ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

গোনাহের পার্থিব ক্ষতিসমূহ

মাহফুজ আবেদ, অতিথি লেখক, ইসলাম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৫
গোনাহের পার্থিব ক্ষতিসমূহ

ইসলামি শরিয়তের পরিভাষায় আল্লাহ ও তার রাসূল (সা.) যে সব কাজ করতে নিষেধ করেছেন এবং সে সব কাজের জন্য শাস্তির বিধান অথবা আল্লাহর অসন্তুষ্টি কিংবা রাগের কথা ঘোষণা রয়েছে, সেসবই গোনাহ বা পাপের কাজ।

গোনাহ দু’ভাগে বিভক্ত- প্রথমত কবিরা গোনাহ; দ্বিতীয়ত সগিরা গোনাহ।

অভিজ্ঞ আলেমদের অভিমত হলো- গোনাহে জড়িয়ে পড়লে নিম্নলিখিত পার্থিব ক্ষতিসমূহ ভোগ করতে হয়-

১. গোনাহ করার দ্বারা দুনিয়ার মোহ বৃদ্ধি পায় এবং আখেরাতের প্রতি অনীহা সৃষ্টি হয়।

২. গোনাহ করার ফলে প্রতিটি গোনাহের জন্য অন্তরে একটি দাগ পড়ে। যা তওবা ছাড়া মুছে না। তওবা না করলে ধীরে ধীরে এ দাগ বাড়তে থাকে। অবস্থা এমন হয় যে, তখন ন্যায় উপলব্ধিকরণের অনুভূতি পর্যন্ত লোপ পেয়ে যায়।

৩. গোনাহ করার দ্বারা আল্লাহতায়ালার অভিশাপ নেমে আসে।

৪. গোনাহ করার ফলে রুজি-রোজগারের বরকত কমে যায়।

৫. গোনাহের দ্বারা অনেক সময় নেক আমলও আল্লাহতায়ালা কবুল করেন না, তা বৃথা হয়ে যায়।

৬. গোনাহ করার দ্বারা অন্তর কঠিন হয়ে যায় এবং ঈমানের পূর্ণতা হ্রাস পায়।

৭. নির্লজ্জ কাজ-কর্মে বিভিন্ন কঠিন রোগের আবির্ভাব ঘটে।

৮. জাকাত আদায় না করলে অনাবৃষ্টি দেখা দেয়।

৯. অবিচার ও ওয়াদা ভঙ্গ করলে শত্রুকে বিজয়ী করে দেওয়া হয়।

১০. মাপে কম দেওয়ার ফলে অনাবৃষ্টি, অভাব অনটন দেখা দেয় এবং বিচারক কর্তৃক জুলুমের শিকার হতে হয়।

১১. খেয়ানত করার দ্বারা শত্রুর আতঙ্ক মানুষকে ভীত-সন্ত্রস্ত করে রাখে।

১২. দুনিয়ার প্রতি প্রবল আকর্ষণ ও মৃত্যুর ব্যাপারে উদাসীনতার দ্বারা শত্রুর মন থেকে ভয়-ভীতি দূর করে দেওয়া হয়।

১৩. গোনাহের কারণে উপকারী জ্ঞান অর্জন থেকে বঞ্চিত হতে হয়।

১৪. গোনাহের কারণে মানুষের আয়ু কমে যায় এবং তওবা করার সুযোগ হয় না।

১৫. একজনের গোনাহের জন্য অন্যান্য লোক এমনকি জীবজন্তুকেও কষ্টে পতিত হতে হয়। এর ফলে গোনাহকারী তাদের অভিশাপ পায়।

১৬. হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর পক্ষ হতে গোনাহগারের প্রতি অভিশাপ দেওয়া হয়।

[প্রিয় পাঠক বাংলানিউজের আয়োজনে গ্রামীণ ফোন থেকে আপনি পেতে পারেন বিভিন্ন ধরনের ইসলামী তথ্যসেবা। আজ রয়েছে অভিশপ্ত শয়তান প্রসঙ্গে আলোচনা। আপনি চাইলেই তা শুনে নিতে পারেন। এ জন্য গ্রামীণ ফোনের যেকোনো নম্বর থেকে ডায়াল করতে হবে ৮৮৭৭ নম্বরটি। আপনি সাবস্ক্রাইব করে দিনভর শুনতে পারেন এই আয়োজন। সঙ্গে রয়েছে সবশেষ নিউজ আপডেট, রাশিফল, ট্রাফিক আপডেটও। আর সারাদিনের সব তথ্যের জন্য খরচ মাত্র ১ টাকা। এখনই সাবস্ক্রাইব করতে ডায়াল করুন ৮৮৭৭। ] 

১৭. গোনাহের ফলে ফেরেশতাদের নেক দোয়া হতে বঞ্চিত হতে হয়। অনেক সময় গোনাহের কারণে ফেরেশতা থেকে শুরু করে আসমান ও পৃথিবীর সমুদয় কিছু তাকে অভিশাপ দিতে থাকে।

১৮. গোনাহের কারণে মানুষের লজ্জা-শরম কমে যায়।

১৯. গোনাহের দ্বারা আল্লাহতায়ালার স্মরণ থেকে দিল গাফেল থাকে।

২০. গোনাহর দরুন আল্লাহতায়ালার নিয়ামত ক্রমশঃ হ্রাস পেতে থাকে।

২১. গোনাহের ফলে নানা রকম বালা-মসিবতে পড়ে অন্তরে পেরেশানি স্থায়ী হয়ে যায়।

২২. শয়তান গোনাহকারীর ওপর প্রভাব বিস্তার করে তাকে ঈমানহারা করে ফেলে।

২৩. গোনাহ করতে করতে গোনাহের প্রতি ঘৃণার ভাব থাকে না, বরং ভালো বোধ হয়। তখন তা ঈমানহারা হওয়ার কারণ হতে পারে। প্রত্যেক মুসলমানের জানা দরকার, কবরস্থানে যেতে হবে, সব ধন-সম্পত্তি রেখে যেতে হবে।

২৪. মৃত্যুকালে গোনাহগারের মুখ থেকে কালেমা বের হয় না।

২৫. গোনাহগারদের অনেক সময় তওবা নসিব হয় না। যদ্দরুন বিনা তওবায় কবরে যেতে হয়। যার পরিণাম হয় খুব ভয়াবহ।

উপরোক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে একথা বলা যায় যে, মানব সমাজে অশান্তির মূল কারণ হলো, ঢালাওভাবে গোনাহের সঙ্গে। বস্তুত দুনিয়া ও আখেরাতে শান্তি ও সফলতা পেতে হলে, অবশ্যই গোনাহ থেকে বেঁচে থাকতে হবে। যা প্রত্যেক মুসলমানের একান্ত দায়িত্ব।




বাংলাদেশ সময়: ২০৪৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৫
এমএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।