হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.), সাহাবায়ে কেরাম ও ইমামদের জীবন-যাপন পদ্ধতি মুসলিম জাতির জন্য এক বিশাল শিক্ষণীয় অধ্যায়। যা ইতিহাসে সবিস্তারে উল্লেখ আছে।
ঘটনা পরম্পরায় বর্ণনা করা হয়েছে যে, হাবশায় মুসলমানদের হিজরতকালে নারীরা সঙ্গে ছিল। পর্যায়ক্রমে মুসলমানরা মদিনায় হিজরত করে নারীদের সঙ্গে নিয়েই। এমনকি হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গে বাইয়াত বা আনুগত্যের শপথ ও ওয়াজ-মাহফিলে নারীরা ব্যাপকভাবে অংশগ্রহণ করত। এভাবেই ইসলামের ইতিহাসে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর শিক্ষা ক্লাসে নারীদের অংশগ্রহণ, প্রশ্নোত্তরের কথাও বলা হয়েছে। এমনকি কাফেরদের বিরুদ্ধে পরিচালিত বিভিন্ন যুদ্ধেও তৎকালীন নারীরা অংশগ্রহণ করত। ইতিহাসেও এটাও উল্লেখ আছে যে, মদিনায় নারী সাহাবীদের অনেকেই বাজারে ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করতেন।
হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) যখন কোনো সফরে যেতেন তখন লটারির মাধ্যমে নির্বাচিত একজন স্ত্রীকে সঙ্গে করে নিয়ে যেতেন। এভাবেই তাদের জীবনে নারীদের উপস্থিতির লক্ষ্য করা যায়।
হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর প্রথম স্ত্রী হজরত খাদিজা (রা.) নবুওয়ত লাভের আগে হেরা গুহায় প্রায়ই খাবার নিয়ে যেতেন নবী করিম (সা.)-এর জন্য। হজরত খাদিজা (রা.)-এর ইন্তিকালের পর রাসূল (সা.) এত বেশি শোকাচ্ছন্ন হয়ে পড়েছিলেন যে, ওই বছরকে তিনি ‘শোক বর্ষ’ হিসেবে অভিহিত করেছিলেন।
ইসলামের ইতিহাসে এমন অনেক ঘটনা থাকার পরও কিন্তু বহু হাদিসে প্রয়োজন ছাড়া নারীদের ঘর থেকে বের হয়ে রাস্তা বা হাট-বাজারে ঘুরে বেড়াতে নিষেধ করা হয়েছে। কারণ শয়তানের প্ররোচনায় মানুষ নারীদের বিভিন্নভাবে উত্যক্ত করতে পারে, নারী সম্মানহানি হতে পারে ভেবে এ নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। এই নির্দেশের অর্থ এই নয় যে, নারীরা ঘর থেকে বের হতেই পারবে না।
বস্তুত জরুরি কাজে নারীর ঘর থেকে বের হওয়াতে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। তবে ঘর থেকে বের হওয়ার সময় শালীন পোশাক পরে এবং শরিয়তের নির্দেশ মেনে বের হতে বলা হয়েছে ইসলামে। ইসলাম এ শর্ত বজায় রেখে সমাজের বিভিন্ন কাজে অংশগ্রহণেরও অনুমতি দিয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০৬ ঘন্টা, মার্চ ০৮, ২০১৫