বর্তমানে সৌদি আরবে শুধুমাত্র নারী বিষয়ক মামলা নয়, বরং নারী সংশ্লিষ্ট নয় এমন বিষয়ের মামলা পরিচালনার সামর্থ্য ও অধিকার নারী আইনজীবীদের রয়েছে। এক কথায় বলা চলে, সৌদি আরবে নারী আইনজীবীরা কাজ করে যাচ্ছেন সমানতালে।
কোর্ট রুমে সফলতা অর্জনের প্রেক্ষিতে এখন সৌদির নারী আইনজীবীরা চাচ্ছেন, সৌদি বার অ্যাসোসিয়েশনসহ বিভিন্ন আইন বিষয়ক কমিটি ও সংস্থায় তাদের অন্তর্ভুক্তি হোক সমানতালে।
নারী আইনজীবীদের বিচার মন্ত্রণালয়ের অধীন আইন অফিস ও আদালতে আনুষ্ঠানিক ও আইনসিদ্ধভাবে কাজ করার অধিকার আদায়ের জন্য বেশ কিছু বাধা পার হতে হয়েছে।
নারী আইনজীবীরা আইনের ওপর গবেষণা প্রতিবেদন ও গ্রন্থ রচনা করেছেন। আইনজীবী হুদা ওমর বাশমাইলের ‘ইনভেস্টমেন্ট ডিসপিউটস সেটলমেন্ট উইদিন দ্য ফ্রেমওয়ার্ক অব ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর সেটলমেন্ট অব ইনভেস্টমেন্ট ডিস্পুটস (আইসিএসআইডি) অ্যান্ড দ্য প্রোটেকশন অব ফরেন ডাইরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট (এফডিআই)’ শীর্ষক একটি গবেষণা প্রতিবেদন আমেরিকান ব্যাংকিং বাণিজ্যিক বিষয়ক পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে।
জেদ্দাভিত্তিক আইনজীবী বায়ান জাহরান বলেন, আদালত কক্ষে নারীদের উপস্থিতির বৈধতা পেতে দীর্ঘদিন সময় লেগেছে।
তিনি প্রথম সৌদি নারী হিসেবে একটি ল’ ফার্ম চালু করেন।
তিন বছর আগে সৌদি আরবের আদালতগুলোতে নারী আইনজীবীদের মামলা পরিচালনার অনুমোদন দেওয়া হয়।
তারা এখন নির্ভরযোগ্য আইনজীবী হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে। সৌদি আইন ব্যবস্থায় পুরুষ সহকর্মীদের মতো নারীদেরও একই রকম অধিকার ও দায়িত্ব রয়েছে।
নারী আইনজীবীর মক্কেলদের শতকরা ৯০ ভাগই নারী। কারণ নারীরা তাদের সমস্যাগুলো নারী আইনজীবীদের কাছে তুলে ধরতেই স্বাচ্ছন্দবোধ করেন। সৌদি আরবের রক্ষণশীল সমাজ ব্যবস্থায় তারা পুরুষ আইনজীবীদের কাছে খোলাখুলিভাবে তাদের সমস্যার কথা বলতে বিব্রতবোধ করেন।
কোনো পুরুষ মক্কেল চাইলে নারী আইনজীবীকে নিয়োগ করতে পারেন।
সম্প্রতি একদল চিকিৎসক জাহরানের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। জাহরা তাদের চাকরিস্থল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে তাদের অধিকার আদায়ের মামলা লড়ছেন।
পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নারী আইনজীবীরা সমাজের চাকরীজীবী নারীদের মতোই সমস্যার সম্মুখীন হন। সমাজের মানুষ আদালতকক্ষে পুরুষ আইনজীবীদের পাশে তাদের উপস্থিতিকে মেনে নিতে চায় না।
জাহরান বলেন, এই সব প্রতিকূলতা মোকাবেলার সর্বোত্তম উপায় হচ্ছে, এগুলোকে উপেক্ষা করা। এগুলো নিয়ে না ভাবা।
সৌদি আইন ব্যবস্থায় নারী আইনজীবীদের জন্য আলাদা কোনো বিধিনিষেধ নেই।
জাহরান বলেন, কোনো কোনো নতুন ডিগ্রিধারীদের এই কাজ সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা রয়েছে। তারা মনে করেন, নারী আইনজীবীদের সঙ্গে পুরুষদের থেকে আলাদা আচরণ করা হয়।
বেশ কিছু সংখ্যক নারী আইনজীবী এমন মানুষকে আইনী সহায়তা দেন যাদের আইনজীবী রাখার মতো সমর্থ নেই। জেদ্দায় তাকামুল ইনভেস্টমেন্ট নামক একটি দাতব্য কোম্পানী এই পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এই কোম্পানির মাধ্যমে তাদেরকে আইনজীবী দেওয়া হয়।
তাদের একজন হলেন দিমা তালাল আল শরিফ। তিনি অনেক প্রবাসীদের পক্ষে লড়ছেন। প্রবাসীদের কাছে তিনি বেশ জনপ্রিয় একজন আইনজীবী।
-আরব নিউজ অবলম্বনে
ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন bn24.islam@gmail.com
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০১৬
এমএইউ/