হাতের মুঠোয় থাকা এই প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে যেমন ভালো কাজ করা যায়, তেমনি অহেতুক সময়ও ব্যয় করা যায়। কিন্তু আপনি সামান্য ইচ্ছা করলেই এই প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে আখেরাতের পাথেয় অর্জন করতে পারেন।
একটু সৎ ইচ্ছা, আর সামান্য সময় ব্যয় করে পুরো কোরআন না হোক শুধু ৩০ নম্বর পারাটি মুখস্থ করতে পারেন। এবার আসুন দেখে নেই কিভাবে সামান্য সময় ব্যয় করে পবিত্র কোরআনের ৩০তম পারাটি সহজেই মুখস্ত করা যায়।
পবিত্র কোরআনের ৩০তম পারায় মোট ৩৭টি সূরা রয়েছে। এসব সূরার মোট আয়াত সংখ্যা ৫৬৪টি। তন্মধ্যে শেষের (সূরা ফিল থেকে সূরা নাস, মোট ১০টি সূরা) সূরাগুলো প্রায় সবারই মুখস্ত। এই ১০ সূরার আয়াত সংখ্যা ৪৮টি। বাকী থাকে ৫১৬টি আয়াত।
এই ৫১৬টি আয়াত থেকে দিনের ২৪ ঘন্টায় মাত্র ১৭-১৮টি করে আয়াত মুখস্ত করা খুব কঠিন কোনো বিষয় না। অন্তরে প্রবল ইচ্ছা থাকলে বিষয়টি খুবই সহজ। দরকার একটু অধ্যবসায়।
অধ্যবসায়ের অনেক উদাহরণ আমরা জানি ও পড়েছি। অধ্যবসায়ের ফলে পঙ্গু মানুষও এভারেষ্ট জয় করেছে। তাই বলি, আসুন না- আমরাও অধ্যবসায়ী হই আখেরাতের জন্য।
যারা কোরআন শরিফ পড়তে পারেন না তারাও এ পদ্ধতিতে পবিত্র কোরআনের ৩০তম পাড়া মুখস্ত করতে পারবেন ও শুদ্ধভাবে তেলাওয়াত শিখতে পারেন।
মুখস্থ করা প্রসঙ্গে বলা যায়, একটি একটি করে আয়াত মুখস্ত করা। একটি আয়াত মুখস্ত হলে পরের আয়াত মুখস্ত করা এবং প্রথমটির সঙ্গে মিলিয়ে পড়া। এভাবে তিন আয়াত মুখস্ত করা ও পূর্বের আয়াতের সঙ্গে মিলিয়ে কয়েকবার পড়া। যাতে সব আয়াত একসঙ্গে মুখস্ত হয়। তাছাড়া একাধিক আয়াত বা ছোট সূরা একত্রেও মুখস্ত করা যেতে পারে।
প্রত্যেক নামাজের পর, অবসর সময় (অফিসে যাতায়াতকালে) এবং প্রস্তুতি নিয়ে দিনের একটা সময় কোরআনের কপি দেখে কিংবা মোবাইলে দেখে দেখে আপনি কোরআন তেলাওয়াত শিখতে বা মুখস্থ করতে পারেন। তবে হ্যাঁ, মনোযোগী না হলে মুখস্ত করা কঠিন ও সময় স্বাপেক্ষ বিষয় হয়ে দাঁড়ায়।
ইচ্ছে হলে মোবাইলে বা কম্পিউটারে কোরআন তেলাওয়াত শুনতেও পারেন। কোরআন তেলাওয়াত শোনার পাশাপাশি মুখে মুখে উচ্চারণ করলে দ্রুত তা মুখস্ত হয়। পাশাপাশি অর্থ জানা থাকলে মুখস্ত করা আরও সহজ।
মনে রাখবেন, কোরআন তেলাওয়াত শোনার জন্য অজু অত্যাবশ্যক নয়। বরং অজু থাকলে ভালো ও এটা কোরআন তেলাওয়াতের আদব।
কোরআন তেলাওয়াত সরাসরি তেলাওয়াতকারীর কাছ থেকে শোনার সময় সিজদার আয়াত শুনলে সিজদা আদায় করতে হবে। আর রেকর্ড করা তেলাওয়াত শুনলে সিজদা কার আবশ্যক নয়।
আপনি ইচ্ছা করলে কোরআন মুখস্থ করার প্রথম সপ্তাহে সূরা নাবা, সূরা নাযিয়াত, সূরা আবাসা ও সূরা তাকভীর (১৫৭ আয়াত) মুখস্থ করতে পারেন।
দ্বিতীয় সপ্তাহে ১৬৪ আয়াত। এর মাঝে রয়েছে- সূরা ইনফিতার, সূরা মুতাফফিফিন, সূরা ইনশিকাক, সূরা বুরুজ, সূরা ত্বরিক, সূরা আলা ও সূরা আল গাশিয়া।
তৃতীয় সপ্তাহে সূরা ফজর, সূরা বালাদ, সূরা শামস, সূরা লাইল, সূরা দোহা, সূরা আলাম নাশরাহ, সূরা ত্বীন ও সূরা আলাক (১৩২ আয়াত) মুখস্থ করতে পারেন।
চতুর্থ সপ্তাহে সূরা কদর, সূরা বাইয়্যিনা, সূরা যিলযাল, সূরা আদিয়াত, সূরা কারিয়া, সূরা তাকাসুর, সূলা আসর ও সূরা হুমাযা (৬৩ আয়াত) মুখস্থ করতে পারেন।
বাকী রইল ৬৩ আয়াত। এই ৬৩টি আয়াতভুক্ত সূরাগুলো হলো- সূরা ফিল, সূরা কুরাইশ, সূলা মাউন, সূরা কাউসার, সূলা কাফিরুন, সূরা নাসর, সূরা লাহাব, সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক ও সূরা নাস। উল্লেখিত সূরাগুলো প্রায় সবারই মুখস্থ।
ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: bn24.islam@gmail.com
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৭ ঘণ্টা, মার্চ ১৫, ২০১৭
এমএইউ/