ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইসলাম

বরিশালে ‘কুরআনের নূর’ অডিশনে ইয়েস কার্ড পেল ১০ হাফেজ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৯, ২০২৩
বরিশালে ‘কুরআনের নূর’ অডিশনে ইয়েস কার্ড পেল ১০ হাফেজ বরিশালে ‘কুরআনের নূর’ অডিশনে ইয়েসকার্ড পেল ১০ হাফেজ

বরিশাল: আন্তর্জাতিক হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতা ‘কুরআনের নূর পাওয়ার্ড বাই বসুন্ধরা গ্রুপ’- এর বরিশাল বিভাগের অডিশনে ইয়েস কার্ড পেয়েছে ১০ হাফেজ।

এরআগে বাছাইয়ের শুরুতে ৫০ জনকে ইয়োলো কার্ড দেওয়া হয়।

সেখান থেকে বাছাই করে ১০ জনকে ইয়েস কার্ড দেন বিচারকরা। তারা এবার ঢাকায় জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় অংশ নেবে।

দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের পৃষ্ঠপোষকতায় বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ মুসল্লি কমিটির আয়োজনে ‘কুরআনের নূর’-এর বরিশাল বিভাগের এই অডিশন নগ‌রের লুৎফুর রহমান সড়‌কের লুৎফুর রহমান ক্যাডেট মাদরাসা প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার (৯ ডিসেম্বর) দিনভর বিভাগের ৬ জেলার বিভিন্ন এলাকার অনূর্ধ্ব-১৬ বছর বয়সী হাফেজরা এ অডিশনে অংশ নেয়।

বরিশাল বিভাগের অডিশনের সমন্বয়ক কারি ফয়‌জুল্লাহ হুসাইন বাংলানিউজকে বলেন, ‘কুরআনের নূর’-এর বরিশাল বিভাগের অডিশনে ৫২২ জন হাফেজ অংশ নেয়। তার মধ্য থেকে প্রথম পর্বের অডিশন শেষে ৫০ জনকে ইয়োলো কার্ড দেওয়া হয়, আর এই ৫০ জনের মধ্যে থেকে ১০ জন ইয়েস কার্ড পেয়েছে।

তিনি বলেন, আল্লাহ্’র রহমতে এবারে বিপুল সাড়া পাওয়া গেছে, যার প্রমাণ বরিশালে বিপুল পরিমাণে হাফেজদের অংশগ্রহণ। বরিশালের হাফেজদের এই অংশ এখন পর্যন্ত বিভাগীয় অডিশনগুলোর রেকর্ড ছাড়িয়েছে।

বিভাগের পটুয়াখালী জেলার উপকূলীয় উপজেলা কলাপারার তা‌রবিয়াতুল উম্মা মডেল মাদরাসার ৯ বছ‌র বয়সি হাফেজ হা‌বিবুল্লাহ বলেন, ওস্তাদদের কাছ থেকে প্রতিযোগীরা কথা জানতে পেরে অংশগ্রহণ করার ইচ্ছা প্রকাশ করি। প‌রে মাদরাসার এক শিক্ষকের সাসঙ্গে বরিশালে এসেছি। এত বড় প্রতি‌যোগিতার আ‌য়োজন আগে দে‌খি‌নি।

মাত্র ৯ মাসে হাফেজ হওয়া ৯ বছর বয়সী বাউফলের হাফেজ মো. মাসুম বলেন, এ ধরনের প্রতিযোগিতায় আগে কখনো অংশ নিইনি। অডিশনে এসে খুব ভালো লাগছে। অনেক সুন্দর পরিবেশে প্রতিযোগীরা অডিশনে অংশ নিয়েছে।

এদিকে মাদ্রাসাতুল মা‌দিনাতিল মোনাওয়ারা কলাপাড়া মাদরাসার শিক্ষক আমিরুল ইসলাম ব‌লেন, সরকারসহ বি‌ভিন্ন কার‌ণে মাদরাসার শিক্ষা ব্যবস্থা গত ৫ বছ‌রে বেশ উন্নত হ‌য়ে‌ছে। আর বসুন্ধরা গ্রু‌পের উদ্যোগে হা‌ফেজ‌দের নি‌য়ে এ প্রতি‌যোগিতা মাদরাসার শিক্ষার্থী‌দের মা‌ঝে বেশ আগ্রহ সৃষ্টি ক‌রে‌ছে। যার ধারাবা‌হিকতা ধ‌রে রাখলে হাফেজদের যেমন আগ্রহ বাড়‌বে, তেম‌নি তা‌দের শিক্ষার সা‌র্বিক মানও উন্নত হ‌বে।

