এসব পন্থার অধিকাংশই অবৈধ। অথচ অবৈধ পন্থায় আয়-উপার্জন করা, ধন-সম্পদের মালিক হওয়া ইসলামের দৃষ্টিতে হারাম।
হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত আলী (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে বান্দা আল্লাহর পক্ষ থেকে অল্প রিজিক পেয়ে খুশি থাকে, আল্লাহ্তায়ালা তার তরফ থেকে অল্প আমলে খুশি থাকেন। ’ -মুসনাদে আহমদ
অনেক ইসলামি স্কলার এও বলেছেন, বাস্তবিক অর্থে মৌলিক প্রয়োজনগুলো পূরণ হয়ে গেলে মানুষের উচিত আল্লাহর কাছে অতিরিক্ত কিছু দাবি না করা।
অার এ বিষয়ে দুনিয়ায় অপেক্ষাকৃত নিম্নস্তরের লোকদের প্রতি নজর দেওয়ার প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, সাহাবি হজরত আবু জর (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমার প্রিয়তম বন্ধু হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) আমাকে কয়েকটি বিষয়ের প্রতি সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে নির্দেশ দিয়েছেন-
১. দারিদ্র্যপীড়িত মানুষের প্রতি সদয় দৃষ্টি দেওয়া এবং বিপদে-আপদে তাদের পাশে দাঁড়ানো।
২. আমি যেন আমার নিম্নস্তরের লোকদের সাহায্য করি এবং আমার উচ্চস্তরের লোকদের সাহায্য না করি।
৩. কাছের আত্মীয় হোক কিংবা দূরের আত্মীয় হোক আমি যেন তাদের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখি।
৪. যদি তিক্ত হয় তবুও আমি যেন সর্বদা সত্য কথা বলি।
৫. আমি যেন আল্লাহর আদেশ পালনের ক্ষেত্রে কোনো অত্যাচারী কিংবা নিন্দুকের রক্তচক্ষুকে ভয় না করি।
৬. আমি যেন বেশি বেশি ‘লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লাহ বিল্লাহ’ পড়ি।
কেননা এ বাক্যগুলো আরশের নিচের ভাণ্ডার থেকে আসে। -মুসনাদে আহমদ
বাস্তবতার নিরিখে বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে, একজন মানুষ জীবনে যে পরিমাণ সম্পদ উপার্জন করেন, সেখানে তার অংশ খুব কম। বেশিরভাগই আত্মীয়-স্বজনদের।
হাদিসে বিষয়টি খুব সুন্দরভাবে বলা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘বান্দা বলে আমার মাল, আমার সম্পদ অথচ তার সম্পদের মধ্যে শুধু তিনটি সম্পদই হচ্ছে তার প্রকৃত সম্পদ। আর সেগুলো হলো-
১. যা সে খেয়ে শেষ করে ফেললো।
২. যা পরিধান করলো এবং পুরাতন করে ফেললো।
৩. যা দান করে দিলো এবং সঞ্চয় করে রাখলো। এর বাইরে যে সম্পদ আছে তা সে পরিবার-পরিজনদের জন্য রেখে দুনিয়া থেকে বিদায় নেবে। ’ -সহিহ মুসলিম
বস্তুত দুনিয়াতে রেখে যাওয়া সম্পদ এক সময় উত্তরাধিকারদের মাঝে ভাগ-বণ্টন হয়ে যাবে। কিন্তু আল্লাহর রাস্তায় যে অর্থ দান করা হয়েছে তার সওয়াব কেউ নিতে পারবে না। এটা বান্দার একান্ত নিজের এবং তা আখেরাতে তার মুক্তির পথকে সুগম করবে।
সুতরাং মানুষকে আল্লাহ প্রদত্ত সম্পদ, চেহারা, সন্তানাদি, ঘর ও মেধা যা প্রাপ্ত হয়েছেন, তাতে অবশ্যই সন্তুষ্ট থাকতে হবে। কোরআনে কারিমে এর নির্দেশনা রয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘সুতরাং, আমি আপনাকে যা দান করেছি তা গ্রহণ করুন এবং কৃতজ্ঞ হোন। ’ -সূরা আল আরাফ: ১৪৪
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫০ ঘণ্টা, ০৭ অক্টোবর, ২০১৭
এমএইউ/