ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

কাবা শরিফে আজ পরানো হবে নতুন গিলাফ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৩৫ ঘণ্টা, আগস্ট ৩১, ২০১৭
কাবা শরিফে আজ পরানো হবে নতুন গিলাফ পবিত্র কাবার গিলাফ পরিবর্তন হবে আজ

পবিত্র মক্কা নগরী থেকে: হজের মৌসুমে কাবা শরিফের গিলাফকে নিচ থেকে ভাঁজ করে প্রায় তিন ফুট গুটিয়ে রাখা হয়। ভাঁজকৃত গিলাফকে সাদা কাপড় দিয়ে মুড়িয়ে রাখা হয়। 

পুরনো রীতি অনুযায়ী আজ (৯ জিলহজ, ৩১ আগস্ট) কাবা শরিফে নতুন গিলাফ পরানো হবে। প্রতিবছর (৯ জিলহজ) হজের দিন সব হাজিরা আরাফাতের ময়দানে যেতে থাকেন এবং মসজিদে হারামে মুসল্লিদের ভিড়ও থাকে কম।

হজপালনকারীরা মিনা, মুজদালিফা ও আরাফাত থেকে ফিরে এসে কাবা শরিফের গায়ে নতুন গিলাফ দেখতে পাবেন।  

কাবা শরিফের দরজা ও বাইরের গিলাফ দু’টোই মজবুত রেশমি কাপড় দিয়ে তৈরি করা হয়। গিলাফের মোট পাঁচটি টুকরা বানানো হয়। চারটি টুকরা চারদিকে এবং পঞ্চম টুকরাটি দরজায় লাগানো হয়। টুকরাগুলো পরস্পর সেলাইযুক্ত। এর পর্দার উচ্চতা ১৪ মিটার।  

কাবার গিলাফের প্রতিটি কাপড়ের জন্য প্রয়োজন হয় ৬৭০ কেজি রেশম, ১৫০ কেজি সোনা ও রুপার চিকন তার। ৪৭ থান সিল্কের কাপড় দিয়ে তৈরি করা হয় এই গিলাফ। গিলাফের মোট আয়তন ৬৫৮ বর্গমিটার। প্রতিটি থান ১ মিটার লম্বা, ৯৫ সেন্টিমিটার চওড়া। একটা আরেকটার সঙ্গে সেলাই করা।

প্রতিবছর দু’টি করে (একটি সতর্কতামূলক) গিলাফ তৈরি হয়। একটি হাতে তৈরি। এটি বানাতে সময় লাগে ৮-৯ মাস। অন্যটি মেশিনে মাত্র এক মাসে তৈরি করা হয়।  

উম্মুল জুদ নামে একটি কারখানায় এই গিলাফের পাশাপাশি মদিনার হুজরায়ে নববীর গিলাফও তৈরি করা হয়। কাবার গিলাফ বানানো হয় বিশেষ একটি কারখানায়। কারখানাটি মক্কা মোকাররমার চার কিলোমিটার দূরে উম্মুল জুদ এলাকায় অবস্থিত।  

১৩৪৬ হিজরি সালে বাদশাহ আবদুল আজিজ আল সৌদের শাসনামলে এ কারখানাটি স্থাপন করা হয়। পবিত্র কাবার গিলাফ পরিবর্তন হবে আজকাবার গিলাফ বদলের কাজকে পবিত্র ও সম্মানের কাজ হিসেবে ইসলামের পূর্ব যুগ থেকে বিবেচনা করা হয়। বছরে একবার এ পবিত্র ঘরের গিলাফ পরিবর্তন করা হয়।  

মালিক তুব্বা নামক এক বাদশাহ সর্বপ্রথম কাবাঘরে গিলাফ পরান।

সৌদি আরবে কাবার বিশেষ গিলাফ তৈরির কারখানা স্থাপন করার আগে আগে মিশর, তুরস্ক ও পাকিস্তান থেকে গিলাফ তৈরি করিয়ে আনা হতো।  

কাবার গিলাফে রেশমি সুতায় স্বর্ণের প্রলেপযুক্ত তার দিয়ে অত্যন্ত নিখুঁতভাবে পবিত্র কোরআনের আয়াত উৎকীর্ণ করা হয়। অতি উন্নতমানের কালো কাপড়ের ওপর কোরআনের আয়াত শিল্পীরা নিখুঁতভাবে ফুটিয়ে তোলেন।

অত্যন্ত সম্মানের এই কাজটি করে থাকেন বনি শায়বা ও বনি তালহা গোত্রের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। তাদের হাতেই থাকে কাবাঘরের চাবি।  

হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) এই গোত্রের হাতে কাবাঘর সংরক্ষণের চাবি তুলে দিয়ে বলেছিলেন, ‘হে বুন তালহা! তোমরা আল্লাহতায়ালার আমানত গ্রহণ করো এবং এর মাধ্যমে সংরক্ষণের জন্য কাজ করো। কোনো অত্যাচারী শাসক ছাড়া তোমাদের কাছ থেকে কেউ এই চাবি ছিনিয়ে নিতে পারবে না। ’

কাবাঘর সংরক্ষণের কাজে নিয়োজিতদের আরবিতে ‘সাদালাতুল কাবা’ বলা হয়। এ গোত্রের সবচেয়ে বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি কাবার চাবি বহন করেন। বর্তমানে যিনি চাবির দায়িত্ব পালন করছেন, তার নাম আবদুল আজিজ আল শায়বা।
 
১৪০৩ ও ১৪১৭ হিজরিতে বাদশাহ ফাহাদের সময় কাবার গিলাফ পরিবর্তন করা হয়। তার আগে প্রতিবছর গিলাফ পাল্টানো হতো না। এখন প্রতিবছর হজের সময় এই গিলাফ পরিবর্তন করা হয়।  

বাংলাদেশ সময়: ০৯২৭ ঘণ্টা, আগস্ট ৩১, ২০১৭
এমএইউ/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।