এমনকি সমগ্র প্রশান্ত মহাসাগরীয় এশিয়া অঞ্চলের এই মসজিদটি দিনে দিনে পর্যটকদের আকর্ষণস্থলেও পরিণত হয়েছে।
বলছি ব্রুনাইয়ের ২৮তম সুলতান ওমর আলী সাইফুদ্দিনের নামে নির্মিত মসজিদের কথা।
ব্রুনাইয়ের রাজধানী বন্দর সেরি বেগাওয়ানে অবস্থিত ওই মসজিদটির নাম সুলতান ওমর আলী সাইফুদ্দিন মসজিদ। আধুনিক ইসলামি স্থাপত্যের অপূর্ব এই নিদর্শনটির নির্মাণকাজ ১৯৫৮ সালে সমাপ্ত হয়।
মসজিদটির প্রধান গম্বুজের বাইরের অংশ সম্পূর্ণ খাঁটি সোনা দিয়ে তৈরি। ৫২ মিটার (১৭১ ফুট) উচ্চতায় নির্মিত মসজিদের প্রধান মিনারে উঠলে পুরো বন্দর সেরি বেগাওয়ান শহর দৃষ্টিগোচর হয়। উঁচু মিনারটিতে রয়েছে একটি আধুনিক এলিভেটর। যার মাধ্যমে স্থাপনার শীর্ষে উঠা যায় সহজেই।
প্রায় ৫ একর জমির ওপর নির্মিত মসজিদটির মূল ভবনে একসঙ্গে প্রায় ৩ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন।
মসজিদটি নির্মাণে অত্যন্ত দামী গ্রানাইড, মার্বেল ও ক্রিস্টাল ব্যবহার করা হয়েছে। মসজিদটির নকশা করেছিলেন একজন ইতালিয়ান স্থপতি।
ব্রুনাই নদীর তীরের কাছে একটি কৃত্রিম হ্রদে মসজিদটির অবস্থান। একে বৃত্তাকারে ঘিরে আছে কামপং আয়ার নামের একটি জলগ্রাম।
মসজিদটি যেন ইসলামিক স্থাপত্যের গৌরব আর ফুলের সৌরভে গড়া এক স্বপ্নিল জগৎ। এখানকার হ্রদে থাকা সর্পিলাকার একটি সেতু সত্যিই দেখার মতো। এটি হ্রদ পার হয়ে চলে গেছে জলগ্রামে। মসজিদ স্থাপনাকে সংযুক্ত করে এখানে রয়েছে অপর একটি মর্মর পাথরের সেতু, যা দেখতে সুদৃশ্য জাহাজের মতো। প্রতিদিন অনেক পর্যটক এ মসজিদ পরিদর্শনে আসেন।
বলা চলে, কম জনসংখ্যার ছোট্ট দেশ ব্রুনাইয়ের প্রতীক হয়ে আছে মসজিদটি।
ব্রুনাই স্বাধীনতা লাভ করে ১৯৮৪ সালে। তেল ও গ্যাস সম্পদসমৃদ্ধ এ ভূখণ্ড বর্তমান বিশ্বের অন্যতম ধনী রাষ্ট্র।
বাদশাহ শাসিত দেশটির প্রধান সুলতান হাসান আল বলকিয়া বিপুল ধনসম্পদের মালিক। দেশটির জনগণ প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে বিপুল পরিমাণ ভর্তুকি পান। ব্রুনাইয়ের জনগণকে কোনো কর দিতে হয় না।
২০০৪ সাল থেকে পার্লামেন্টারি ব্যবস্থা চালু হয়েছে দেশটিতে। ২০১৪ সালে ইসলামি শরিয়া আইন সরকারিভাবে গ্রহণ করেছে ব্রুনাই।
বাংলাদেশ সময়: ২১০২ ঘণ্টা, ২১ অক্টোবর, ২০১৭
এমএইউ/