ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

সাক্ষাৎকার

মেয়রের ইন্টারভিউ

দুর্নীতিমুক্ত পৌরসভা গড়তে চান মানিকগঞ্জের সেলিম

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮২৪ ঘণ্টা, মার্চ ১, ২০১৬
দুর্নীতিমুক্ত পৌরসভা গড়তে চান মানিকগঞ্জের সেলিম ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

মানিকগঞ্জ: ‘লাগামহীন দুর্নীতি প্রতিরোধ, পৌরবাসীর ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা ও পরিবর্তনের লক্ষে পৌরবাসীর সঙ্গে ছিলাম, আছি ও থাকব। মানিকগঞ্জ পৌরসভাকে দুর্নীতিমুক্ত একটি মডেল পৌরসভা করব।



বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপকালে এ দৃঢ় লক্ষের কথা বলেন  মানিকগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র) প্রার্থী মুক্তিযোদ্ধা গাজী কামরুল হুদা সেলিম।

জেলা শহরের গংগাধর পট্টির নিজ বাসভবনে বাংলানিউজের কাছে নিজের ভবিষ্যৎ লক্ষ ও স্বপ্ন বাস্তবায়নের নানা দিক তুলে ধরেন নারিকেল গাছ প্রতীকে নির্বাচিত আওয়ামী লীগের এ প্রভাবশালী নেতা।

তিনি জানান, পৌরসভা নির্বাচনে প্রচারণা শুরুর পরপরই পৌরবাসীর ন্যায্য অধিকার আদায়ের লক্ষে পৌরবাসীদের নিয়ে গড়ে তোলা হয় ‘পৌর সামাজিক কল্যাণ সমিতি’। এর আলোকে পৌরসভার ৫২টি গ্রামের সবগুলোতে গঠন করা হয় নারী, যুবকদের জন্য পৃথক কমিটি ও সার্বিক তদারকির জন্যে একটি মূল কমিটি।

দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে সেলিম বলেন,  দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের ভালো-মন্দ এখনই বোঝার তেমন কিছু নেই। কোনো কিছু বুঝে উঠার আগেই এ  সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। বাধ্য হয়েই ওই নির্বাচনে অংশ নিতে হয়েছে। জনসমর্থনকে সবচেয়ে বড় ব্যাপার বলে মনে করেন তিনি।

তিনি জানান, পৌরবাসীর সেবার লক্ষে প্রচারণা শুরুর আগে তিনি ২৭টি সেবা উল্লেখ করে তার নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছিলেন।

ইশতেহারে পৌরসভাকে দূষণমুক্ত করা, আধুনিক পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা, পানি ও গ্যাসের সেবা নিশ্চিতের কথা বলা হয়েছে। এছাড়া মানিকগঞ্জ থেকে ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগের জন্যে আধুনিক এসি/ননএসি বাসের ব্যবস্থার কথাও বলা হয়েছে।

পৌরসভার উন্নয়নকাজ ও সেবা সম্পর্কে তিনি বলেন, তিনি পৌরসভার হতদরিদ্রদের কর সম্পূর্ণভাবে মওকুফের ব্যবস্থা করবেন। শহরের যানজট কমাতে মহাসড়ক থেকে সরাসরি গংগধর পট্টি হয়ে শহরে প্রবেশের রাস্তা নির্মাণ, শহরের খালের উপরে ছোট ছোট ব্রিজ নির্মাণ, সরু রাস্তাগুলো প্রশস্ত করা, পৌরবাসীর উন্নত চিকিৎসাসেবার জন্য বিনামূল্যে অ্যাম্বুলেন্স সেবার ব্যবস্থার কথাও জানান তিনি।

তিনি আরো জানান, শহরের একমাত্র অপরিচ্ছন্ন খালটিকে সংস্কার করে হাতির ঝিলের মতো বিনোদন কেন্দ্র তৈরি,  কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণ, পৌর শিক্ষাবৃত্তি চালু, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের জন্যে পৃথক বরাদ্দ, শহরের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ফ্রি ওয়াইফাই, শিশুদের বিনোদনের জন্যে শিশুপার্ক, পৌর কিন্ডার গার্টেন ও পৌর উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হবে।

সেলিম জানান, ঢাকার পাশের এ পৌরসভাকে মডেল হিসেবে গঠনের লক্ষে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্যে ‘মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ফাউন্ডেশন’ ও স্বাস্থ্যসম্মত পাবলিক টয়লেট নির্মাণ করা হবে।

পৌরসভা দুর্নীতিমুক্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার বিষয়ে তিনি বলেন, পৌরসভার প্রতিটি কাজের জন্য স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও সততা নিশ্চিত করতে দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের প্রশয় দেওয়া হবে না।

১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নেন সেলিম। রাজনৈতিক জীবনের শুরুতে জেলা জাসদের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। এরপর একটি হত্যা মামলায় ১৯৮৬ সাল থেকে ’৯৪ সাল পর্যন্ত জেল খাটেন তিনি। জেল থেকে মুক্তির পর ’৯৪ সালে তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা শেখ হাসিনার নিজ বাসভবনে গিয়ে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন তিনি।

এরপর ২০০৩ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ একযুগ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন সেলিম। ২০১৫ সালে দলীয় কাউন্সিলে পরাজিত হন। পরে ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে পৌরসভা মেয়র নির্বাচিত হন।

তবে আওয়ামী লীগের সঙ্গে থেকেই বাকি জীবন কাটিয়ে দিতে চান বলেও জানান এ মুক্তিযোদ্ধা।

মেয়র হিসেবে চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারি শপথ নিয়েছেন গাজী কামরুল হুদা সেলিম। ৩১ জানুয়ারি তিনি দায়িত্ব নেন।

বাংলাদেশ সময়: ০৮১৫ ঘণ্টা, মার্চ ০১, ২০১৬
এসআর/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।