ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

ব্রিটেনে বর্ণবাদ ও বর্ণবৈষম্য যখন রাজপরিবারেই প্রকট!

আন্তর্জতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭০৪ ঘণ্টা, মার্চ ৯, ২০২১
ব্রিটেনে বর্ণবাদ ও বর্ণবৈষম্য যখন রাজপরিবারেই প্রকট!

ঢাকা: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কৃষ্ণাঙ্গদের অধিকার লঙ্ঘন ও তাদের প্রতি শ্বেতাঙ্গদের পরিচালিত রাষ্ট্রীয় কাঠামোর পক্ষ থেকেই বৈষম্য সম্পর্কে আমরা প্রায়ই নানা সংবাদ শুনছি। কিন্তু ব্রিটেনেও যে এ বিষয়টি খুবই প্রকট তার খবর সংবাদ মাধ্যমে খুব একটা প্রচার করা হচ্ছে না।

আসলে গোটা পাশ্চাত্যেই বিরাজ করছে বর্ণ ও ভাষা-ভিত্তিক বৈষম্য আর বর্ণবাদ এবং এ সংক্রান্ত মানবাধিকার লঙ্ঘনের লজ্জাজনক পরিস্থিতি। ব্রিটেনে বর্ণবাদ এতই প্রকট যে দেশটির রাজ-পরিবারের সদস্যও এখন বর্ণবাদের শিকার।  

ব্রিটিশ রাজপুত্র প্রিন্স হ্যারির স্ত্রী মেগান মার্কেল রাজপরিবারের বর্ণবাদী আচরণ সম্পর্কে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন। সোমবার (০৮ মার্চ) সিবিএস টেলিভিশনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, অনাগত সন্তানের ত্বকের রং কেমন হবে তা নিয়েও রাজপরিবারের সদস্যরা তাকে কথা শুনিয়েছেন।   

প্রিন্স হ্যারির স্ত্রী মেগান মার্কেল আরও বলেছেন, তাকে বলা হয়েছে ত্বকের রংয়ের কারণে তার সন্তান আর্চিকে রাজকীয় খেতাব দেওয়া হবে না।

প্রিন্স হ্যারি ও মেগান মার্কেল অনেক আগেই রাজকীয় দায়িত্ব থেকে স্বেচ্ছায় অব্যাহতি নিয়েছেন এবং তারা আমেরিকায় বসবাস করছেন।

মেগান বলেন, আমার গর্ভধারণের কয়েক মাসে ঘুরে ফিরে কয়েকটি কথা আসতো- তুমি রাজকীয় নিরাপত্তা পাবে না, কোনো রাজকীয় খেতাবও পাবে না। আর যখন ওর জন্ম হবে, ওর গায়ের রঙ কতটা কালো হতে পারে তা নিয়েই তাদের যত উদ্বেগ ছিল।  

আধুনিক যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ব্রিটেনের রাজপরিবারের নিজস্ব প্রাচীন আইনগুলোকে অনেক সহজ করা হয়েছে বলে দাবি করা হলেও তা সত্য নয়।  ব্রিটেনে রাজপরিবারের কঠোর আইন অমান্য করলে প্রিন্সদের রাজকীয় খেতাব বা পদ বাতিল করা হয়। মেগান মার্কেল ব্রিটেনের রাজ পরিবারের হাতেই বৈষম্যের শিকার বলে বিশ্লেষকরা উল্লেখ করছেন।  

ব্রিটেনে সম্প্রতি  ইসমাইল রোকেয়া নামের একজন হিজাবধারী মুসলিম নারী প্রথমবারের মত মেয়র নির্বাচিত হওয়া সত্ত্বেও ইসলাম-বিদ্বেষী ও বর্ণবাদী নীতির কারণে লেবার পার্টি থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন।

ব্রিটেনের কৃষ্ণাঙ্গ নাগরিকরা প্রায়ই পুলিশের হাতে নির্যাতিত ও অপদস্থ হয়ে থাকেন। ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্যরাও পুলিশি নির্যাতন ও বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। তাদের ওপর পুলিশি নির্যাতনের ঘটনাগুলোর সংখ্যা শ্বেতাঙ্গদের ওপর একই ধরনের নির্যাতনের ঘটনার চেয়ে অনেক অনেক বেশি।

বিশিষ্ট লেখক স্যামুয়েল অ্যাতিইন বলেছেন, ব্রিটেনে বর্ণবাদ পরিকল্পিত ও প্রাতিষ্ঠানিক। দেশটির শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও চাকুরিসহ নানা ক্ষেত্রে বর্ণবাদ বেশ প্রকট। দেশটির কৃষ্ণাঙ্গরাই বেশি মাত্রায় করোনা ভাইরাসের শিকার হয়েছেন তাদের প্রতি উদাসীনতার কারণেই।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০৩ ঘণ্টা, মার্চ ০৯, ২০২১
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।