আমেরিকায় বসবাসরত মুসলমানদের পৃথক ডাটাবেজ তৈরির মাধ্যমে বিতর্কিত ‘মুসলিম নিবন্ধন’ প্রক্রিয়ায় নব-নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে কোনো ধরনের সহায়তা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক শীর্ষ প্রতিষ্ঠানগুলো।
সম্প্রতি তারা এ সিদ্ধান্ত নেয় বলে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে।
এর আগে শত শত কম্পিউটার প্রোগ্রামার ব্যক্তিগতভাবে ট্রাম্পের ওই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত হতে অস্বীকৃতি জানান।
শীর্ষস্থানীয় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান মাইক্রোসফট ও আইবিএম বলেছে, ট্রাম্পের ক্ষমতার মেয়াদে মার্কিন মুসলমানদের তালিকা প্রণয়নে সহায়তা চাওয়া হলে তারা তা প্রত্যাখ্যান করবে।
নির্বাচনী প্রচারণার সময় ট্রাম্প ধর্মের ভিত্তিতে নাগরিকদের একটি তালিকা করার অঙ্গীকার ঘোষণা করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ও এর বাইরের শত শত কমপিউটার প্রোগ্রামার ‘নেভারএগেইন.টেক’ নামের একটি ওয়েবসাইটে স্বাক্ষর করে শপথ নিয়েছেন যে, তারা নাগরিকদের ধর্মীয় পরিচয়ের ভিত্তিতে তালিকা প্রণয়নে কাজ করার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করবেন।
মাইক্রোসফটের প্রধান নির্বাহী সত্য নাদেলা ও অন্যান্য প্রযুক্তি খাতের নেতারা যেদিন নিউইয়র্কে মি. ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করেন তার পরদিনই মাইক্রোসফটের একজন মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা আমাদের মূল্যবোধের ব্যাপারে স্পষ্ট। আমরা বৈষম্যের বিরুদ্ধে এবং আমরা মুসলিম আমেরিকানদের তালিকা করার কোনো কাজ করবো না। ’
প্রায় তিন লাখ ৮০ হাজার স্টাফ সম্বলিত আইবিএম বলছে, তারা এমন বায়বীয় প্রকল্পে কোনো কাজ করবে না।
উল্লেখ্য, অ্যাপল, গুগল, উবার এবং ফেসবুকের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে অস্বীকৃতিমূলক বক্তব্য প্রকাশের পর আইবিএম এমন মন্তব্য করে। এরও বেশ কয়েকদিন আগে একই অনুরোধে নিজেদের অপারগতার কথা জানিয়ে দেয় টুইটার কর্তৃপক্ষও।
ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচনের প্রচারণায় বলেছিলেন, তিনি নির্বাচিত হলে পূর্বসুরী জর্জ বুশের করা মুসলিম নিবন্ধন ফের চালু করবেন তিনি। নির্বাচনের পর অবশ্য এ নিয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো বক্তব্য দেননি তিনি।
তবে গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী প্রযুক্তি কোম্পানির নির্বাহীদের সঙ্গে বৈঠক করেন ট্রাম্প। ওই বৈঠকে অ্যাপলের সিইও টিম কুক, মাইক্রোসফটের সিইও সত্য নাদেলা, আইবিএমের সিইও গিনি রমেটি, ফেসবুকের নির্বাহী শেরিল স্যান্ডবার্গ, টেলসা প্রধান ইলোন মাস্কসহ প্রভাবশালী প্রযুক্তি কর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে প্রযুক্তি কর্মকর্তাদের একটি দল জাতি বা ধর্মের ওপর ভিত্তি করে তথ্য সংগ্রহে কখনোই সাহায্য করবে না জানিয়ে একটি অঙ্গীকারনামায় সই করেছে। গুগল, টুইটার এবং ফেসবুকসহ ৫৫টি প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা ওই অঙ্গীকারনামায় জানিয়েছেন, ব্যবহারকারীর যে কোনো তথ্যসংগ্রহ ও নীতিগতভাবে ব্যবহারের বিষয়টি নিশ্চিত করতে সচেষ্ট থাকবেন। এসব তথ্য অপব্যবহার করার বিরুদ্ধেও তারা।
-দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট অবলম্বনে
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০১৬
এমএইউ/