অহংকার একটি খারাপ গুণ। এটা শয়তানের বৈশিষ্ট্য, আল্লাহতায়ালা যাদের অন্তর আলোহীন করে দিয়েছেন; তাদের অন্তরে অহংকার জায়গা করে নেয়।
অহংকার প্রসঙ্গে হাদিসে আছে, হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যার অন্তরে বিন্দু পরিমাণ অহংকার আছে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না। একলোক বলল, যে কোনো লোক পছন্দ করে তার জামাটা ভালো হোক, তার জুতাটা ভালো হোক? তিনি বললেন, নিশ্চয় আল্লাহ সুন্দর; তিনি সৌন্দর্য পছন্দ করেন। অহংকার হচ্ছে, সত্যকে উপেক্ষা করা এবং মানুষকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করা। ’ -সহিহ মুসলিম
সত্যকে উপেক্ষার অর্থ, সত্য জেনেও সেটাকে প্রত্যাখ্যান করা। আর মানুষকে তুচ্ছ করার অর্থ, মানুষকে ছোট মনে করা, মানুষকে হেয় প্রতিপন্ন করা। অহংকারী ব্যক্তিকে আল্লাহ ধ্বংস করে দেন, তার প্রভাব-প্রতাপ নস্যাৎ করে দেন ও তার জীবনকে সংকুচিত করে দেন। আলেমরা বলেন, যে ব্যক্তি অহংকার করতে চায় ও বড়ত্ব দেখাতে চায় আল্লাহ তাকে নিচে ছুড়ে ফেলে দেন ও বেইজ্জত করেন।
যে ব্যক্তি মানুষের ওপর অহংকার করে কিয়ামতের দিন তাকে মানুষের পায়ের নিচে মাড়ানো হবে। এভাবে আল্লাহতায়ালা অহংকারের কারণে তাকে অপমানিত করবেন।
অহংকারের নানান রূপ রয়েছে—
১. সত্যকে গ্রহণ না করা; অন্যায়ভাবে বিতর্ক করা।
২. নিজের সৌন্দর্য্য, দামী পোশাক ও দামী খাবার ইত্যাদি দ্বারা অভিভূত হয়ে পড়া এবং মানুষের ওপর দাম্ভিকতা ও অহংকার প্রকাশ করা।
৩. আত্মীয়স্বজন ও বংশধরদের নিয়ে গৌরবের মাধ্যমেও অহংকার হতে পারে। অহংকার হকে পারে, নিজের সম্পদ, মেধা ইত্যাদিরও।
অহংকার প্রতিরোধ করার উপায়—
নিজেকে অন্য দশজন মানুষের মতো স্বাভাবিক মানুষ মনে করা। অন্যসব লোককে নিজের সমতুল্য মনে করা।
অহংকারীর জানা উচিত যে, সে যতই বড় হোক না কেন- পাহাড় সমান তো আর হতে পারবে না; জমিন ছিদ্র করে তো বেরিয়ে যেতে পারবে না! যেমনটি আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে কারিমে ইরশাদ করেছেন, ‘অহংকারবশে তুমি মানুষকে অবজ্ঞা করো না এবং পৃথিবীতে গর্বভরে পদচারণ করো না। নিশ্চয় আল্লাহ কোনো দাম্ভিক অহংকারীকে পছন্দ করেন না। পদচারণায় মধ্যবর্তিতা অবলম্বন করো এবং কণ্ঠস্বর নীচু করো। নিঃসন্দেহে গাধার স্বরই সর্বাপেক্ষা অপ্রীতিকর। ’-সূরা লোকমান : ১৭-১৮
অহংকার, প্রত্যাখান, দাম্ভিকতা এবং কোনো বিষয়ে কোনো মানুষের তার সীমা অতিক্রম করাই অহংকার, অহংকারের সঙ্গে অবাধ্যতার একটি বিশাল সংযোগ রয়েছে।
অহংকার প্রতিরোধ করার আরেকটি উপায় হলো—
সব সময় এ কথা মনে রাখা যে, অহংকারী ব্যক্তি মানুষের নিকট অপছন্দীয় এমনকি আল্লাহতায়ালার নিকটও সে অপছন্দনীয়। সুতরাং আমি তো মানুষের কাছে ঘৃণার পাত্র! এই ঘৃণা নিয়ে আমি কীভাবে চলব?
মনে রাখবেন, সমাজের লোকেরা সব সময় বিনয়ী, নম্র-ভদ্র, সহজ-সরল মানুষকে ভালোবাসে। পক্ষান্তরে কঠিন ও রুঢ় স্বভাবের মানুষকে ঘৃণা করে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৫ ঘন্টা, এপ্রিল ১১, ২০১৫
এমএ