কিন্তু ভালো ও নেক কাজের জন্য এশার নামাজের পর জাগ্রত থাকাতে কোনো ক্ষতি নেই। যেমন মেহমানের সঙ্গে কথা বলা, জ্ঞানার্জন সম্পর্কে আলোচনা করা কিংবা পরিবারকে সময় দেওয়া ইত্যাদি।
মোটকথা, যে জাগ্রত থাকা কোনো ক্ষতির কারণ হবে না- যেমন ফজরের নামাজ নষ্ট হয়ে যাওয়া; সে জাগ্রত থাকাতে কোনো ক্ষতি নেই।
ইসলামের বিধানমতে তাড়াতাড়ি ঘুমানোর উপরকারিতাগুলো হলো- ক. সুন্নতের অনুসরণ, খ. শরীরকে আরাম দেওয়া; কেননা দিনের ঘুম রাতের ঘুমের ঘাটতি পূরণ করতে পারে না, গ. ফজরের নামাজের জন্য খুব সহজে এবং পূর্ণ শক্তি ও চাঞ্চল্যতার সঙ্গে জাগ্রত হওয়া যায় ও ঘ. তাহাজ্জুদের নামাজের জন্য শেষ রাতে জাগ্রত হতে ইচ্ছুক ব্যক্তির জন্য এটি বড় সহায়ক।
আর এশার ওয়াক্ত হয়ে গেলে ঘুমানো মাকরূহ। অর্থাৎ মাগরিবের ওয়াক্ত শেষ হয়ে এশার ওয়াক্ত শুরু হলেই ঘুমানো মাকরূহ।
এ বিষয়ে ইসলামি স্কলারদের অনেকেই বলেছেন, মাগরিবের নামাজের পর, মাগরিব ও এশার মধ্যবর্তী সময় থেকে নিয়ে এশার আগ পর্যন্ত ঘুমানো মাকরূহ। এটি মালিকি ও হাম্বলি ইমামদের অভিমত।
আর হানাফি ইমামদের মতে এশার ওয়াক্ত শুরু হলে ঘুমানো মাকরূহ। এটিই অবলম্বন করেছেন ফকিহুন নফস হজরত মাওলানা রশীদ আহাম্মদ গাঙ্গুহি (রহ.)।
তবে মাগরিবের পর ঘুমানো কুলক্ষণযুক্ত কাজ কিংবা দরিদ্রতার লক্ষণ- এমন কথা ভুল ও বাতিল।
সহিহ বোখারি ও মুসলিমের বর্ণনায় আছে, হজরত আবু বারযা আল আসলামি (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) এশার আগে ঘুমানো এবং এশার পর কথাবার্তা বলাকে অপছন্দ করতেন। ’ –সহিহ বোখারি: ৫৭৪
হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) এশার আগে ঘুমাতে নিষেধ করেছেন এবং এশার পর কথাবার্তা বলতে নিষেধ করেছেন এ ব্যাপারে আরও অনেক বর্ণনা রয়েছে।
এ সময় ঘুমানো মাকরূহ হওয়ার কারণ আল্লামা ইবনে হাজার আসকালানি (রহ.) উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, ‘কেননা এশার পূর্বে ঘুমালে মূল ওয়াক্তই চলে যেতে পারে অথবা উত্তম ওয়াক্ত ছুটে যেতে পারে। ’ -ফাতহুল বারি: ৫৭৪ এর আলোচনায়
তবে নেক কাজ হলে এশার পর জেগে থাকাকে উলামায়ে কেরাম জায়েয বলেছেন অন্য হাদিসের ভিত্তিতে।
ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: bn24.islam@gmail.com
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৭
এমএইউ/