ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

আদিবাসী শিশুদের মৃত্যু: ক্ষমা চাইলেন পোপ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০৯ ঘণ্টা, জুলাই ২৬, ২০২২
আদিবাসী শিশুদের মৃত্যু: ক্ষমা চাইলেন পোপ

কয়েক দশক ধরে ক্যাথলিক গির্জার নিয়ন্ত্রণাধীন আবাসিক স্কুলগুলো অত্যাচার চলেছে। ধর্মের বেড়াজালে কানাডার আদিবাসী শিশুদের উপরে হওয়া সেই নির্যাতনের জন্য ক্ষমা চাইলেন পোপ ফ্রান্সিস।

বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, সোমবার (২৫ জুলাই) কানাডার আলবার্ট অঞ্চল পরিদর্শনে গিয়ে আদিবাসী শিশুদের উপরে হওয়া নির্যাতনের জন্য ক্ষমা চান পোপ। এ সময় তিনি আদিবাসীদের দুঃখ-কষ্টের কথো শোনেন। সৃষ্টিকর্তার কাছে তাদের জন্য এবং যারা নিষ্ঠুর অত্যাচারের শিকার হয়েছে, তাদের জন্যও প্রার্থনা করবেন।

আদিবাসী নেতা, আবাসিক স্কুলের নির্যাতন থেকে বেঁচে যাওয়া মানুষ এবং প্রবীণদের এক অনুষ্ঠানে দেওয়া ভাষণে পোপ ফ্রান্সিস বলেন, আমি এখানে এসেছি কারণ আমার অনুশোচনামূলক তীর্থযাত্রার প্রথম ধাপটি হলো আবারও ক্ষমা চাওয়া। আমি গভীরভাবে দুঃখিত। কানাডার আদিবাসী স্কুলে যা ঘটেছিল সেটি খ্রিস্টানদের ধর্মবিশ্বাসের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। বরং এটি ছিল একটি বিপর্যয়কর ত্রুটি।

এ সময় তিনি বলেন, আদিবাসীদের বিরুদ্ধে অনেক খ্রিস্টানদের সংঘটিত মন্দ কাজের জন্য আমি বিনীতভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করছি।

দীর্ঘদিন ধরে আদিবাসীদের অত্যাচার-নির্যাতনের ঘটনায় পোপদের ক্ষমা প্রার্থনার দাবি জানিয়ে আসছিলেন ড. উইল্টন লিটলচাইল্ড নামে এক ব্যক্তি। তিনি এরমিনস্কিন রেসিডেন্সিয়াল স্কুলের নির্যাতন থেকে বেঁচে যাওয়াদের একজন। পোপ ক্ষমা চাওয়ায় তাকে ধন্যবাদ জানান উইল্টন।

১৮০০ শতকের শেষ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত কানাডায় অন্তত ১৩৯টি স্কুল পরিচালিত হতো গির্জার নিয়ন্ত্রণে। কানাডার আদিবাসী, জনজাতি শিশুদের এসব স্কুলে পাঠিয়ে দিত তৎকালীন সরকার। পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন করে এসব শিশুদের আটকে রাখা হতো। চালানো হতো শারীরিক ও যৌন নির্যাতন। নিজেদের ভাষা, সংস্কৃতি, সমাজ থেকে দূরে সরে গিয়েছিল এসব শিশু। স্কুলগুলোর প্রধান শিক্ষকসহ সংশ্লিষ্ট সকলে নির্যাতনে মৃত্যুও হয় অনেক শিক্ষার্থীর। অনেক ছাত্রী ধর্ষণের কারণেও মারা যায়।

২০২১ সালের মে মাসে কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়ার কামলুপস এলাকার একটি পুরনো আবাসিক স্কুলের ভবন থেকে ২১৫ শিশুর দেহাবশেষ উদ্ধার হয়। এসব শিশু আদিবাসী রেড ইন্ডিয়ান বলে জানা যায়। ওই স্কুলটি ১৯৭৮ সালে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। গত বছরের জুনে সাসকাচেওয়ান প্রদেশের পুরনো একটি আদিবাসী আবাসিক স্কুলে আরও ৭৫১টি কোনো চিহ্ন না থাকা কবরের সন্ধান মেলে।

এসব স্কুলে মৃত্যুর শিকার শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৪ হাজারেরও বেশি। ১৩০০-র বেশি কবর মিলেছে এ অঞ্চলগুলোয়। কানাডায় দীর্ঘদিনের দাবি ছিল, পোপকে ক্ষমা চাইতে হবে। এই অপরাধ স্বীকার করতেই হবে। এ দাবি থেকেই মূলত পোপ কানাডা সফর করেন।

সূত্র : বিবিসি

বাংলাদেশ সময় : ১৩০৫ ঘণ্টা, ২৬ জুলাই, ২০২২
এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।