মুমিন বান্দার প্রতি যাবতীয় গুনাহের কাজ থেকে তওবা করা ফরজ, চাই সে পুরুষ হোক কিংবা মহিলা। আর এ তওবার জন্য পরিকল্পনা না করে বরং সঙ্গে সঙ্গে তওবা করা অত্যাবশ্যক।
তওবা পরিপূর্ণ হওয়ার জন্য শর্ত হলো- অতীতের কৃত গুনাহগুলোর জন্য একনিষ্ঠভাবে আল্লাহতায়ালার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা এবং বান্দার হক নষ্ট করে থাকলে তার ক্ষতিপূরণ প্রদান করা। এ বিষয়ে আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, ‘হে মুমিনগণ! তোমরা সকলেই আল্লাহতায়ালার নিকট তওবা কর। নিশ্চয় তোমরা তাতে সফলকাম হবে। ’
এ প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালা আরো বলেন, ‘হে মুমিন বান্দাগণ! তোমরা আল্লাহতায়ালার নিকট তওবা কর বিশুদ্ধ ও খাঁটিভাবে। শিগগিরই মহান আল্লাহ তোমাদের জীবনের যাবতীয় গুনাহরাজি ক্ষমা করে এমন বেহেশতে প্রবিষ্ট করাবেন, যার পাশ দিয়ে নদীগুলো প্রবাহিত হচ্ছে। ’
তওবা প্রসঙ্গে হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আল্লাহর কসম! আমি দৈনিক ৭০ বারেরও অধিক আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করি এবং তওবা করি। ’ -বুখারি শরিফ
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘মুমিন বান্দা যখন কোনো গুনাহ করে ফেলে তখন তার অন্তরে একটি কালো দাগ পড়ে যায়। অতঃপর সে যদি তওবা করে ও ক্ষমা চায়, তাহলে তার অন্তর পরিষ্কার হয়ে যায়। আর সে যদি তওবা না করে গুনাহ বেশি করতে থাকে, তাহলে কালো দাগ বৃদ্ধি পেতে থাকে। ’
হজরত আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘শয়তান বলল, হে প্রভু! তোমার ইজ্জতের কসম। আমি তোমার বান্দাদের গোমরাহ করতে থাকব যে পর্যন্ত তাদের প্রাণ তাদের দেহে আছে। তখন মহান আল্লাহ বললেন, আমার ইজ্জত, মহত্ত্ব ও উচ্চ মযার্দার কসম, আমি তাদের ক্ষমা করতে থাকব, যাতে তারা আমার নিকট মাফ চাইতে থাকবে। ’ –আহমদ
হজরত আবদুল্লাহ বিন মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘গুনাহ হতে তওবাকারী ওই ব্যক্তির ন্যায় যার কোনো গুনাহ নাই। ’ -ইবনে মাজা
রাসূলুল্লাহ (সা.) আরো বলেন, ‘কোনো মুমিন বান্দার চক্ষুদ্বয় হতে আল্লাহর ভয়ে অশ্রুজল বের হবে যদিও তার পরিমাণ মাছির মাথার সমানও হয়, অতঃপর ওই পানির উষ্ণতা সে তার চেহারায় অনুভব করে- আল্লাহতায়ালা তার ওপর দোজখের আগুন হারাম করে দেন। ’
তওবাকারী বান্দাকে আল্লাহতায়ালা অত্যন্ত ভালোবাসেন। আল্লাহতায়ালা আমাদের তওবাকারী, ক্ষমা প্রার্থনাকারী ও আল্লাহমুখী বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত করে নিন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৭ ঘন্টা, মার্চ ০১, ২০১৫