ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

ফিতনার সময় মুসলমানরা কী করবে

ইসলাম ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৫৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০১৮
ফিতনার সময় মুসলমানরা কী করবে ছবি : প্রতীকী

কেয়ামতের আগে বিভিন্ন ধরনের ফিতনা-ফাসাদ ও অবক্ষয় সমাজে ছড়িয়ে পড়বে। অসংখ্য রকমের নৈরাজ্য ও অমানবিকতা সয়লাব হবে। ব্যাপক হারে রক্তপাত ও খুনাখুনি হবে। রাসুল (সা.) এ সম্পর্কে সতর্ক ও ভবিষ্যদ্বাণী করে গেছেন।

কেয়ামতের অনেকগুলো নিদর্শনের অন্যতম একটি সম্মন্ধে রাসুল (সা.) বলেন, ‘ওই সত্তার কসম, যার কুদরতি হাতে আমার প্রাণ। তত দিন পৃথিবী ধ্বংস হবে না, যত দিন এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে না যে হত্যাকারীর জানা থাকবে না, কেন সে হত্যা করছে।

নিহত ব্যক্তিরও জানা থাকবে না, কেন তাকে হত্যা করা হলো। প্রশ্ন করা হলো, এটা কিভাবে সম্ভব? রাসুল (সা.) বলেন, ‘রক্তপাত ও খুনাখুনি ব্যাপক হওয়ার কারণে এমন হবে। ’ (মুসলিম, হাদিস নং : ৭২৬৪)

উসমান (রা.)-এর শাহাদাতের পর মুসলমানদের মধ্যে যে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়, তাতে সাহাবায়ে কেরাম কেউ কেউ নিজ ইজতেহাদ অনুসারে কোনো এক পক্ষে যোগ দিলেও অন্যরা কোনো পক্ষকেই সমর্থন করেননি। ওসামা (রা.) আলী (রা.)-কে বলেন, ‘আপনি যদি কোনো বাঘের উদ্ধত থাবার সম্মুখেও হতেন, আমি আপনার সঙ্গ দিতাম। কিন্তু গৃহযুদ্ধে অংশগ্রহণকে আমি বৈধ মনে করি না। ’ (বুখারি, হাদিস নং : ৭১১৩)

ফিতনা ও অন্তর্কলহ সম্পর্কে মহানবী (সা.) সতর্ক করে গেছেন। এক হাদিসে এসেছে, ‘সামনে এমন ফিতনা আসবে, যাতে উপবিষ্ট ব্যক্তি দণ্ডায়মান ব্যক্তি থেকে উত্তম হবে। দণ্ডায়মান ব্যক্তি চলমান ব্যক্তি থেকে উত্তম হবে। চলমান ব্যক্তি ওই ব্যক্তি থেকে উত্তম হবে, যে দৌড়াচ্ছে। ফিতনা যে কাউকেই গ্রাস করবে। তাই যে ব্যক্তি কোনো আশ্রয় পায়, সে যেন তা গ্রহণ করে—অর্থাৎ ফিতনা থেকে বেঁচে থাকার চেষ্টা করবে। ’ (বুখারি, হাদিস নং : ৩৬০১)

মুসলমানদের পারস্পরিক রক্তপাতের বিরুদ্ধে হাদিস শরিফে কঠিন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়েছে। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘কোনো মুসলমানকে গালি দেওয়া গুনাহর কাজ। আর তাকে হত্যা করা কুফরি। ’ (বুখারি, হাদিস নং : ৬০৪৪)

বর্তমান পরিস্থিতিতে দেখা যাচ্ছে, একদল মুসলিম অন্য দলের ওপর অস্ত্রাঘাত করছে। অথচ রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আমাদের (মুসলমানদের) ওপর অস্ত্র উঠাবে, সে আমাদের (ধর্মের) দলভুক্ত নয়। ’ (বুখারি, হাদিস নং : ৬৮৪৪)

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘ক্রমেই যুগ সংকুচিত হবে, আমল কমে যাবে, কৃপণতা ও লোভ বাড়বে, ফিতনা ব্যাপকভাবে প্রকাশ পেতে থাকবে এবং হারজ বেড়ে যাবে। সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞেস করলেন, হারজ কী জিনিস? নবী (সা.) ইরশাদ করেন, হত্যাকাণ্ড, হত্যাকাণ্ড। ’ (বুখারি, হাদিস নং : ৭০৬১)

ফিতনার সময় মুসলমানদের করণীয়
ফিতনার সময় মুসলমানদের করণীয় সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর নির্দেশনা হলো, যে ব্যক্তি কোনো আশ্রয়স্থল খুঁজে পায়, সে যেন তা গ্রহণ করে, অর্থাৎ ফিতনা থেকে বেঁচে থাকে। (বুখারি, হাদিস নং : ৩৬০১)

কাজেই যেকোনো সংকটের মুহূর্তে নিজেকে রক্ষা করাই গুরুত্বপূর্ণ। তাই কোনো রূপ বিরোধে না জড়ানোই উত্তম। তবে সত্য ও ন্যায়ের অনুসন্ধান অব্যাহত রাখাটা জরুরি। মহান আল্লাহ আমাদের সহায় হোন।

ইসলাম বিভাগে আপনিও লিখতে পারেন। লেখা পাঠাতে মেইল করুন: bn24.islam@gmail.com
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৯, ২০১৮
এমএমইউ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।