দুই পা ছাড়া এক চতুর্থাংশ শরীর নিয়ে জন্ম গানিমের। হুইল চেয়ারে করে চলাচল করে সে।
কাতারের মানুষ গানিমকে আশা, দৃঢ়সংকল্প এবং দানশীলতার প্রতিমূর্তি হিসেবে জানে। শারীরিকভাবে অক্ষমতা সত্ত্বেও নিজের দুর্বলতা কাটিয়ে গানিম মনে জোরে অসম্ভবকে সম্ভব করার নীতিকে বিশ্বাসী। তাই তার নাম হয়েছে ‘অলৌকিক শিশু’।
সেই গানিমের ইচ্ছা পূরণে এগিয়ে আসেন সৌদি আরবের পর্যটন এবং জাতীয় ঐতিহ্য কমিশনের চেয়ারম্যান প্রিন্স সুলতান বিন সালমান বিন আবদুল আজিজ। তিনি গানিমের ওমরা পালনের ব্যবস্থা করেন। প্রতিবন্ধী হওয়ার কারণে কাবা শরিফ তাওয়াফসহ ওমরার অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা পালনে তার জন্য বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়। মক্কায় পৌঁছার পর একটি বিশেষ টিম গানিম ও তার পরিবারকে ওমরা পালনে সহায়তা ও নিরাপত্তা প্রদান করে।
পবিত্র মক্কায় গানিমকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান প্রিন্স সুলতান নিজে। এ ছাড়া মক্কার গ্র্যান্ড মসজিদের ইমাম শেখ মাহের আল মুয়াকলির পেছনে গানিমদের নামাজ পড়ার ব্যবস্থা করা হয়।
তাওয়াফের জন্য পবিত্র কাবা প্রাঙ্গনে এসে গানিম আবেগপ্রবণ হয়ে উঠে। সে হুইল চেয়ার ছেড়ে দিয়ে দুই হাতের ওপর ভর দিয়ে তাওয়াফ করার ইচ্ছা ব্যক্ত করে এবং হুইল চেয়ার ছাড়া শুধু দুই হাতে ভর দিয়ে কাবা শরিফের তাওয়াফ সম্পন্ন করে। তাওয়াফের পর গানিমের বাবা তাকে কোলে উঠিয়ে হাজরে আসওয়াদ চুমো দিতে সাহায্য করেন।
শুক্রবার (২০ জানুয়ারি) মাগরিবের নামাজের সময় গানিম কাবা শরিফ তাওয়াফ করে। তার তাওয়াঢের ছবি ও ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে প্রচারের পর বেশ সাড়া পড়ে।
গানিম হাতের ওপর ভর দিয়ে পবিত্র কাবা তাওয়াফ করতে পারায় ভীষণ খুশি। এমন সুযোগ প্রদানের জন্য গানিম প্রিন্স সুলতান, মসজিদে হারামের ইমাম শেখ মাহের, চাচা ইউসুফ আল মারজুকসহ মক্কা পর্যন্ত আসতে ও তাওয়াফ করতে যারা বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছেন তাদের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।
গানিম বলেন, আল্লাহতায়ালা আমার প্রার্থনা শুনেছেন। আল্লাহর বিশেষ রহমতে উমরা পালন এবং হাতের ওপর ভর করে কাবা শরিফ তাওয়াফ করতে সক্ষম হয়েছি।
তাওয়াফের পর গ্র্যান্ড মসজিদের ইমাম শেখ মাহের আল মেইকলি তাকে জড়িয়ে ধরে অভিনন্দন জানান।
-আরব নিউজ অবলম্বনে
ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: bn24.islam@gmail.com
বাংলাদেশ সময়: ২১০৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০১৭
এমএইউ/