ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

সভা-সমিতি ও অনুষ্ঠানের শুরুতে কোরআন তেলাওয়াত প্রসঙ্গে

ইসলাম ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০১৭
সভা-সমিতি ও অনুষ্ঠানের শুরুতে কোরআন তেলাওয়াত প্রসঙ্গে সভা-সমিতি ও অনুষ্ঠানের শুরুতে কোরআন তেলাওয়াত প্রসঙ্গে

বিভিন্ন অনুষ্ঠান, সভা-সমিতি, মাহফিল সওয়াব ও বরকত লাভের উদ্দেশে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত দিয়ে শুরু করা হয়। কোরআন আল্লাহতায়ালার কালাম, কোরআন তেলাওয়াত অনেক বড় সওয়াবের কাজ। তাই মানুষ কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানাদি শুরু করেন।

ইসলাম মনে করে, বৈধ কোনো অনুষ্ঠান ও দ্বীনী মাহফিল কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে শুরু করা জায়েজ এবং বরকতপূর্ণ কাজ। এ কাজ সাহাবায়ে কেরামের আমল দ্বারা প্রমাণিত।

এক হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত আবু সাঈদ খুদরি (রা.) বলেন, ‘হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সাহাবারা যখন পরস্পর একত্রে বসতেন (এবং তারা ইসলামের বিধান ও দ্বীনী বিষয়াদি নিয়ে কথাবার্তা বলতেন) তখন তারা কথাবার্তা শুরুই করতেন না যতক্ষণ না তাদের মাঝে কেউ কোনো সূরা তেলাওয়াত করতেন, অথবা তাদের মাঝে কাউকে আদেশ করতেন কোরআনের কোনো সূরা পাঠ করার জন্য। ’ -মুসতাদরাকে হাকেম

বিখ্যাত ইসলামি দার্শনিক ও স্কলার খতিব বাগদাদি (রহ.) ‘আল জামে লিআখলাকির রাবি ওয়া আদাবিস সামে’ নামক গ্রন্থে হাদিস ইমলার মজলিসের আদব বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, হাদিস ইমলা শুরু করার আগে উচিত হলো- মজলিসের শুরুতে কোরআন তেলাওয়াত করা।  

কেননা, মুহাম্মাদ ইবনে আহমদ আমাদের নিকট বর্ণনা করেন, আবু নাজরা (রা.) বলেন, ‘হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সাহাবারা পরস্পর যখন একত্রিত হতেন তখন তারা ইলমের মুজাকারা (আলোচনা) করতেন এবং কোরআনের কোনো সূরা তেলাওয়াত করতেন। ’ -আল জামে লিআখলাকির রাবি ওয়া আদাবিস সামে

হাফেজ সামআনি (রহ.), ইবনে কাসির (রহ.), ইমাম নববী (রহ.) ও হাফেজ সাখাবি (রহ.) প্রমুখ মুহাদ্দিস থেকেও অনুরূপ বক্তব্য রয়েছে এবং তারা এর সপক্ষে উক্ত হাদিসগুলো উল্লেখ করেছেন।

আর সাহাবায়ে কেরামের আমলও ইসলামি শরিয়তের দলিল। সে হিসেবে ইসলামি স্কলাররা বলেছেন, কোনো বৈধ অনুষ্ঠান বা মাহফিলে কোরআন তেলাওয়াত করতে চাইলে তা অবশ্যই কোরআন মজিদের আদব রক্ষা করেই করতে হবে এবং নিম্নোক্ত বিষয়াদির প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে। বিষয়গুলো হলো-

ক. মাইক চলছে কি-না, কিংবা আওয়াজ কেমন এ জাতীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য কোরআন তেলাওয়াত করা যাবে না। এটা কোরআনে কারিমের আদব পরিপন্থী।

খ. অনেক সময় মাহফিল বা বৈঠক এলোমেলো থাকে, মাহফিলের লোকজন এদিক-সেদিক থাকে। এমতাবস্থায় মজলিস জমানোর উদ্দেশে কোরআন তেলাওয়াত করা হয়। এমনটা ঠিক নয়।

গ. শ্রোতারা বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকে এবং তারা কোরআন তেলাওয়াত মনোযোগ সহকারে শোনে না। তখন কোরআন তেলাওয়াত করা হয়। অনুষ্ঠানে এমন অবস্থায়ও কোরআন তেলাওয়াত করা ঠিক না।  

ঘ. যে অনুষ্ঠানে গান-বাদ্য হবে, এ জাতীয় অনুষ্ঠান কোরআন তেলাওয়াত দ্বারা শুরু করা ভীষণ অন্যায়। তদ্রূপ যে অনুষ্ঠানে পর্দা-পুশিদার ব্যবস্থা নেই কিংবা শরিয়ত গর্হিত বিভিন্ন জিনিস বা কর্মকাণ্ড বিদ্যমান- ওই সব অনুষ্ঠানেও কোরআন তেলাওয়াত করা ঠিক নয়। এতে কোরআনে কারিমের অসম্মান করা হয়। তাই এমন কাজ থেকে বিরত থাকা জরুরি।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪৭ ঘণ্টা, ১০ অক্টোবর, ২০১৭
এমএইউ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।