বাংলাদেশের বিভিন্নমানের কাগজের নোটে মসজিদের ছবি থাকে। তন্মধ্যে পাঁচ টাকার নোটে মুদ্রিত মসজিদের ছবিটি নওগাঁর ঐতিহাসিক কুসুম্বা মসজিদের।
বাংলাদেশের প্রাচীন ঐতিহ্যের নিদর্শনগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো- নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলায় অবস্থিত ৬ গম্বুজ বিশিষ্ট ঐতিহাসিক কুসুম্বা মসজিদ। দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে মসজিদটির গম্বুজগুলো হুমকির সম্মুখিন হয়ে পড়ায় যে কোনো মূহুর্তে ধ্বসে পড়ে বড় ধরণের দূর্ঘটনার আশংকা করছেন মসজিদের মুসল্লি ও আগত দর্শনার্থীরা।
১৫৫৮ সালে জনৈক সোলায়মান মসজিদটি নির্মাণ করেন। প্রায় ৪শ ৬০ বছরের প্রাচীন পাথরের নির্মিত মসজিদটি ৬ গম্বুজ বিশিষ্ট। সম্প্রতি ঘন ঘন ভূমিকম্প হওয়ায় মসজিদটি নিয়ে শংকিত হয়ে পড়েছেন এলাকাবাসী।
জানাগেছে, মসজিদটি শেষ বারের মতো ১৯৬৪ সালে সংস্কার করা হয়। এরপর দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ এই মসজিদটির আর কোনো সংস্কার কাজ করা হয়নি। ফলে মসজিদটির ৬টি বিশাল আকারের গম্বুজ আজ হুমকির সম্মুখিন। মসজিদের উত্তর-পূর্ব কোনের বুরুজটিতে বৃষ্টি হলে পানি প্রবেশ করে। দীর্ঘ সময় সেই পানি ভিতরে থাকায় বর্ষা মৌসুমে বুরুজটি শ্যাওলায় আচ্ছাদিত হয়ে যায়। এতে পাথরের রং অনেকটাই ফ্যাকাশে হয়ে গেছে।
মসজিদটির ভিতরের আরো বেহাল অবস্থা। বিশাল বিশাল গম্বুজের খিলানে ফাটলের সৃষ্টি হয়েছে। গম্বুজের গায়ে ফাটল দেখা দিয়েছে সৃষ্টি হয়েছে ছত্রাকের। ঝরে পড়ছে খিলান ও গম্বুজের ইট-সুরকি। মসজিদের প্রাচীন ৫টি গম্বুজ আজ হুমকির সম্মুখিন। যে কোনো মূহুর্তে ধ্বসে পড়তে পারে। ১৮৯৮ সালের এক ভয়াবহ ভূমিকম্পে মসজিদটির একটি গম্বুজ ধ্বসে পড়ে। ১৯৬৪ সালে সেই গম্বুজটি পুনরায় নির্মাণ করা হয়। বর্তমানে ওই গম্বুজটি এখনো অক্ষত রয়েছে। প্রায় ৫০ বছর আগে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর ‘কুসুম্বা মসজিদ’ অধিগ্রহণ করে। এতে স্থানীয়ভাবে মসজিদের সব ধরনের সংস্কার কাজ বন্ধ হয়ে যায়। অভিযোগ আছে বার বার মসজিদটি প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর পরিদর্শন করলেও সংস্কারে কোনো জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।
ফলে দিন যতই যাচ্ছে মসজিদের গম্বুজগুলো ততই হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। মসজিদে প্রতিদিন অনেক দর্শনার্থী আসে। অনেকেই সমজিদের ভিতরে নামাজ আদায় করেন। ক্ষতিগ্রস্থ গম্বুজ গুলো ধ্বসে পড়লে যে কোনো মূহুর্তে জান-মালসহ শেষ হয়ে যেতে পারে এই প্রাচীন ঐতিহাসিক নিদর্শনটি। নওগাঁর মান্দা উপজেলার প্রাচীন ঐতিহাসিক কুসুম্বা মসজিদটি এখনই জরুরীভাবে সংস্কার করার দাবী জানিয়েছেন মসজিদের নিয়মিত মুসল্লি, এলাকাবাসী ও দর্শনার্থীরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৭ ঘন্টা, এপ্রিল ১৯, ২০১৫
এমএ/