ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

রাগের বশবর্তী হয়ে কারো ক্ষতি করে ফেলা বীরত্ব নয়

ইসলাম ডেস্ক  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১৪ ঘণ্টা, জুলাই ২৮, ২০২৪
রাগের বশবর্তী হয়ে কারো ক্ষতি করে ফেলা বীরত্ব নয়

অনেকের অল্পতে রেগে যাওয়ার প্রবণতা আছে, যাকে বলে খিটখিটে মেজাজ। মেজাজের ওপর কম নিয়ন্ত্রণ থাকলে এমনটি হয়।

এটা অহেতুক প্রতিক্রিয়া হিসেবে চিহ্নিত। কোনো অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতির শিকার হলে রাগ এসে যাওয়া স্বাভাবিক ব্যাপার। তবে তা অনিয়ন্ত্রিত হওয়া মানবীয় ত্রুটি। ইসলাম মানুষকেই এই ত্রুটি থেকে মুক্ত হওয়ার উৎসাহ দিয়েছে। যারা কঠিন রাগের সময় নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, মহান আল্লাহ তাদের ভালোবাসেন।  

পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, রাগ দমনকারীরা ও মানুষকে ক্ষমাকারীরা। আল্লাহ অনুগ্রহকারীকে ভালোবাসেন। ’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ১৩৪)

রাগের বশবর্তী হয়ে কারো ক্ষতি করে ফেলা বীরত্ব নয়; বরং বীরত্ব হলো, কঠিন রাগের সময় নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারা। রাসুল (সা.) বলেন, ‘সে ব্যক্তি শক্তিশালী নয়, যে ব্যক্তি কুস্তি লড়ে অন্যকে ধরাশায়ী করে, বরং প্রকৃতপক্ষে সে ব্যক্তিই শক্তিশালী, যে রাগের সময় নিজেকে সংবরণ করতে পারে। ’ (বুখারি, হাদিস : ৬৮০৯)

এ কারণে রাসুল (সা.) তাঁর প্রিয় উম্মতদের রাগ করতে নিষেধ করেছেন।

রাগ দমনের কিছু পদ্ধতিও ইসলামী শরিয়তে বর্ণিত হয়েছে। যেমন— রাগ মূলত দুটি কারণে হতে পারে, এক. শারীরিক অসুস্থতা, অনিদ্রা, রক্তচাপ, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন শারীরিক অসুস্থতার কারণে হতে পারে। এর থেকে বাঁচতে পুষ্টিকর খাবার ও পর্যাপ্ত ঘুমের বিকল্প নেই। বিশেষ করে অহেতুক রাতজাগা বন্ধ করা এর কার্যকরি ওষুধ। প্রিয় নবী (সা.) অহেতুক রাতজাগা পছন্দ করতেন না। বারজাহ (রা.) বলেন, ‘রাসুল (সা.) এশার আগে ঘুমানো এবং এশার পর (না ঘুমিয়ে) গল্পগুজব করা অপছন্দ করতেন। ’ (বুখারি, হাদিস : ৫৬৮)

কখনো কখনো মানসিক কারণেও মানুষের মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়। এ পরিস্থিতি থেকে বাঁচার জন্য নিম্নের আমলগুলো করা যেতে পারে।

আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা: দুই ব্যক্তি রাসুল (সা.)-এর কাছে বসে পরস্পর গালাগাল করছিল। তাদের একজনের চোখ লাল হয়ে উঠল ও গলার শিরা ফুলে গেল। তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আমি একটি বাক্য জানি, যদি সে তা পড়ে তবে তার এ অবস্থা কেটে যাবে। সে বাক্যটি হলো, আমি আল্লাহর কাছে অভিশপ্ত শয়তান থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। ’ (মুসলিম, হাদিস : ৬৮১২)

চুপ থাকা: অর্থাৎ প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার চেষ্টা না করে চুপ হয়ে যাওয়া। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমরা শিক্ষা দাও এবং সহজ করো। কঠিন কোরো না। যখন তুমি রাগান্বিত হও তখন চুপ থাকো; যখন তুমি রাগান্বিত হও তখন চুপ থাকো; যখন তুমি রাগান্বিত হও তখন চুপ থাকো। ’ (মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ৪৭৮৬)

শারীরিক অবস্থার পরিবর্তন: রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যখন তোমাদের কারো রাগ হয় তখন সে যদি দাঁড়ানো থাকে, তবে যেন বসে পড়ে। যদি তাতে রাগ চলে যায় ভালো। আর যদি না যায়, তবে শুয়ে পড়বে। ’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৭৮৪)

অজু করা: রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘নিশ্চয়ই রাগ শয়তানের পক্ষ থেকে। আর শয়তান আগুনের তৈরি। নিশ্চয়ই পানির দ্বারা আগুন নির্বাপিত হয়। সুতরাং তোমাদের কেউ যখন রাগান্বিত হয় সে যেন অজু করে। ’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৭৮৬)

বাংলাদেশ সময়: ১৫১৩ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০২৪
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।