পিরোজপুরের দুমজু‌ড়ি সা‌লে‌হিয়া হিফজুল কুরআন মাদরাসার শিক্ষক ফুয়াদ হাসান ব‌লেন, বসুন্ধরার এ আ‌য়োজন মাদরাসা শিক্ষা‌কে প্রতি‌যোগিতামূলক কর‌ছে। এতে ক‌রে হা‌ফেজ‌দের মান আরও ভা‌লো হ‌বে, শিক্ষকরাও ভা‌লো করার চেষ্টায় থাক‌বেন। এছাড়া এমন আয়োজনে শুধু শিক্ষার্থী‌রা নয়, অভিভাবকরাও আগ্রহী হবেন সন্তানদের হাফেজ বানানোর জন‌্য। কুরআন শিক্ষা গ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের জন্য এটি আলাদা এক‌টি মূল‌্যায়ন, যা সম্মান বয়ে আন‌বে।

অডিশন দিতে আসা কোমলমতি হাফেজরা 

এ ধরনের আয়োজন করার জন্য বসুন্ধরা গ্রুপকে ধন্যবাদ জানান তিনি।

বরিশালের অডিশনের চূড়ান্ত পর্বে বিচারক হিসেবে ছিলেন মেয়র মোহাম্মদ হানিফ জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব কারি ইমরান নুরুদ্দীন, মাওলানা সাইফুল ইসলাম, মাওলানা সাইফুর রহমান, হাফেজ মাওলানা রুহুল আমিন ইয়ামিন, মাওলানা ইমরান বিন নুরুদ্দিন, হাফেজ কারি মো. কামাল উদ্দিন, ,হাফেজ মাওলানা মো. মাহফুজুর রহমান, হাফেজ মাওলানা মুফতি মুজিবুর রহমান ফরাজীসহ বরেণ্য হাফেজরা

এসময় উপস্থিত ছিলেন বায়তুল মোকাররম মসজিদ মুসল্লি কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. সেলিম।

মুসল্লি কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. সেলিম বাংলানিউজকে বলেন, আলহামদুলিল্লাহ খুবই চমৎকার ও উৎসবমুখর পরিবেশে বরিশালের অডিশন পর্ব শেষ হয়েছে।  এখানে অনেক হাফেজের উপস্থিতিতে অডিশন হয়েছে।

মেয়র মোহাম্মদ হানিফ জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব কারি ইমরান নুরুদ্দীন বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি যে আন্তরিকতার পরিচয় দিয়েছেন এবং যে সুন্দরভাবে হাফেজ সাহেবদের খেদমত করেছেন, এর প্রভাব গোটা দেশে পড়েছে। হাফেজ সাহেবদের উপস্থিতি সেটাই প্রমাণ করে। কোরআনের এ খেদমতের ধারাবাহিকতায় বজায় থাকুক।

আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, এবারের ‘কুরআনের নূর’ প্রতিযোগিতায় জাতীয় পর্যায়ের প্রথম বিজয়ী হাফেজ পাবে ১০ লাখ টাকা ও সম্মাননা। দ্বিতীয় বিজয়ী পাবে সাত লাখ টাকা ও সম্মাননা। তৃতীয় পুরস্কার পাঁচ লাখ টাকা ও সম্মাননা। চতুর্থ ও পঞ্চম পুরস্কার দুই লাখ টাকা করে এবং সম্মাননা। এছাড়া ষষ্ঠ থেকে অষ্টম স্থান অর্জনকারী বাকি তিনজন পাবে এক লাখ টাকা করে আর্থিক পুরস্কার ও সম্মাননা। এবারও জাতীয় পর্যায়ের আট বিজয়ী, তাদের পরিবার ও ওস্তাদকে ওমরাহ পালনের জন্য সৌদি আরব পাঠাবে বসুন্ধরা গ্রুপ।

অন্যদিকে প্রতিযোগিতার আন্তর্জাতিক পর্যায়ের প্রথম বিজয়ী পাবে ১৫ লাখ টাকা ও সম্মাননা। দ্বিতীয় বিজয়ী পাবে ১০ লাখ টাকা ও সম্মাননা এবং তৃতীয় বিজয়ী পাবে পাঁচ লাখ টাকা ও সম্মাননা।

এই প্রতিযোগিতায় মিডিয়া পার্টনার দৈনিক কালের কণ্ঠ, বাংলাদেশ প্রতিদিন, ডেইলি সান, বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম, ক্যাপিটাল এফএম। আর কুরআনের নূরের চূড়ান্ত পর্ব সম্প্রচারিত হবে আগামী রমজান মাসে নিউজটোয়েন্টিফোর টেলিভিশনে।

বাংলাদেশ সময়: ২০০৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৯, ২০২৩
এমএস/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।