মহানবী (সা.) ৬১০ খ্রিস্টাব্দে মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে নবুওয়াত লাভ করেন। তখন দাওয়াতের গুরুদায়িত্ব পেয়ে তিনি আল্লাহর অস্বীকারকারীদের এক আল্লাহর দিকে আহ্বান করেছিলেন।
এরপর আল্লাহর নির্দেশে সাফা পাহাড়ে প্রকাশ্যে এক আল্লাহর ওপর ঈমান আনার ঘোষণা দিয়েছিলেন। তখন থেকে শুরু হয়েছিল মহানবীর ওপর প্রচণ্ড নির্যাতনের ধারা। পথে-প্রান্তরে তাকে নিদারুণভাবে আহত, অপমানিত ও লাঞ্ছিত করা হতো। এরপরও অত্যন্ত ধৈর্য ও পরম সাহসিকতার সঙ্গে মহানবী (সা.) তার মিশন এগিয়ে নিতে থাকেন। মক্কার কাফেররা একদিন সর্বশেষ নীতি নির্ধারণের উদ্দেশ্যে তাদের ‘নদওয়া’ গৃহে সব গোত্রপতির বৈঠক আহ্বান করে। সেখানে তারা সিদ্ধান্ত নেয়, নানা কৌশল করে আমরা মুহাম্মদকে আটকাতে চেয়েছি। কিন্তু সম্ভব হলো না। বরং তার কাজ বেড়েই চলছে। তাই মুহাম্মদকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেয়াই সবচেয়ে উচিত হবে।
সমবেত সবাই এ সিদ্ধান্তের ওপর সমর্থন ব্যক্ত করে। তারা জঘন্যতম কাজটা সম্পন্ন করতে প্রত্যেক গোত্রের শক্তিশালী যুবকদের নির্বাচন করে। এরপর ঘোষণা করে, মুহাম্মদকে যে জীবিত অথবা মৃত ‘নদওয়া’ গৃহে হাজির করতে পারবে, তাকে ১০০ উট পুরস্কার দেওয়া হবে। মক্কার সব গোত্রের শক্তিশালী যুবকরা একত্রিত হয়ে শপথ নেয়, সেদিন রাতেই মুহাম্মদ (সা.)-এর বাড়ি ঘেরাও করা হবে। সেদিনই তাকে চিরতরে শেষ করে দেওয়া হবে।
এদিকে আল্লাহ তায়ালা তার প্রিয় নবী (সা.)-কে নির্দেশ করলেন, হে নবী! মক্কার মানুষ আপনাকে চায় না। অন্যদিকে মদিনার মানুষ আপনার জন্য সীমাহীন আগ্রহে প্রতীক্ষা করছেন। আপনি হিজরত করে মদিনায় চলে যান।
মহানবী (সা.) আল্লাহ তায়ালার আদেশ পেয়ে ৬২২ খ্রিস্টাব্দের ১২ সেপ্টেম্বর মক্কা মুকাররামা থেকে মদিনার উদ্দেশে হিজরত করেন। ২৩ সেপ্টেম্বর ৬২২ খ্রিস্টাব্দে মোতাবেক ৮ রবিউল আওয়াল মদিনার পার্শ্ববর্তী কোবায় পৌঁছান তিনি। ২৭ সেপ্টেম্বর ৬২২ খ্রিস্টাব্দে মোতাবেক ১২ রবিউল আওয়াল মদিনা মুনাওয়ারায় পৌঁছান মহানবী (সা.)। প্রিয়নবী (সা.)-এর হিজরতেরই স্মৃতিবহন করে আসছে আরবি হিজরি সন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১০, ২০১৮
এমএমইউ/এমজেএফ