ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

একটি খোলা মসজিদ কাহিনি

ইসলাম ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৬ ঘণ্টা, মার্চ ৯, ২০১৫
একটি খোলা মসজিদ কাহিনি

নানাবিধ কারণে বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর মসজিদগুলোর বেশির ভাগই সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্য সময় নির্দিষ্ট করা থাকে পরিদর্শনের জন্য। আর অনেক অমুসলিম দর্শনার্থী সেসব মসজিদ দেখতে গিয়ে নানা অস্বস্তিতে পড়েন, পোহাতে হয় কিছু বিড়ম্বনাও।



ঢাকার মসজিদগুলোও এখন শুধুমাত্র নামাজের সময়ে খোলা হয়, বাকী সময় বন্ধ রাখা হয়। কিন্তু আবুধাবির ‘শেখ জায়েদ মসজিদ’ সব মানুষের জন্য উন্মুক্ত।

২০০৭ সালে দ্বার খোলা এই মসজিদে যেতে পারেন যেকোনো ধর্ম-বর্ণ-গোত্রের সব মানুষই। সম্প্রতি ইসলাম অনলাইন এক প্রতিবেদনে এই মসজিদের অনন্য স্থাপত্যশৈলী এবং সেখানে সব ধর্মের, সব মানুষের মিলনমেলার কথা জানিয়েছে।

চকচকে শ্বেত-মর্মরে মোড়ানো রূপকথার মতো সুন্দর এই স্থাপত্যের স্থপতি এবং স্থাপত্য উপকরণের বৈচিত্র্যের মধ্যেও যেন এই মসজিদের সবাইকে ধারণ করার বৈশিষ্ট্য প্রতিফলিত। মসজিদটিতে আছে ছোট-বড় সাত আকারের ৮২টি গম্বুজ। যা নির্মাণ করা হয়েছে শ্বেত মার্বেল দিয়ে। মসজিদের বৃহত্তম গম্বুজের উচ্চতা ২৭৯ ফুট।

ব্রিটিশ, ইতালীয় ও আমিরাতের স্থপতিদের মিলিত প্রচেষ্টায় নির্মিত হয়েছে এ মসজিদ। এখানে ব্যবহার করা হয়েছে তুরস্কের টাইলস, নিউজিল্যান্ডের উল ও জার্মানির স্ফটিক।

শেখ জায়েদ মসজিদের সবার জন্য ‘দ্বার খোলা রাখার নীতি’ মনে করিয়ে দেয় ইসলামের স্বর্ণযুগের কথা, যখন মসজিদগুলোই ছিল মানুষের মিলনমেলার কেন্দ্র। প্রতিবছর ১০ লাখেরও বেশি দর্শনার্থী আসেন এই মসজিদ দেখতে। এই মসজিদের বিশেষত্বই এটা।

মসজিদ নির্মাণ প্রসঙ্গে বলা হয়, শেখ জায়েদের ভাবনায় কেবল মুসলিমদের জন্য একটা মসজিদ ছিল না, বরং সাংস্কৃতিক বিনিময়ের একটা পাটাতন গড়ে তোলার চিন্তা ছিল।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রধান রূপকার ও দীর্ঘ সময় ধরে দেশটির প্রয়াত রাষ্ট্রপ্রধান শেখ জায়েদ বিন সুলতান আল নাহিয়ানের নামেই মসজিদটির নাম রাখা হয়েছে শেখ জায়েদ গ্র্যান্ড মসজিদ।

শেখ জায়েদ গ্র্যান্ড মসজিদ আরব-আমিরাতের সবচেয়ে বড় মসজিদ। এমনকি এ মসজিদ পৃথিবীর অষ্টম বৃহত্তম ও সুন্দরতম। ৩৮ টি প্রখ্যাত ঠিকাদারি কোম্পানির ৩০০০ হাজার দক্ষ কর্মী নির্মাণ করেন এই মসজিদ। এই মসজিদ নির্মাণে খরচ হয়েছে ৫৪৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। সাড়া বিশ্বের পর্যটকদের কাছেও এই মসজিদ অন্যতম জনপ্রিয় একটি জায়গা।

স্ফটিক সচ্ছ লক্ষ লক্ষ পাথরের তৈরি পৃথিবীর বৃহত্তম ঝাড়বাতিটি এই মসজিদে লাগানো হয়েছে। জার্মানির তৈরি ঝাড়বাতিটির ব্যাস ১০ মিটার (৩৩ ফুট) এবং উচ্চতা ১৫ মিটার (৪৯ ফুট)। মজার বিষয় হলো বিশ্বের দ্বিতীয় ও তৃতীয় বৃহত্তম ঝাড়বাতিও কিন্তু এই মসজদেরই শ্রী বাড়াচ্ছে।

মসজিদটির আঙিনা ১৭ হাজার বর্গমিটার মার্বেল মোজাইকের। এটি পৃথিবীর সর্ববৃহৎ আয়তনের মার্বেল মোজাইক। জুমা ও দুই ঈদে সর্বমোট দেড় থেকে দুই লাখ মুসল্লি নামাজ আদায় করেন এখানে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৭ ঘন্টা, মার্চ ০৯, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।