ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

সাক্ষাৎকার

মেয়রের ইন্টারভিউ

নাগরিক দুর্ভোগের অবসান ঘটাবেন মুক্তাগাছার শহীদুল

এম আব্দুল্লাহ আল মামুন খান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৪৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০১৬
নাগরিক দুর্ভোগের অবসান ঘটাবেন মুক্তাগাছার শহীদুল ছবি : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ময়মনসিংহ: তার দল সরকারেও নেই। নেই সংসদেও।

তবুও প্রায় দেড়শ’বছরের প্রাচীন ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা পৌরসভার অন্তহীন সমস্যা দূর করে নাগরিক দুর্ভোগের অবসান ঘটাতে চান তিনি।

একান্ত সাক্ষাৎকারে বাংলানিউজকে এ ইচ্ছার কথাই জানান, বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচিত মুক্তাগাছা পৌরসভার মেয়র শহীদুল ইসলাম শহীদ।

তিনি জানান, স্বাচ্ছন্দ্যময় করে তুলতে চান নাগরিক জীবন। পৌরসভার সব কাজে নিশ্চিত করতে চান স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা।

শহীদুল জানান, নাগরিক সেবার মান বাড়াতে পৌর এলাকায় রাস্তাঘাট, ড্রেন নির্মাণ করে জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য ওয়ার্ডভিত্তিক নাগরিক কমিটি গঠন করবেন। প্রয়োজনে সবার মতামত নিয়ে একটি মাস্টার প্ল্যান প্রণয়ন করবেন ‍তিনি।

পৌরসভার আটানি বাজার এলাকায় বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপকালে নিজের আরো পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন বিএনপির এ নেতা।

নিজে সরকারবিরোধী বলে, পৌরসভার কাজে সরকার বিমাতাসুলভ আচরণ করবে না বলেও মনে করেন শহীদুল। শুধু তাই নয়, উন্নয়নের নতুন ধারা সৃষ্টি করতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ও তাকে সার্বিক সহায়তা করবে বলেও আশা তার।

প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নির্বাচনে ব্যক্তি ইমেজের চেয়ে দলীয় প্রতীকই  নিয়ামক হয়েছে। মুক্তাগাছা পৌর এলাকা বিএনপি অধ্যুষিত। তাই নির্বাচনে দলীয় প্রতীক পাওয়ায় আমার নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়া সহজ হয়েছে।

পৌরবাসীর দুঃখগাঁথা বর্ণনা করে তিনি বলেন, দেড়শ বছরের প্রাচীন এ পৌরসভায় অতীতে কোনো উন্নয়ন  কাজ হয়নি। জলাবদ্ধতা এখানকার প্রধান সমস্যা। ড্রেনেজ ব্যবস্থা একেবারেই অকেজো। প্রায় ৯৫ ভাগ রাস্তাঘাটই বেহাল। নাগরিক সার্বিক সেবা নিশ্চিত করার পাশাপাশি পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নত করাই হবে অন্যতম প্রধান কাজ।

পৌরসভার নিজস্ব আয় বাড়িয়ে ও সরকারি বরাদ্দ থেকে প্রাপ্ত অর্থের ভিত্তিতে পৌরবাসীর সব সমস্যা সমাধানের মাধ্যমে ভোটারদের প্রত্যাশা পূরণ করতে চান বলেও তিনি জানান।

পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের ১৭টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৪টি কেন্দ্রে কম ভোট পেয়েছেন শহীদুল। এসব এলাকায় উন্নয়ন কৌশল জানতে চাইলে তার সোজা-সাপ্টা জবাব, সব ওয়ার্ডবাসীর জন্য সমান নাগরিক সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করতে চাই। বিমাতাসুলভ আচরণ আমি করবো না।

একজন সংসদ সদস্যের চেয়ে স্থানীয় সরকারের জনপ্রতিনিধিদের দায়বদ্ধতা বেশি জানিয়ে তিনি বলেন, স্থানীয় জনসাধারণের সঙ্গে স্থানীয় সরকারের জনপ্রতিনিধিদের সুসম্পর্ক ভালো। ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও একজন সংসদ সদস্য ভোটারদের সার্বক্ষণিক খোঁজখবর বা যোগাযোগ রক্ষা করতে পারেন না। তাদের জবাবদিহিতাও আমাদের চেয়ে কম।

পৌরসভার অবকাঠামোগত উন্নয়নেও নজর দেওয়ার অঙ্গীকার করে তিনি বলেন, পৌরবাসীর প্রত্যাশা পূরণের মাধ্যমে তাদের সমর্থন নিয়ে আগামী নির্বাচনেও দাঁড়াতে চাই। কথা-কাজের সমন্বয় ঘটাতে চাই।

শহীদুলের সঙ্গে আলাপে জানা যায়, গত ১০ বছর ধরে নির্বাচনের পরিকল্পনা ছিল তার। অবশেষ গত পৌরসভা নির্বাচনের আগেই সাবেক মেয়র মানছুরুল হক খান রেজুনের রাজনীতি থেকে স্বেচ্ছা নির্বাসন তার জন্য  ‘সাপেবর’ হয়ে ওঠে।

এছাড়া দলে আর কোনো শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় দলীয় সমর্থনে প্রথমবারের মতো ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুযোগ পান তিনি।

গত ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে ৯ হাজার ২৪৫ ভোট পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হন শহীদুল। নির্বাচনে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির (লাঙ্গল) আতাউর রহমান লেলিন পান ৫ হাজার ৩৯০ ভোট। এছাড়া আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান মেয়র আব্দুল হাই আকন্দ পান ৩ হাজার ৯১৯ ভোট।

১৯৮৯ সালে মুক্তাগাছা উপজেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন শহীদুল ইসলাম শহীদ। এর ৪ বছর পর উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতির দায়িত্ব পান। ২০০৫ সালে পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হন।

এছাড়া মুক্তাগাছা উপজেলা পরিবহন মোটর মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদকের গুরু দায়িত্ব পালন করেছেন টানা ১৯ বছর।

বাংলাদেশ সময়: ০৬৪০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০১৬
এসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।