পরকালের কাঙ্খিত বিজয় অর্জনের প্রতি উৎসাহমূলক নিদের্শ দিয়ে আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, এরূপ সাফল্যের জন্যই ‘আমলকারীদের আমল করা উচিত। ’ -সূরা সাফফাত: ৬১
সাফল্যের আরবি শব্দরূপ হচ্ছে- ‘ফওয’, লিসানুল আরব অভিধানে এর অর্থ করা হয়েছে, কল্যাণ ও কাঙ্খিত লক্ষ্য সাধনের মাধ্যমে কৃতকার্য হওয়া।
মানব জীবনে পরকালে সফলতার জন্য যে সব উপায়-উপকরণগুলো জরুরি তা নিম্নরূপ-
ঈমান ও নেক আমল
কোরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘অতঃপর যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকাজ করেছে তাদের রব পরিণামে তাদেরকে স্বীয় রহমতে প্রবেশ করাবেন। এটিই সুস্পষ্ট সাফল্য। ’ -সূরা জাসিয়া: ৩০
কোরআনের অন্যত্র আরও ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই যারা ঈমান আনে এবং সৎকর্ম করে তাদের জন্য রয়েছে জান্নাত। যার তলদেশে প্রবাহিত হবে নহরসমূহ। এটাই বিরাট সফলতা। ’ -সূরা বুরূজ: ১১
সততা
কোরআন মাজিদে এসেছে, আল্লাহতায়ালা বলবেন, ‘এটা হলো- সেই দিন যেদিন সত্যবাদীগণকে তাদের সততা উপকার করবে। তাদের জন্য আছে জান্নাতসমূহ যার নীচে প্রবাহিত হবে নদীসমূহ। সেখানে তারা হবে স্থায়ী। আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন, তারাও তার প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন। এটা মহাসাফল্য। ’ -সূরা মায়েদা: ১১৯
মুমিনদের পারস্পরিক বন্ধুত্ব
কোরআনে কারিমে এসেছে, ‘আর মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীরা একে অপরের বন্ধু, তারা ভালো কাজের আদেশ দেয় আর অন্যায় কাজ থেকে নিষেধ করে, আর তারা নামাজ কায়েম করে, জাকাত প্রদান করে এবং আল্লাহ ও তার রাসূলের আনুগত্য করে। এদেরকে আল্লাহ শীঘ্রই দয়া করবেন, নিশ্চয় আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। আল্লাহ মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীদেরকে জান্নাতের ওয়াদা দিয়েছেন, যার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হবে নহরসমূহ, তাতে তারা চিরদিন থাকবে এবং (ওয়াদা দিচ্ছেন) স্থায়ী জান্নাতসমূহে পবিত্র বাসস্থানসমূহের। আর আল্লাহর পক্ষ থেকে সন্তুষ্টি সবচেয়ে বড়। এটাই মহাসাফল্য। ’ -সূরা তওবা: ৭১-৭২
আল্লাহভীতি ও তাকওয়া
কোরআন মাজিদে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর যে কেউ আল্লাহ ও তার রাসূলের আনুগত্য করে, আল্লাহকে ভয় করে এবং তার তাকওয়া অবলম্বন করে, তারাই সফল ও কৃতকার্য। ’ -সূরা আন নূর: ৫২
আল্লাহর সঙ্গে কৃত আনুগত্যের প্রতিশ্রুতি পূরণ করা
কোরআনে কারিমে এসেছে, নিশ্চয়ই আল্লাহতায়ালা মুমিনদের থেকে তাদের প্রাণ ও ধন-সম্পদ জান্নাতের বিনিময়ে কিনে নিয়েছেন। তারা আল্লাহর পথে লড়াই করে অতঃপর তারা (অবিশ্বাসীদের) মারে এবং (নিজেরাও) মরে। তাদের প্রতি তাওরাত, ইনজিল ও কোরআনে (জান্নাত) দানের পাকাপোক্ত ওয়াদা করা হয়েছে। আল্লাহর চাইতে বেশি ওয়াদা পূরণকারী কে আছে? অতএব, (হে মুমিনরা!) তোমরা খুশি হয়ে যাও সেই বেচা-কেনার জন্য, যা তোমরা আল্লাহার সঙ্গে করেছো। আর এটিই সবচেয়ে বড় সাফল্য। -সূরা তওবা : ১১১
আল্লাহ ও রাসূলের আনুগত্য এবং সত্য ও ন্যায়সঙ্গত কথা বলা
কোরআনে কারিমে এসেছে, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং সঠিক কথা বল। তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের কাজগুলোকে শুদ্ধ করে দেবেন এবং তোমাদের পাপগুলো ক্ষমা করে দেবেন। আর যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তার রাসূলের আনুগত্য করে, সে অবশ্যই এক মহা সাফল্য অর্জন করল। ’ -সূরা আহজাব: ৭০-৭১
আনুগত্য তো নিজেই এক মহা সাফল্য। আনুগত্য হচ্ছে, আল্লাহর নির্দেশিত পথে অবিচল থাকা। আর আল্লাহর নির্দেশিত পথে অবিচল থাকা হলো স্বস্তি ও প্রশান্তি। আর স্বচ্ছ-সঠিক রাস্তার দিশা পাওয়া ও সে পথে পরিচালিত হওয়া পরম সৌভাগ্য।
ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: bn24.islam@gmail.com
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ০২, ২০১৭
এমএইউ/