কয়েক বছরে সৌদি আরবে নারী ক্ষমতায়নে বেশকিছু পরিবর্তন হয়েছে। সেই পরিবর্তন আরেকটু দৃশ্যমান হলো- শুরা কাউন্সিলে নতুন করে ২৯ জন নারী সদস্য নিয়োগের ঘোষণায়।
গত ২ ডিসেম্বর সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান এক রাজকীয় ফরমানে সৌদি প্রশাসনে বেশকিছু পরিবর্তনের ঘোষণা দেন। এর অংশ হিসেবে সৌদি আরবের শুরা কাউন্সিল পুনর্গঠন করা হয়। এটি বাদশাহর উপদেষ্টা পরিষদ হিসেবে পরিচিত।
সৌদি আরবের শুরা কাউন্সিলের সদস্য সংখ্যা ১৫০ জন। এতদিন শুধু পুরুষরাই এ কাউন্সিলের সদস্য হতে পারতেন। এ কাউন্সিল কোনো আইন প্রণয়ন করতে পারে না, তারা সরকারকে আইন প্রণয়নের বিষয়ে নানা পরামর্শ দিয়ে থাকে।
সৌদি আরবের গ্রান্ড মুফতি শেখ আবদুল আজিজ আশ শায়খের নেতৃত্বাধীন সিনিয়র ইসলামি স্কলারদের নিয়ে গঠিত কাউন্সিল পুনর্গঠনে মুফতি (ইসলামি স্কলার) সদস্যদের শুরায় অন্তর্ভুক্ত করার নির্দেশও দিয়েছেন বাদশাহ।
এ ছাড়া শুরার মহাসচিব মোহাম্মদ আল আমরকে তার পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। নতুন কাউন্সিলে আবদুল্লাহ বিন মোহাম্মদ আশ শেখকে স্পিকার, মোহাম্মদ বিন আমিন আহমদ আল জাফরিকে ডেপুটি স্পিকার, ইয়াহিয়া বিন আবদুল্লাহ আল সামগানকে সহকারী স্পিকার করা হচ্ছে।
সেই সঙ্গে শুরা কাউন্সিলের ২৯ জন নারী সদস্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নিয়োগপ্রাপ্ত নারী সদস্যরা পূর্ণ সদস্য হওয়ার অধিকার ভোগ করবেন। তবে নিজ নিজ দায়িত্ব ও কর্তব্যের প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকতে হবে।
আল আরাবিয়ার খবরে বলা হয়, কাউন্সিলে নারীদের রাখা হলেও তারা পুরুষদের পাশাপাশি বসবেন না। কাউন্সিল ভবনে ঢুকতে নারীদের জন্য থাকবে আলাদা দরজা।
সৌদি আরবের শুরা কাউন্সিলে নারী সদস্য নিয়োগের নীতিগত সিদ্ধান্তটি নিয়েছিলেন বাদশাহ আবদুল্লাহ। পুরুষ অধ্যুষিত পরামর্শক শুরা কাউন্সিলে ২০১৩ সালে প্রথমবারের মতো ৩০ জন নারীকে নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
এ লক্ষে একটি ডিক্রিও জারি করা হয়েছিল। এতে বলা হয়েছিল, শুরা কাউন্সিলের মোট সদস্যের অন্তত এক-পঞ্চমাংশ হবে নারী। ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে পরামর্শ করেই বাদশাহ আবদুল্লাহ এ সিদ্ধান্ত নেন।
এবারের শুরা কাউন্সিলে নিয়োগপ্রাপ্ত নারীদের মধ্যে আছেন ডক্টরেট ডিগ্রীধারী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, কূটনীতিক, লেখক, সাংবাদিক ও ব্লগার হিসেবে পরিচিতরা।
এর অন্যতম কয়েকজন হলেন- কাওসার আল-আরবাশ, মদি আল খালাফ, লীনা কে. আলমাঈনা, ড. আহলাম মুহাম্মদ আল হাকেমি, ড. জায়নাব আবু তালেব, নুরা আল শাবান, হুদা আবদুর রহমান আল হালিশি ও ড. সামিয়া আবদুল্লাহ।
এর আগে ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে সৌদি আরবের তৎকালীন বাদশাহ প্রথম ঘোষণা করেছিলেন, তিনি শুরা কাউন্সিলে নারীদের নিয়োগ দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন।
-আল আরাবিয়া ও আরব নিউজ অবলম্বনে
বাংলাদেশ সময়: ১৪০৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৪, ২০১৬
এমএইউ/