ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

অগ্নিকাণ্ড দেখলে যে দোয়া পড়তে হয়

ইসলাম ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৫ ঘণ্টা, মার্চ ২৮, ২০১৯
অগ্নিকাণ্ড দেখলে যে দোয়া পড়তে হয় ছবি : প্রতীকী

অগ্নিকাণ্ড বলে-কয়ে আসে না। সামান্য অসতর্কতায় সৃষ্ট আগুন নিয়ে যেতে পারে শত শত তাজা প্রাণ। অনেক সময় সতর্ক থাকার পরও অসাবধনতার কারণে আগুণ ছড়িয়ে পড়তে পারে। জ্বালিয়ে-পুড়ে ভস্ম করে দিতে পারে মানুষের জীবনযাত্রা। আবার কখনো মানুষ আল্লাহর অবাধ্যতায় মাত্রা অতিক্রম করলে বিভিন্ন ধরনের আজাব-দুর্ভোগ নেমে আসে। তাই পার্থিব ও অপার্থিব সতর্কতা দুইটিই সবসময় কাম্য।

আগুন নেভানোর বা নিয়ন্ত্রণে আনার যথাসাধ্য চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। পাশাপাশি আগুন যেন আল্লাহ তাআলা নিভিয়ে দেন, সে জন্যও আমল করা চাই।

অগ্নিকাণ্ডের স্থানের আশপাশে যারা থাকেন তারা আগুন নেভানোর যাবতীয় চেষ্টা অব্যাহত রাখার সঙ্গে সঙ্গে এই আমলগুলোও করলে, আশা করা যায় আল্লাহ তাআলা আগুন দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনার ব্যবস্থা করে দেবেন।

আবদুল্লাহ ইবনে উমর ইবনুল আস (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমরা যখন কোথাও আগুন দেখো, তখন তোমরা তাকবির দাও। কেননা, তাকবির আগুন নিভিয়ে দেবে। (তাবরানি, হাদিস নং: ১/৩০৭)

তাকবির হলো: আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার।
অর্থ : আল্লাহ মহান। আল্লাহ মহান।

এছাড়াও কোরআনে বর্ণিত একটি আয়াত রয়েছে। যেটি পড়লে আগুন নেভাতে প্রভাব পড়ে, আগুনের ক্রিয়া নিস্তেজ হয়ে আসে। আল্লাহর নবী ইবরাহিম (আ.)-কে আগুন যেন স্পর্শ না করে, সে নির্দেশ দিয়েছিলেন মহান আল্লাহ তাআলা। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ হয়েছে, ‘يَا نَارُ كُونِي بَرْدًا وَسَلَامًا عَلَىٰ إِبْرَاهِيمَ’ উচ্চারণ: ইয়া না-রু কু-নি বারদান ওয়া সালামান আলা ইবরাহিম। অর্থ : ‘হে আগুন! তুমি ইবরাহিমের জন্য শীতল ও নিরাপদ হয়ে যাও। ’ (সুরা আম্বিয়া, আয়াত: ৬৯)

ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রহ.) বলেন, ‘এ জন্য নামাজ, আজান ও ঈদের নিদর্শন হলো তাকবির। উঁচু স্থানগুলোতে অথবা কোনো যানবাহনে আরোহন করলে তাকবির পাঠ করা মুস্তাহাব। আগুন যত প্রলয়ঙ্করী হোক; তাকবিরের মাধ্যমে তা নিভে যায়। আর আজানের মাধ্যমে শয়তান পলায়ন করে। (আল-ফাতাওয়া আল-কুবরা: ৫/১৮৮)

প্রখ্যাত মুসলিম মনীষী আল্লামা ইবনুল কাইয়িম (রহ.) বলেন, ‘যেহেতু অগ্নিকাণ্ড আগুনের মাধ্যমে হয়ে থাকে, আর আগুন শয়তানের একটি উপাদান। আর একটা সাধারণ দুর্ভোগ হলো শয়তানের উপাদান ও কর্মের সঙ্গে খাপ খাওয়া। যদি কোনো কিছু শয়তানের কর্ম-উপাদানের সঙ্গে খাপ খায়, তাহলে শয়তানের সহযোগিতা হয় এবং তার কর্মের বাস্তবায়ন হয়।

আগুন সাধারণত উর্ধমুখী হয়ে ধ্বংসযজ্ঞ সৃষ্টি করে। আর এই দুইটি জিনিস (উর্ধমুখী হওয়া ও ধ্বংসযজ্ঞ তৈরি করা) এগুলো শয়তানের পথ। শয়তান এই দুইটির দিকে আহ্বান করে থাকে। এই দুইটির মাধ্যমে বনি আদমকে ধ্বংস করে। অতএব, শয়তান ও আগুন—দুইটিই উর্ধমুখিতা ও ধ্বংসযজ্ঞ সৃষ্টি করতে চায়।

আল্লাহ তাআলার বড়ত্ব শয়তান ও তার কর্মকে অবদমিত করে দেয়। এজন্য আগুন নেভাতে তাকবির-ধ্বনি বা আল্লাহর মহৎ ও বড়ত্বের বাক্য খুব প্রভাব ফেলে। কেননা, কোনো কিছুই আল্লাহর বড়ত্বের সমপর্যায়ের হতে পারে না। অতএব যখন মুসলিম তাকবির-ধ্বনি পাঠ করে; তখন তার এই ধ্বনি আগুন নেভাতে ও শয়তানকে কর্মচ্যূত করতে দারুণ প্রভাব ফেলে। ফলে আগুন সহজে নিভে যায়। আমরা ও আমাদের সঙ্গীরা এই পরীক্ষা (তাকবির পাঠ করে আগুন নেভানো) করে সফল হয়েছি। (জাদুল মাআদ: ৪/১৯৪)

ইসলাম বিভাগে আপনিও লিখতে পারেন। লেখা পাঠাতে মেইল করুন: bn24.islam@gmail.com

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৪ ঘণ্টা, মার্চ ২৮, ২০১৯
এমএমইউ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।