আমেরিকার মিশিগান রাজ্যের হামট্রামক শহরে গত ০২ নভেম্বর (সোমবার) অনুষ্ঠিত সিটি কাউন্সিল নির্বাচনে প্রথমবারের মতো ৩ জন মুসলিম কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন। এ জয়ের ফলে এই প্রথম যুক্তরাষ্ট্রের কোনো শহরে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ সিটি কাউন্সিল গঠিত হতে যাচ্ছে।
ঐতিহ্যগতভাবে পোলিশ অধ্যুষিত শহরটির ২২ হাজার ভোটার ৬ সদস্যের প্যানেলে ৩ জন মুসলিম সদস্যকে নির্বাচিত করেন। নবগঠিত সিটি কাউন্সিল প্যানেলের দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যই মুসলিম। কাউন্সিলের মেয়র কারেন মাজেউস্কি একজন পোলিশ।
স্থানীয় একজন কম্যুনিটি নেতা বিল মেয়ের বলেন, কাউন্সিলের মুসলিম সদস্যরা শহরের উন্নয়নের জন্য অনেক কাজ করেছেন। তারা এলাকার স্থিতি, নিরাপত্তা ও শান্তি রক্ষায় সাহায্য করেছেন। তাই মুসলিম কাউন্সিলরদের সবাই ভোট দিয়েছে। নির্বাচনে মুসলিম কাউন্সিলররা নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জন করেছেন। প্রত্যেক মুসলিম প্রার্থী ১ হাজারের বেশি ভোট পেয়েছেন।
হামট্রামক শহরটি মুসলিম ইস্যুতে অনেক আগে থেকেই আলোচিত। ২০০৪ সালে এই শহরের কর্তৃপক্ষ লাউড স্পিকারে আজান দেওয়ার অনুমতি দিয়ে গোটা আমেরিকার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল। সে সময় সিটি কাউন্সিলে মাত্র ১ জন মুসলিম সদস্য ছিলেন।
এবার মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ সিটি কাউন্সিল গঠন হওয়ার পর স্থানীয় মুসলিমরা আরও বেশি অনুকূল পরিবেশে ধর্মীয় অনুশাসন পালনের আশা প্রকাশ করছেন।
হামট্রামক শহরের এই সিটি কাউন্সিল ১৯১৪ সাল থেকে জার্মান ক্যাথলিকদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়ে আসছিল।
বর্তমানে হামট্রামকের মুসলমান প্রায় ৫০ শতাংশ। এ শহরে সাতটি মসজিদ রয়েছে।
নির্বাচিত তিন কাউন্সিলর হলেন, ইয়ামেনি বংশোদ্ভূত সাদ আল মানসূরি, বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আবু মুসা ও বসনিয় বংশোদ্ভুত আনাম মিয়া। এর মধ্যে আবু মুসা দ্বিতীয়বারের মতো কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন।
বাংলাদেশের সন্তান আবু মুসা হামট্রামকে তুমুল জনপ্রিয় নেতা। সৎ, নিষ্ঠাবান ও বন্ধুসুলভ আচরণের জন্য মুসাকে সব জাতিগোষ্ঠীর লোকেরাও ভোট দিয়েছেন।
নির্বাচনের পর গণমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আবু মুসা বলেন, ‘আমি একজন প্রকৃত মুসলিম। তবে আমার কাজের পরিধি শুধু মুসলমানদের মাঝে সীমাবদ্ধ নয়। আমাকে সব ধর্মের লোকেরাও ভোট দিয়েছেন। আমি হামট্রামকের প্রত্যেক নাগরিকের প্রতিনিধি। আমি পুরো শহরেরই সেবা আগেও করেছি ভবিষ্যতেও করব- ইনশাআল্লাহ। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৮০৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০১৫
এমএ