এ বাস সার্ভিসের মাধ্যমে পর্যটকরা সেখানকার ঐতিহাসিক স্থানগুলো ঘুরে দেখতে পারবেন। এ সার্ভিস বিশ্বের ১৬০টি শহরে চালু রয়েছে।
হজযাত্রী ও পর্যটকদের শুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলো ঘুরিয়ে দেখাতে মদিনায় এ বছরই এ বাস সার্ভিস শুরু হয়েছে।
বাসযাত্রীদের টিকেটের মূল্য পড়বে ৮০ সৌদি রিয়াল। টিকেট কেনার পর ২৪ ঘন্টা পর্যন্ত তা ব্যবহার করা যাবে। বাসগুলো নির্ধারিত পথে চলাচল করবে।
মদিনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এ বাস সার্ভিস তদারক করবেন। এটা পরিচালনা করবে জাওলা। পরিদর্শন পথে ১১টি স্থানে বাস থামবে।
পর্যটকরা ৮টি ভাষায় ধারা বিবরণী শুনতে পাবেন। ভাষাগুলো হলো- আরবি, ইংরোজি, ফরাসি, তুর্কি, উর্দু, ফারসি, মালয়েশিয় ও ইন্দোনেশিয়।
বাসগুলো সব ডবল ডেকার। প্রতি ট্রিপে ৬৩ জন যাত্রী বহন করতে সক্ষম।
বাস অপারেটররা বলছেন, এক বছরে বাসগুলো ৬ লাখ ৭৫ হাজার পার্যটক বহন করতে পারবে। ধীরে ধীরে এ সংখ্যা ১৪ লাখ বাড়ানো হবে।
বাসগুলো যে ১১টি স্থানে থামবে তার মধ্যে রয়েছে মসজিদে নববী, জান্নাতুল বাকি কবরস্থান, আল মানাখা উন্মুক্ত এলাকা, আম সালাম তোরণ, উহুদ প্রান্তর, আল নূর শপিং মল, সুলতানা শপিং স্ট্রিট, মসজিদে কিবলাতাইন, খন্দক যুদ্ধের স্থানের কাছে অবস্থিত সাত মসজিদ, ঐতিহাসিক কুবা মসজিদ ও হেজাজ রেলওয়ে স্টেশন।
সিটি সাইট সিয়িং মদিনার অপারেশনস কন্ট্রোলার তাহা আল জোয়াইবার বলেন, পরিদর্শনের স্থান আরও বাড়বে। আমরা এখন এ প্রকল্প সম্পর্কে জনগণকে জানানোর কাজ করছি। সেই সঙ্গে মদিনাকে একটি পর্যটন এলাকা হিসেবে গড়ে তুলতে চেষ্টা করছি।
মসজিদে নববী: মসজিদে নববীর উত্তর দিকের ২১ নম্বর গেটের সামনে অবস্থিত প্রধান সিটি সাইটসিয়িং সেন্টার থেকে ভ্রমণ শুরু হবে।
আস সালাম গেট: এটা হচ্ছে প্রধান গেট যেখান থেকে পবিত্র মসজিদের সকল স্থানে, যেমন মহানবী হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর রওজা মোবারক জিয়ারতের জন্য যাওয়া যায়। স্থানটি মসজিদের পশ্চিমাংশে অবস্থিত।
আল মানাখা: এটি মসজিদে নববীর পশ্চিম দিকে অবস্থিত একটি খোলা জায়গা। যেখানে রাসূলুল্লাহ (সা.) একটি বাজার স্থাপন করেছিলেন। যেখানে সফর শেষে উট বিশ্রাম নেয়- ওই এলাকাকে মানাখা বলা হয়।
এখানে মসজিদে গামামা বা মেঘের মসজিদ অবস্থিত। এই মসজিদের স্থানে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) ঈদের নামাজ পড়তেন এবং বৃষ্টির জন্য ইস্তেস্কার নামাজ আদায় করতেন।
সম্প্রদি মসজিদে গামামার চারপাশে সংস্কার করা হয়েছে। সেখানে ঝরনা এবং পর্যটকদের বসা ও বিশ্রামের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ওই এলাকায় আবু বকর মসজিদ ও ওমর মসজিদও অবস্থিত।
বাকি কবরস্থান: মসজিদে নবীর দক্ষিণপুবে এর অবস্থান। এখানে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর বহু সাহাবি ও পরিবারের সদস্যদের কবর রয়েছে।
উহুদ পর্বত: এখানে উহুদের সেই বিখ্যাত যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিলো। পর্যটকরা ‘জাবালে রুমা’ নামের একটি ছোট টিলায় আরোহণ করতে পারেন। যেখানে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) মুসলিম বাহিনীর একটি তীরন্দাজ দলকে মোতায়েন করেছিলেন।
পাহাড়ের পাদদেশে রয়েছে বিশাল বাজার। বাজার থেকে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত ও উৎপন্ন বিভিন্ন সামগ্রী কিনতে পারেন। যেমন খেজুর, হেনা বা মেহেদি, বিভিন্ন গাছ-গাছড়া, তসবিহ ও জায়নামাজ।
মসজিদে কিবলাতাইন: এটা সেই বিখ্যাত মসজিদ, যেখানে নামাজের সময় কেবলা বায়তুল মোকাদ্দাসের পরিবর্তে মক্কার কাবার দিকে পরিবর্তনের নির্দেশ আসে।
কুবা মসজিদ: এটি সাদা মিনার ও বহু খেজুর গাছ সমন্বিত বিরাট মসজিদ। পর্যটকরা প্রায়ই এ মসজিদে নামাজ আদায় করেন। হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) প্রতি শনিবার এখানে নামাজ পড়তেন।
আল নূর মল: এটি একটি আধুনিক বিপণী কেন্দ্র। যেখানে বহু স্টোর, খাবার দোকান ও শিশুদের একটি বিনোদন কেন্দ্র রয়েছে।
সুলতানা স্ট্রিট: এটিও একটি আধুনিক শপিং এলাকা। এখানেও বহু খাবারের দোকান রয়েছে।
সাত মসজিদ: সাতটি ছোট মসজিদের কাছে নির্মিত একটি বড় মসজিদ। এটি সালা পর্বতের দক্ষিণে খন্দক যুদ্ধের স্থানে নির্মিত। একই এলাকায় আছে আল ফাতাহ মসজিদ, যেখানে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) নামাজ পড়েছিলেন ও মক্কা বিজয়ের প্রতিশ্রুতি প্রাপ্ত হন।
আল হেজাজ রেল স্টেশন: এটি ওসমানিয় আমলের রেলস্টেশন যা শহরের জাদুঘরে রূপান্তরিত করা হয়েছে।
-সৌদি গেজেট অবলম্বনে
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৫ ঘণ্টা, ২ নভেম্বর, ২০১৭
এমএইউ/