ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

জিজ্ঞাসা-মাসআলা

কোরবানির পশুতে আকিকার অংশ দেওয়া যায়?

ইসলাম ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩২৮ ঘণ্টা, আগস্ট ৪, ২০১৯
কোরবানির পশুতে আকিকার অংশ দেওয়া যায়? ছবি: বাংলানিউজ

প্রশ্ন: আমার ছেলের জন্ম হয়েছে তিন মাস আগে। এখন আমি যদি কোরবানির পশুতে ওর আকিকার অংশ দেই, সেটা জায়েজ হবে?

উত্তর: হ্যাঁ, আপনি আপনার সন্তানের আকিকা কোরবানির পশুর অংশে দিতে পারবেন। কোরবানির গরু, মহিষ ও উটে আকিকার নিয়তে শরিক হওয়া যায়।

এতে কোরবানি ও আকিকা দুটোই হবে। ছেলের জন্য দুই অংশ আর মেয়ের জন্য এক অংশ দিতে হবে।

শৈশবে আকিকা করা না হলে বড় হওয়ার পরও আকিকা করা যাবে। যার আকিকা সে নিজে ও তার মা-বাবাও আকিকার গোশত খেতে পারবে। (ইলাউস সুনান: ১৭/১২৬)

প্রসঙ্গত সন্তান জন্মের পর আল্লাহ তাআলার শুকরিয়া আদায়ের উদ্দেশে জন্মের সপ্তম দিনে পশু জবাই করাকে আকিকা বলে। আকিকা করা মুস্তাহাব। হাদিস শরিফে আকিকার প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে। রাসুল (সা.)-কে আকিকা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, যে ব্যক্তি সন্তানের আকিকা করার ইচ্ছা করে, সে যেন তা পালন করে। ছেলের জন্য সমমানের দুইটি ছাগল। আর মেয়ের জন্য একটি। (মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক, হাদিস: ৭৯৬১)

অন্য হাদিসে আছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, সন্তানের সঙ্গে আকিকার বিধান রয়েছে। তোমরা তার পক্ষ থেকে রক্ত প্রবাহিত কর (অর্থাৎ পশু যবাই কর) এবং সন্তানের শরীর থেকে কষ্টদায়ক বস্তু (চুল) দূর করে দাও। (বুখারী, হাদিস: ৫৪৭২)

সন্তান জন্মের সপ্তম দিন আকিকা করা উত্তম। তিরমিজির এক হাদিসে সপ্তম দিনে আকিকা করার কথা বলা হয়েছে। (হাদিস: ১৫২২)

রাসুলুল্লাহ (সা.) তার দৌহিত্রদ্বয় হাসান ও হুসাইন রা.-এর আকিকা সপ্তম দিনে করেছেন। (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ২৮৩৪)

তাই সম্ভব হলে সপ্তম দিনেই আকিকা করা উত্তম। সপ্তম দিনে সম্ভব না হলে ১৪ তম দিনে বা একুশতম দিনে করা ভালো। উম্মুল মুমিনীন আয়েশা (রা.) বলেন, আকিকা সপ্তম দিনে হওয়া উচিত। তা সম্ভব না হলে চৌদ্দতম দিনে। এবং তাও সম্ভব না হলে একুশতম দিনে। (মুসতাদরাকে হাকেম, হাদিস: ৭৬৬৯)

অবশ্য একুশ দিনের মধ্যে করা না হলে পরবর্তীতেও তা আদায় করা যাবে।

সন্তানের আকিকা করার দায়িত্ব তার পিতার। অবশ্য অন্য কেউ বা নিজেও নিজের আকিকা করা জায়েজ আছে।

আকিকার গোশত সন্তানের পিতামাতা, আত্মীয়স্বজন সবাই খেতে পারবে। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেন, আকিকার গোশত নিজে খাবে, অন্যকে খাওয়াবে এবং কিছু সদকা করবে। (মুসতাদরাকে হাকেম, হাদিস: ৭৬৬৯)

সুফিয়ান ইবনে উয়াইনা (রহ.) বলেন, আমি আতা (রহ.)-কে বলতে শুনেছি, ...আকিকার গোশত তার পরিবার খেতে পারবে এবং হাদিয়াও দিতে পারবে...। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, তা কি সদকা করে দিতে হবে? তিনি বললেন, না, তুমি চাইলে খেতে পারো এবং হাদিয়াও দিতে পারো...। ’ (মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক, হাদিস: ৭৯৬৯; ফাতহুল বারি: ৯/৫০৭; ফাতাওয়া বাজ্জাযিয়া: ৩/৩৭০; রদ্দুল মুহতার: ৬/৩২৬; আলমাওসুআতুল ফিকহিয়্যাহ, কুয়েত: ৩০/২৭৬; তুহফাতুল মাওদুদ বিআহকামিল মাওলুদ: ৭৮)

প্রশ্নটি করেছেন: আতাউর রহমান, ঢাকা।

ইসলাম বিভাগে আপনিও লিখতে পারেন। লেখা পাঠাতে মেইল করুন: bn24.islam@gmail.com

বাংলাদেশ সময়: ১৯২৮ ঘণ্টা, আগস্ট ০৪, ২০১৯
এমএমইউ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।