বর্তমানে সারাবিশ্বে মুসলমানদের মাঝে যে ফেতনাটি মারাত্মকভাবে প্রসার লাভ করেছে তা হচ্ছে- ধর্মের যে সমস্ত বিষয়ে একাধিক মত রয়েছে সেক্ষেত্রে নিজের মতটিকেই শুধু সঠিক মনে করা এবং অসংগতভাবে তা প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করা।
আসলে মতবিরোধপূর্ণ বিষয়ে বিজ্ঞ আলেম বা ইসলামি স্কলার ব্যতীত অন্য কোনো ব্যক্তির মতামত প্রকাশ সঙ্গত নয়।
পক্ষান্তরে মতবিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহে সাধারণ কোনো ব্যক্তির মতামত হয়ে থাকে অনুমাননির্ভর। এক্ষেত্রে একজন ব্যক্তির সংশ্লিষ্ট বিষয়ে দলিল-প্রমানসমূহ পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণের না থাকে ন্যূনতম যোগ্যতা, না থাকে বিপরীত মতসমূহের দলিল-প্রমাণ সংশ্লিষ্ট যথাযথ জ্ঞান। এটা হচ্ছে একজন সাধারণ মানুষের চিকিৎসার যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও কোনো অসুখের নিরাময় সম্পর্কে মত প্রকাশের মতো। যার এখতিয়ার ওই ব্যক্তির নেই।
আবার অনেক সময় নিজস্ব মতটিকে সঠিক প্রমাণের জন্য বিপরীত মতসমূহ সুকৌশলে এড়িয়ে যাওয়া হয় অথবা গোপন করা হয়- যা ইলমের আমানতদারিতার খিয়ানত।
হাল সময়ে বিভিন্ন ব্লগ ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি শ্রেণি (তরুণ শ্রেণি) বিন্দুমাত্র যোগ্যতা না থাকা স্বত্ত্বেও অনেক দ্বীনি বিরোধপূর্ণ বিষয়ে (যে সব বিষয়ে একাধিক মত রয়েছে) নিজেদের মত প্রকাশ করেন এবং নিজেদের মতের পক্ষে অনেক সময় মাতৃভাষায় দলিল পেশ করে থাকেন। আর এটাকে তারা অনেক বড় দ্বীনি খেদমত মনে করেন। যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
কারণ, মতবিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহে নিজস্ব কোনো মতপ্রকাশের অধিকার একজন ব্যক্তি তখনই অর্জন করতে পারবেন যখন তিনি সংশ্লিষ্ট বিষয়ে এবং ইসলামি শাস্ত্রে যথাযথভাবে জ্ঞান অর্জনকারী হবেন। এ যোগ্যতা ছাড়া বিভিন্ন ব্লগ ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দ্বীনি বিরোধপূর্ণ বিষয়ে কোনো মতামত দেওয়া অন্যায় ও বড় ধরনের ফেতনা। এমন কাজ অন্য মানুষের মধ্যে সন্দেহ-সংশয় সৃষ্টি করে এবং বিরোধ উস্কে দেয়।
এ ধরণের পোস্ট যারা শেয়ার করেন তাদেরও এমন কাজ থেকে বিরত থাকা জরুরি। কারণ হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, কোনো ব্যক্তির গোনাহগার হওয়ার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে, সে যা শোনে তা-ই বলে বেড়ায়।
মতবিরোধপূর্ণ ধর্মীয় বিষয়গুলো অনুধাবনের জন্য গভীর শাস্ত্রীয় জ্ঞান প্রয়োজন। প্রয়োজনে এ বিষয়ের শাস্ত্রজ্ঞ আলেমদের শরণাপন্ন হওয়া সমীচীন।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০১৬
এমএইউ/