ্ছে।  

এদিকে ‘ডোরিয়ান’ মোকাবিলায় সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়েছে মার্কিন প্রশাসন। ফ্লোরিডার গর্ভনর রন ডি স্যান্তিস রাজ্যজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করেছেন। প্রস্তুত রাখা হয়েছে দুই হাজার ৫০০ জাতীয় গার্ড সদস্যকে। প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে আরও এক হাজার ৫০০ সদস্যকে।

বাংলাদেশ সময়: ১২৩৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৪, ২০১৯
এইচএডি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।