ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

সাক্ষাৎকার

ভিশন-২০২১ বাস্তবায়নে প্রত্যয়ী মাহমুদুল হাসান

উত্তম ঘোষ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬২২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০১৬
ভিশন-২০২১ বাস্তবায়নে প্রত্যয়ী মাহমুদুল হাসান ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

যশোর: প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ভিশন-২০২১ বাস্তবায়নে কাজ করতে চান যশোরের মণিরামপুর পৌরসভার নবনির্বাচিত মেয়র অধ্যক্ষ কাজী মাহমুদুল হাসান।

৩০ ডিসেম্বর পৌরসভা নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে জয়ী হওয়ার পর বাংলানিউজের মুখোমুখি হয়ে তিনি এ প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।



বাংলানিউজকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাতকারে তিনি বলেন, মণিরামপুর পৌরসভায় উন্নয়নের মধ্য দিয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ভিশন-২০২১ বাস্তবায়নে কাজ করবেন। দীর্ঘদিন বিএনপির দখলে থাকা মণিরামপুর পৌরসভা ভবন নির্মাণ, পৌর এলাকায় পানি সরবরাহ লাইন, ড্রেনেজ, রাস্তা সংস্কার ও নতুন নির্মাণ, গণশৌচাগার, কবরস্থান ও শ্বশ্মান, টার্মিনাল স্থাপন ও যানজট নিরসনে কার্যকরি ভূমিকা রাখবেন তিনি।

সদ্য নির্বাচিত এই মেয়র বলেন, পৌর এলাকার প্রতিটি সড়কে আলোর ব্যবস্থা এবং নাগরিক সেবার মাধ্যমে মণিরামপুর পৌরসভাকে প্রথম শ্রেণিতে উন্নীতকরণে ভূমিকা রাখবেন।  

মণিরামপুরের দত্তকোনা গ্রামের মৃত কাজী খাদেম আলী ও মৃত হালিমা খাতুনের ছেলে অধ্যক্ষ কাজী মাহমুদুল হাসান ১৯৫১ সালের ২২ অক্টোবর জন্মগ্রহণ করেন। স্থানীয় নেহালপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গন্ডি পেরিয়ে যশোর সম্মিলনী ইনস্টিটিউট থেকে এসএসসি পাস করেন তিনি।

১৯৬২ সালে যশোর সম্মিলনী ইনস্টিটিউটে অধ্যায়নকালেই তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতি শুরু করেন। পরে যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন (এমএম) কলেজ থেকে এইচএসসি এবং খুলনা সরকারি বিএল কলেজ থেকে ডিগ্রি পাস করেন তিনি। এরপর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স অধ্যায়নকালে তিনি হল ছাত্রলীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৭০ সালে মণিরামপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদকের পদে দায়িত্ব নেওয়ার মধ্য দিয়ে প্রবেশ করেন আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে। পরে পরপর দুই কমিটিতে তিনি মণিরামপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এবং ২০০২ সাল থেকে এখন পর্যন্ত (চলতি ২০১৬) টানা ১৪ বছর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।

কর্মজীবনে যশোরের ঝিকরগাছা কলেজে ১২ বছর অধ্যাপক হিসেবে ও পরে মণিরামপুর গার্লস কলেজে প্রতিষ্ঠাকালীন অধ্যক্ষ হিসেবে ২০ বছর দায়িত্বপালন করে অবসর গ্রহণ করেন। কর্মজীবনে তিনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।

বর্তমানে তিনি যশোর জেলা কলেজ শিক্ষক সমিতি এবং মণিরামপুর ডিগ্রি কলেজে সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

দেশে প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে নিজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, এবারের নির্বাচেনে (৩০ ডিসেম্বর) দলীয় প্রতীক ছিলো বলেই মণিরামপুর আওয়ামী লীগের ইউনিটি ফিরিয়ে আনা গেছে। শেষ পর্যন্ত কিছু নেতার মধ্যে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ছিল। তবুও প্রতীকের কারণে ভোটাররা ঐক্যবদ্ধ থাকায় কোনো নেতার দ্বন্দ্ব বিজয় ঠেকাতে পারিনি।

তেমনি, বিএনপি প্রার্থীও প্রতীকের জোরে নেতাকর্মীদের পাশে পেয়ে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আসতে পেরেছেন।

নির্বাচন পূর্ব পরিকল্পনা তুলে ধরে তিনি বলেন, মাস তিনেক আগেও কোনো ধরনের নির্বাচনী প্রস্তুতি ছিল না। তবে মাস দুয়েক আগে সমর্থকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ঘোষণা দেয়, পৌর নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন চাইবো। আর যদি মনোনয়ন দেয় তবে নির্বাচন করব। এরপর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির মিটিংয়ে মনোনয়নের বিষয়টি চূড়ান্ত হলে আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু করি।

অধ্যক্ষ মাহমুদুল হাসান বলেন, ১৯৭০ সাল থেকে ৪৬ বছর মণিরামপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল পদে থেকে রাজনীতি করছি। এজন্য ব্যক্তি ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অসংখ্য কর্মীরা উজ্জীবিত ছিল, তারা সবসময় উৎসাহ-উদ্দীপনা দিয়েছে। তাদের ধারণা ছিল, আমি নির্বাচনে অংশ নিলে দীর্ঘদিন বিএনপির দখলে থাকা মণিরামপুর পৌরসভায় আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিত্ব প্রতিষ্ঠা হবে। পরে মনোনয়ন চূড়ান্ত হলে আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে প্রচরণা শুরু করি।

নবনির্বাচিত মেয়র বলেন, নির্বাচনে কোন ওয়ার্ডে কত ভোট পেয়েছি এটা মুখ্য বিষয় নই। সার্বজনীন দৃষ্টিভঙ্গিতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ন করা হবে।

একজন সংসদ সদস্যের চেয়ে স্থানীয় সরকার প্রতিনিধির দায়বদ্ধতা অনেক বেশি মন্তব্য করে তিনি বলেন, অধিকাংশ সাধারণ মানুষ সংসদ সদস্যেকে চেনেনও না। তারা স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধির উপর নির্ভরশীল।

বাংলাদেশ সময়: ০৬২১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০১৬
এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।