এ প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালা কোরআনে কারিমে ইরশাদ করেন, ‘তোমরা আল্লাহর উদ্দেশ্যে হজ ও ওমরা পালন করো...। ’ -সূরা বাকারা: ১৯৬
হজ মানুষকে নিষ্পাপ করে।
হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) আরও বলেছেন, ‘মাবরুর হজের (গৃহীত) প্রতিদান জান্নাত ভিন্ন আর কিছুই নয়। ’ –বোখারি ও মুসলিম
কাঙ্খিত হজ পালনের নিমিত্তে সারাবিশ্ব থেকে মুসলমানরা মক্কায় কিংবা মক্কার পথে। হজপালনকারীদের পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে যা জেনে রাখা ভালো-
নিয়ত পরিশুদ্ধ করা: সকল কাজ আল্লাহতায়ালাকে সন্তুষ্ট করার জন্য এবং সকল বিষয়ে তার ওপর ভরসা করা ও শতভাগ আনুগত্য করা।
কর্মসূচি ও কর্মপদ্ধতি পরিশুদ্ধ করা: ছোট-বড় সকল কাজ মেধা, যোগ্যতা ও আন্তরিকতার সঙ্গে রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর দেখানো পদ্ধতি অনুযায়ী সম্পাদন করা।
সেইসঙ্গে চরিত্র ও আচার ব্যবহার পরিশুদ্ধ করা এবং আর্থিক বিষয়াদি পরিশুদ্ধ করা।
মাবরুর (কবুল) হজ অর্জনের জন্য হজপালনকারীকে আরও যে সব বিষয়ে খেয়াল করতে হবে সেগুলো হলো-
হজের আহকাম এবং উত্তম পাথেয়: আল্লাহ বলেন, ‘হজের মাসগুলো সুনির্দিষ্ট। অতঃপর যে কেউ এই মাসগুলোর মধ্যে হজের সংকল্প করে, তবে সে হজের মধ্যে অশ্লীল আচরণ, অন্যায়-আচরণ, কলহ-বিবাদ করতে পারবে না। তোমরা উত্তম কাজের যা কিছু করো, আল্লাহ তা জানেন; আর তোমরা পাথেয়র ব্যবস্থা করো; নিশ্চিত উৎষ্টতম পাথেয় হচ্ছে- তাকওয়া এবং হে জ্ঞানবানগণ! তোমরা আমাকে ভয় করো। ’ -সূরা বাকারা: ১৯৭
তওবা করা: আল্লাহ বলেন, ‘আল্লাহ অবশ্যই সে সব লোকের তওবা কবুল করেন যারা ভুলবশত মন্দ কাজ করে ও অতি সত্বর তওবা করে। সুতরাং আল্লাহ তাদেরকেই ক্ষমা করবেন। আল্লাহ মহাজ্ঞানী, প্রজ্ঞাময়। ’ -সূরা নিসা: ১৭
গীবত থেকে বিরত থাকা: মহান আল্লাহ বলেন, ‘হে মুমিনগণ! তোমরা অনেক ধারণা পোষণ থেকে বিরত থাক! আর তোমরা পরস্পরের গীবত করো না। তোমাদের মধ্যে কি কেউ তার মৃত ভাইয়ের গোশত খেতে পছন্দ করে? এটাতো তোমরা অবশ্যই ঘৃণা করো, আল্লাহকে ভয় করো। নিশ্চয়ই আল্লাহ তওবা কবুলকারী ও পরম দয়ালু। -সূরা হুজরাত: ১২
অহংকার না করা: আল্লাহ বলেন, ‘অহংকারবশে তুমি মানুষকে অবজ্ঞা করো না এবং পৃথিবীতে উদ্ধত্যভাবে বিচরণ করো না; নিশ্চয়ই আল্লাহ কোনো উদ্ধত্য অহংকারকারীকে পছন্দ করেন না। তুমি পদক্ষেপ করো সংযতভাবে এবং তোমার কণ্ঠস্বর নীচু কর; নিশ্চয়ই সুরের মধ্যে গর্দভের সুরই সর্বাপেক্ষা অপ্রীতিকর। ’ -সূরা লোকমান: ১৮-১৯
পর্দা করা: আল্লাহ বলেন, ‘মুমিনদেরকে বলো, তারা যেন তাদের দৃষ্টি সংযত করে ও তাদের লজ্জাস্থানের হেফাজত করে, এটা তাদের জন্য পবিত্রতম। মুমিন নারীদেরকে বলো, তারা যেন তাদের দৃষ্টি সংযত করে ও তাদের লজ্জাস্থানের হেফাজত করে। তারা যেন যা সাধারণত প্রকাশ পায়, তা ব্যতীত অলংকার বা সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তাদের ঘাড় ও বক্ষদেশ যেন মাথার কাপড় (ওড়না/চাদর) দ্বারা আবৃত রাখে, তারা যেন তাদের সৌন্দর্য প্রকাশের উদ্দেশ্যে সজোরে না হাঁটে...। ’ -সূরা নূর: ৩০-৩১
ধৈর্যধারণ করা: কোরঅা ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনগণ! তোমরা ধৈর্যধারণ করো, ধৈর্যর প্রতিযোগিতা করো। ’ -সূরা আলে ইমরান: ২০০
হিংসা পরিহার করা: হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমরা হিংসা করা থেকে বেঁচে থাক; কারণ হিংসা নেক আমলসমূহ এমনভাবে খেয়ে ফেলে যেমনভাবে আগুন কাঠকে খেয়ে ফেলে। ’ সুনানে আবু দাউদ
মানুষের হক এবং আমানত: কোরআনে আল্লাহ বলছেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের আদেশ করেছেন যে, তোমরা গচ্ছিত (আমানত) বুঝিয়ে দাও তার অধিকারীকে...। ’ -সূরা নিসা: ৫৮
এছাড়া হজের সফরে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও পবিত্র অবস্থায় থাকা। সেই সঙ্গে অপব্যয় না করা, বেশি বেশি কোরআন তেলাওয়াত করা, রাসূলের আনুগত্য করা, হারাম এলাকার পবিত্রতা এবং মর্যাদা সম্পর্কে অবহিত হয়ে সেভাবে চলা।
আল্লাহতায়ালা প্রত্যেক হজযাত্রীকে কবুল হজ প্রাপ্তির তওফিক দান করুন। আমিন।
ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: bn24.islam@gmail.com
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১০, ২০১৭
এমএইউ/