লোভ মানুষের অধপতনের অন্যতম কারণ হিসেবে পরিগণিত হয়। লোভ একটি নৈতিক ত্রুটি।
উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, একজন ব্যক্তি একটি ভাড়া বাড়িতে বসবাস করে। যদি সে লোভী হয় এবং আল্লাহর শোকর গোজার না হয়- তখন সবসময় তার এই চিন্তা থাকে যে, আরো উন্নত একটি বাড়ি ভাড়া নিতে হবে। যখন পূর্বের চেয়ে আরো উন্নত বাড়ি সে ভাড়া নিতে সক্ষম হয়, তখন সে আবার নতুন করে অন্যের সম্পত্তির প্রতি দৃষ্টি দেয়। মনে মনে ভাবে, এবার যদি অমুকের মতো একটি সুন্দর বাড়ি বানাতে পারতাম। এভাবেই চলতে থাকে তার লোভের চক্র।
পক্ষান্তরে আল্লাহর মুমিন বান্দারা যে সব নেয়ামত তাদেরকে দান করা হয়েছে সেগুলোর জন্য কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে ও তাতেই সন্তুষ্ট থাকে। আর যদি পরবর্তীতে কিছু তার সম্পদ বৃদ্ধি পায় তার জন্যও সে আল্লাহর দরবারে পূর্বাপেক্ষা অধিকে কৃতজ্ঞতা আদায় করে। সে ভুলেও অন্যের সম্পদের প্রতি দৃষ্টি দেয় না। মুমিনদের এ দলটি সর্বদাই সুখে ও শান্তিতে বসবাস করে। কেননা তারা আল্লাহতাযালার নৈকট্য বৈ অন্য কিছু চায় না।
লোভের নিন্দা করা হয়েছে পবিত্র কোরআন ও হাদিসে। লোভের নিন্দা করেছেন জ্ঞানী ও বুজুর্গরাও। বিখ্যাক একটি প্রবাদ অাছে, ‘লোভে পাপ, পাপে মৃত্যু। ’
ইমাম বোখারি (রহ.) এ বিষয়ে বলেন, ‘লোভী মানুষ দু’টি উৎকৃষ্ট গুণ হতে বঞ্চিত, ফলশ্রুতিতে সে দু’টি দোষের অধিকারী। এক. সে জীবনে পরিতৃপ্ত হওয়া থেকে বঞ্চিত, ফলে সে জীবন থেকে প্রশান্তিকে হাতছাড়া করেছে, দুই. লোভী যেহেতু সন্তুষ্টি হতে বঞ্চিত; ফলে সে অপরের বিশ্বাসকে খুইয়েছে। ’
ইমাম জাহাবি (রহ.) বলেছেন, ‘সেই ব্যক্তি সর্বাপেক্ষা ধনি যে লোভের আগুনে বন্দি নয়। ’
হজরত হাসান বসরি (রহ.) বলতেন, হে আদম সন্তানেরা! যদি তুমি দুনিয়ার বস্তু পরিমাণ মতো চাও তাহলে সেটা তোমার জন্য যথেষ্ট। কিন্তু যদি পরিমাণের চেয়ে বেশি চাও, সমস্ত দুনিয়াও তোমার জন্য যথেষ্ঠ নয়। ’
লোভের উত্পত্তি কোথা থেকে এর সংজ্ঞা স্বয়ং মহানবী (সা.)-এর হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। আল্লাহর রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘জেনে রাখ! ভয়, কৃপণতা ও লোভ একই প্রকারের। আর তাদের মূলে হলো খারাপ ধারণা পোষণ করা। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৮ ঘন্টা, মার্চ ১০, ২০১৫