ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

সহিংসতা বাড়ছে আফগানিস্তানে, নতুন গ্রুপের আত্মপ্রকাশ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৩৭ ঘণ্টা, মে ২২, ২০২২
সহিংসতা বাড়ছে আফগানিস্তানে, নতুন গ্রুপের আত্মপ্রকাশ

‘তেহরিকে আজাদি আফগানিস্তান’ নামের একটি গ্রুপ সম্প্রতি বালখ প্রদেশের মাজার শরীফে চার নম্বর নিরাপত্তা জোনে বিস্ফোরণের দায়িত্ব স্বীকার করেছে। তালেবান বিরোধী হিসেবে পরিচিত এই গ্রুপ দাবি করেছে তাদের ওই হামলায় ১০ জন নিহত এবং ১২ জন আহত হয়েছে।

তবে তালেবান কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে এতে শুধুমাত্র তিন জন আহত হয়েছে।

প্রকৃতপক্ষে, তালেবান ক্ষমতায় আসার পর ‘তেহরিকে আজাদি আফগানিস্তান’ গ্রুপ তালেবান বিরোধী নতুন শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে এবং তাদের ব্যাপারে সঠিক তথ্য এখনো সবার জানা নেই। এ অবস্থায় বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে তারা যে নিরীহ মানুষ হত্যার পথ বেছে নিয়েছে তা খুবই উদ্বেগের বিষয়। কেননা এ থেকে প্রমাণিত হয়েছে নতুন করে আফগানিস্তানে হত্যাকাণ্ড ও নৈরাজ্য শুরু হতে যাচ্ছে এবং এর মাধ্যমে একটি গোষ্ঠী নিজেদের শক্তিমত্ত্বা দেখাতে চাইছে। এর অর্থ হচ্ছে একটি আগ্রাসী গোষ্ঠী নিরীহ মানুষকে হত্যা করে আফগানিস্তানে তাদের অবস্থানকে পাকাপোক্ত করতে চায়।

এছাড়া নৈরাজ্য সৃষ্টিকারী সহিংসতাকামী গোষ্ঠীগুলো দেশের ভেতরে ও বাইরের অর্থ সহায়তা নিয়ে আফগানিস্তানে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির চেষ্টা করে যাচ্ছে। আফগানিস্তান বিষয়ক বিশেষজ্ঞ মোহাম্মদ শারিফি নিয়া এ ব্যাপারে বলেছেন, আফগানিস্তানের সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো এমনকি মাদক, অস্ত্র ও মানব পাচারের সঙ্গে জড়িত মাফিয়া চক্র কোনোভাবেই চায় না সেদেশে নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা হোক। কেননা আফগানিস্তানে শান্তি ও নিরাপত্তা বিরাজ করলে অপরাধীদের উদ্দেশ্য হাসিল হবে না।

বাস্তবতা হচ্ছে, আফগানিস্তানে রক্তপাতের সঙ্গে জড়িত সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো এমন সময় নিজেদেরকে তালেবান বিরোধী হিসেবে পরিচয় দিচ্ছে যখন ওই দেশটির জনগণ যুদ্ধ, নিরাপত্তাহীনতা, সন্ত্রাস ও সহিংসতার কারণে ক্লান্ত হয়ে পড়েছে এবং তারা এখন দেশকে শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীল দেখতে চায়। নয় মাস হলো তালেবান ক্ষমতা দখল করে আছে। এ অবস্থায় তাদেরই দায়িত্ব জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। গত বেশ ক'মাস ধরে উগ্র তাকফিরি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী দায়েশ বা আইএস জঙ্গিদের একের পর এক হামলা ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনা থেকে বোঝা যায় এসব সন্ত্রাসীদের হামলা রোধ করার ক্ষমতা তালেবানের নেই।

আগামী গ্রীষ্ম থেকে সন্ত্রাসীরা ব্যাপক হামলা শুরু করবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ অবস্থায় তালেবান বিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও গোষ্ঠী আফগানিস্তানে অংশগ্রহণমূলক সরকার গঠন এবং তালেবানের একচেটিয়া কর্তৃত্ব অবসানের দাবি জানিয়ে আসছে।

যাইহোক, বালখ প্রদেশের মাজার শরীফে বোমা বিস্ফোরণের মাধ্যমে ‘তেহরিকে আজাদি আফগানিস্তান’ নামে একটি গ্রুপের আবির্ভাব তালেবানের জন্য বিশেষ বার্তা বহন করছে। যেহেতু এখনো অংশগ্রহণমূলক সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়নি সে কারণে তারা অন্যান্য ধর্মীয়, জাতিগত ও রাজনৈতিক গ্রুপকে সাথে নিয়ে তালেবান বিরোধী ঐক্য গড়ে তোলার চেষ্টা করতে পারে বলে অনেকে মনে করছে। এ অবস্থায় আগামীতে পরিস্থিতি কোনদিকে যায় সেটাই এখন দেখার বিষয়।

খবর: পার্সটুডে

বাংলাদেশ সময়: ০৭৩৫ ঘণ্টা, মে ২২, ২০২২
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।