শরীরকে সুস্থ করে তুলতে যেমন চিকিৎসা করা প্রয়োজন- তেমনি আত্মার ব্যাধি সারাতেও প্রয়োজন আত্মার চিকিৎসা করানো। যুগে যুগে আধ্যাত্মিক সুফি-সাধকেরা মুসলিম উম্মাহর এই খেদমতই করে আসছেন।
এমনও মানুষ আছেন যার শারীরিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এমন যে, তিনি সহজে রোগাক্রান্ত হন না বা আক্রান্ত হলেও চিকিৎসকের সাহায্য ছাড়াই সুস্থ হয়ে উঠতে পারেন (যদিও চিকিৎসা গ্রহণ করা সুন্নদ)। আত্মার ব্যাধিতে আক্রান্ত ব্যক্তি যদি ঈমানি মজবুতির উচ্চস্তরের হন- তবে আল্লাহর ইচ্ছায় নিজেই আত্মার ব্যাধি প্রতিকার করতে পারেন।
যে কোনো আত্মিক অসুস্থতার চিকিৎসা করা জরুরি (শারীরিক, মানসিক), তবে এর জন্য এটা জরুরি না যে- সুফি-সাধক বা পীরের মাধ্যমেই তা করতে হবে।
কিন্তু আত্মার ব্যাধি এমন যে, তা নির্ণয় করা একটি দুরূহ কাজ এবং অধিকাংশ সাধারণ মানুষের জন্যই তা অসম্ভব। তাই একজন আধ্যাত্মিক বুজুর্গের সাহায্যে আত্মার ব্যাধির চিকিৎসা করানো অবশ্যই উপকারী। এটা মোটেও শিরকি-বিদআতি কর্মধারা নয়। তাছাড়া আধ্যাত্মিক বুজুর্গদের সান্নিধ্য আত্মা তথা নফসের পরিশুদ্ধি অর্জনের জন্যও অত্যন্ত কার্যকর।
তাই কোনো ব্যক্তি যদি আত্মিক ব্যাধি দূর করার জন্য তথা আত্মা পরিশুদ্ধর জন্য অথবা আমলের সংশোধনের জন্য অর্থাৎ আমলের মধ্যে আল্লাহর ধ্যান আনা, একাগ্রতা সৃষ্টি করা, পরিপূর্ণ সুন্নতের অনুসরণ প্রভৃতি গুণ অর্জনের জন্য কোনো কামেল পীরের দ্বারস্থ হন (বা মুরিদ হন) বা কোনো আধ্যাত্মিক বুজুর্গের হাতে বায়াত হন- তবে সেটা ওই ব্যক্তির জন্য দ্বীনের রজ্জু শক্তভাবে ধারণেই সহায়ক হবে।
কোনো অসুস্থ ব্যক্তি যেমন সবচেয়ে বড় ডাক্তার খোঁজ করে বের করেন- তেমনি আত্মিক ব্যাধিগ্রস্ত ব্যক্তিকেও পীর বা শায়খ খুব সতর্কতার সঙ্গে বাছাই করে বের করতে হবে। নাহলে শিরকি-বিদআতি ভন্ড পীরের ফাঁদে পড়ে আরও মারাত্মক ব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
বলা বাহুল্য, বর্তমানে ভন্ড পীরের সংখ্যা অনেক এবং এদের প্রচার-প্রসারও বেশ জমকালো, চিত্তাকর্ষক। বিপরীতে অধিকাংশ হক্কানি পীর- মাশায়েখরা প্রচারের আড়ালে থেকে উম্মাহর আত্মিক পরিশুদ্ধির জন্য চেষ্টা চালিয়ে যান। তাই তাদের খুঁজে নিতে হয়।
ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: bn24.islam@gmail.com
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০১৭
এমএইউ/